কলকাতা, 10 মার্চ: বিপর্যয়ের পূর্বাভাস ছিল । তা নিদারুণ বাস্তব হয়ে আছড়ে পড়ল রবিবাসরীয় সন্ধ্যায় ৷ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে প্রথমার্ধেই মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের বিরুদ্ধে তিন গোলে পিছিয়ে পড়েছিল ইস্টবেঙ্গল । এই ছবি বহুদিন ডার্বিতে দেখা যায়নি । অথচ এইরকম যে হতে পারে তা ভাবতে পারার অবকাশ ছিল না ।
দুই কোচের সাবধানী স্ট্র্যাটেজিতেও 12 মিনিটে পেনাল্টি পায় ইস্টবেঙ্গল । বিশাল কাইথ আগুয়ান ক্লেইটন সিলভাকে ফাউল করতেই পেনাল্টি দেন রেফারি । দলের এক নম্বর স্ট্রাইকার স্টেডিয়ামকে বিস্মিত করে গোল করতে ব্যর্থ হলেন । বিশাল কাইথ বাঁ-দিকে শরীর ছুঁড়ে বাচানোর মধ্যেই ছিল সবুজ-মেরুনের প্রত্যাবর্তনের বার্তা । 27 মিনিটে পেত্রাতোসের গড়ানো শট প্রোভসুখন গিল থাবড়ে সামনে ফেলতেই পিছন থেকে ছুটে তা ফাঁকা গোলে ঠেলে দিয়ে যান জেসন কামিংস । অস্ট্রেলিয়ান বিশ্বকাপার সেভাবে ছন্দে । কিন্তু গোল করার অভ্যাস দেরিতে হলেও ফিরে পেয়েছেন । আটটা গোল করে ফেলেছেন চলতি টুর্নামেন্টে ।
প্রতিপক্ষের ধাক্কায় ইস্টবেঙ্গল যেন দাঁড়িয়ে যায় । 37 মিনিটে পেত্রাতোসের পাস থেকে গোল লিস্টন কোলাসোর গোল । আট মিনিট পরে ফের গোল। এবার লিস্টন কোলাসোকে বক্সে ঢোকার মুখে ফাউল করেন নন্দকুমার । পেনাল্টি পায় মোহনবাগান । গোল করতে ভুল করেননি পেত্রাতোস । বিরতির আগে তিন গোলে এগিয়ে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট । বড় বিপর্যয়ের আশঙ্কায় লাল-হলুদ জনতা মাঠ ছাড়তে থাকেন । অধরা স্বপ্নের আশায় তখন সবুজ-মেরুন সমর্থকরা মোবাইলে আলো জ্বালিয়ে উৎসব শুরু করেছেন ।
সমর্থকরা আশায় বুক বেঁধেছিলেন, দ্বিতীয়ার্ধেও একই রকম ছন্দে খেলে ইতিহাস গড়বে দল ৷ দ্বিতীয়ার্ধে সেই ছন্দটাই খুঁজে পেল না গঙ্গাপাড়ের ক্লাব ৷ গতি বদলে হঠাৎই ডিফেন্সিভ মোডে চলে গেল ‘হাবাস অ্যান্ড কোং’ ৷ বিরতিতে চুঙনুঙ্গার বদলে পিভি বিষ্ণু এবং অজয় ছেত্রীর বদলে সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায় নামতেই কুঁকড়ে থাকা ইস্টবেঙ্গল ঘুরে দাঁড়ায় । 53 মিনিটে ক্লেইটনের সেন্টার বুক দিয়ে নামিয়ে ব্যবধান কমান সাউল ক্রেসপো । এরপর শুধুই ইস্টবেঙ্গল । পাসিং ফুটবলের ফুলঝুড়িতে গোটা দ্বিতীয়ার্ধেই ইস্টবেঙ্গল নিয়ন্ত্রক । ক্রেসপো-সায়ন-বিষ্ণু-নাওরেম-শৌভিক অনায়াসে পাস খেলে মাঠের নিয়ন্ত্রণ নেন । প্রথমার্ধে যে মোহনবাগানকে মনে হচ্ছিল ড্রাইভারিং সিটে, তারাই দ্বিতীয়ার্ধে ব্যাকফুটে । 63 মিনিটে নন্দকুমারের সেন্টার থেকে ক্লেইটনের হেড অবিশ্বাস্য ক্ষিপ্রতায় বাঁচান বিশাল কাইথ । যদিও ম্যাচের একদম শেষ মুহূর্তে অভিষেক সূর্যবংশী পিভি বিষ্ণুকে বক্সের মধ্যে ফাউল করলেও নিশ্চিত পেনাল্টি দেননি রেফারি ৷
ডার্বিতে অপরাজিত থাকার রেকর্ড অক্ষুণ্ণ রাখলেন আন্তোনিও লোপেজ হাবাস । 36 পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট। ইস্টবেঙ্গল চির প্রতিপক্ষ অর্ধেক পয়েন্ট (18) নিয়ে 10 নম্বরে । দু’দলের কোচই হলুদ কার্ড দেখলেন । ফের দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে পরের ম্যাচে নেই কুয়াদ্রাত ।
আরও পড়ুন: