কলকাতা, 12 জুলাই: নিয়মের জালে ক্রমেই ঘোরালো হয়ে উঠছে আনোয়ার আলির দলবদল বিতর্ক ৷ ফেডারেশন জানাচ্ছে জানুয়ারি থেকে ফিফার নিয়ম প্রয়োগ হবে ৷ অন্যদিকে, দিল্লি এফসি বলছে 2022 সালে ফিফার নিয়ম চালু করার কথা বলা হয়েছে ৷ সেক্ষেত্রে কেন এতদিন চুপ করেছিল ফেডারেশন ? কেন এখন প্রয়োগ করতে চাইছে ? এদিকে মুম্বই থেকে লোনে এসে অময় রানওয়াডে তিন বছর ধরে খেলছে ওড়িশা এফসিতে ৷ ফলে আনোয়ারকে ঘিরে মারাত্মক জট ৷
আসলে ফিফা নিয়ম প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে নথিভুক্ত সব দেশকে একটা সুযোগ দিয়েছিল ৷ বলেছিল তারা তাদের সুবিধামত এই নিয়ম চালু করতে পারে ৷ তবে, 2027 সালের আগে নিয়ম অবশ্যই বলবৎ করতে হবে ৷ সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন এক্ষেত্রে 2025 সালের জানুয়ারি মাস থেকে ফিফার এই নিয়ম বলবৎ করতে চলেছে বলে খবর ৷ এখানেই নিয়মের ফাঁক, যা কাজে লাগিয়েছে দিল্লি এফসি ৷ আর তার ফায়দা তুলেছে ইস্টবেঙ্গল ৷ সেই ফায়দা কাজে আসবে কি না, তা বলবে সময় ৷
এখন মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট কলকাতা লিগের জন্য আনোয়ারকে নথিভুক্ত করেছে ৷ 19 জুলাই প্র্যাকটিসে যোগ দিতে বলা হয়েছে তাঁকে ৷ এদিকে শোনা যাচ্ছে দিল্লি এফসি আনোয়ারের বিষয়টি নিয়ে ফেডারেশনের প্লেয়ার্স স্ট্যাটাস কমিটির দ্বারস্থ হয়েছে ৷ মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট এখনও সেই দাবি প্লেয়ার্স স্ট্যাটাস কমিটির কাছে করেনি ৷ তারা আনোয়ারকে নিজেদের ফুটবলার ধরে প্র্যাকটিসে যোগ দিতে বলেছে ৷ আনোয়ার যদি প্র্যাকটিসে যোগ না-দেন, তাহলে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট প্লেয়ার্স স্ট্যাটাস কমিটির দ্বারস্থ হবে ৷ আইনি পথেও যেতে পারে ৷
কেন আনোয়ার মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট ছাড়তে চাইছেন ? সূত্র বলছে, অন্যতম সেরা ভারতীয় ডিফেন্ডার নতুন মরশুমে বেশি মাত্রায় প্লেয়িং টাইম দাবি করেছেন ৷ পাশাপাশি টাকার অঙ্ক বাড়ানোর কথাও না কি বলেছেন ৷ আনোয়ারের মনে হয়েছে, কোচ মোলিনার আমলে তাঁকে ডাগ-আউটে বেশি থাকতে হবে ৷ নতুন দুই বিদেশির যোগদানে তাঁর এই ধারণা তৈরি হয়েছে ৷ এবার টাকা বাড়ানোর বিষয়টি পড়ে রইল ৷
মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট ম্যানেজমেন্ট সূত্র বলছে, আনোয়ারের টাকা বাড়ালে বাকি ভারতীয় ফুটবলারদের টাকা বাড়াতে হবে ৷ সেক্ষেত্রে দলের মধ্যে বৈষম্য তৈরি হবে ৷ তাছাড়া, গত মরশুমে আনোয়ার নিশটি ম্যাচ খেলেছে ৷ তাঁর চোট পর্বে ক্লাব পাশে ছিল ৷ এখন আনোয়ারের এই অবস্থান নেওয়া দুর্ভাগ্যজনক ৷ তবে আবেগ নয়, পরিস্থিতি বিচার করে সুপার জায়ান্ট ম্যানেজমেন্ট পেশাদারী মনোভাবে বিষয়টি সামলাতে চাইছে ৷ আনোয়ার যদি প্র্যাকটিসে যোগ না দেন, তাহলে প্লেয়ার্স স্ট্যাটাস কমিটি এবং আইনি পথ তারা খোলা রাখতে চাইছে ৷
দিল্লি এফসি'র কর্ণধার রঞ্জিত বাজাজ চুপ করে রয়েছেন ৷ তিনি বলছেন, যা বলার ইস্টবেঙ্গল বলবে ৷ লাল-হলুদের শীর্ষকর্তা পুরো রিক্রুটমেন্টের নেপথ্যে ৷ নিয়মের জটিলতা কাটিয়ে তারাও আনোয়ারের নাম ঘোষণা করবে ৷ টালবাহানা হতে পারে জানে ইস্টবেঙ্গল ৷ সেক্ষেত্রে আনোয়ার যদি দলবদলের দ্বিতীয় উইন্ডোতে লাল-হলুদ জার্সি পড়েন, আশ্চর্য হওয়ার নেই ৷ এখন দেখার অনিচ্ছুক ঘোড়াকে নিয়ে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট কী করে ? উপসংহার দাঁড়ালো, আনোয়ার বনাম মোহনবাগান ৷ ফল কী হয়, তার জন্য অপেক্ষা ছাড়া উপায় নেই ৷