কলকাতা, 23 মার্চ: লোকসভা নির্বাচন ঘিরে আবহ যতই উত্তপ্ত হোক না কেন, আইপিএলের ঢাকে কাঠি পড়তেই পরিবেশটা খানিক বদলে গিয়েছে। অনলাইনে সিংহভাগ টিকিট বিক্রি হচ্ছে । তবুও ইডেনের মূল প্রবেশদ্বারের সামনে টিকিটের জন্য উঁকিঝুঁকি । শনিবার কলকাতা নাইট রাইডার্সের প্রথম ম্যাচ । ঘরের মাঠে প্রতিপক্ষ হায়দরাবাদ সানরাইজার্স । প্রথম ম্যাচে নামার আগে নাইট শিবির বলছে তৈরি । কিন্তু অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ারের সাংবাদিক সম্মেলনে ‘অস্বস্তি’ বেরিয়ে এল ।
নাইট অধিনায়কের চোট জল্পনা এখনও হালকা হলেও অব্যাহত । এই বিষয়ে প্রশ্ন উঠতেই শ্রেয়স আইয়ার বলেন, “একটা বছর পর ফিরে আমিও খেলতে মুখিয়ে আছি। ব্যক্তিগতভাবে আমার প্রস্তুতিও ভালো হয়েছে । আগেও গৌতি ভাইয়ের সঙ্গে কাজ করেছি । ক্যাপ্টেন এবং প্লেয়ার হিসাবে উনি ক্রিকেটারদের অনেক স্বাধীনতা দেন। নিজের ফিটনেস নিয়ে বলতে পারি যথেষ্ট ভালো জায়গায় রয়েছি । চিকিৎসক কী বলেছেন, তা নিয়ে চিন্তা করছি না। আসন্ন টি-20 বিশ্বকাপের দল নির্বাচনে আইপিএলের পারফরম্যান্স বিবেচনা হবে জানি। তবে এখন শুধু একটা করে ম্যাচ নিয়ে ভাবছি। হায়দরাবাদ ম্যাচ নিয়েই ভাবতে চাই।”
অধিনায়ক হিসেবে নাইট জার্সিতে ইডেনে প্রথমবার নামবেন তিনি। চোট সারিয়ে নিজের প্রত্যাবর্তনের পাশাপাশি দলকেও প্রত্যাশিত ছন্দে ফেরাতে পারেন কি না, সেটাই দেখার । তবে এ বছরের কলকাতা নাইট রাইডার্সের দলের শক্তি-দুর্বলতা নিয়ে প্রচুর শব্দ খরচ হচ্ছে । বিশেষ করে নাইটদের পেস বিভাগ নিয়ে জল্পনা চলছে । যদিও শ্রেয়স দলের পেসারদের ওপর আস্থা রাখছেন । মিচেল স্টার্ক যদি নাইট পেস বিভাগের মহাতারকা হন, তাহলে তুলনায় বৈভব আরোরা, হর্ষিত রানা নিতান্তই এলেবেলে । নাইট অধিনায়ক অবশ্য বলছেন, “এমন নয় যে আমাদের পেস বিভাগে অভিজ্ঞতা নেই । 2-3 মরশুম খেলে ফেলার অর্থ 28-30টা ম্যাচের অভিজ্ঞতা হয়েই যায় । প্র্যাক্টিস ম্যাচেও বৈভব, হর্ষিতরা ভালো ফল করেছেন ।”
মিচেল স্টার্ক এবছরের আইপিএলে সবচেয়ে দামি ক্রিকেটার । প্রস্তুতিতে যেভাবে পারফরম্যান্স করেছেন তাতে গৌতম গম্ভীরের মুখে হাসি ফুটতে বাধ্য । কয়েক মাস আগে ইডেনে বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে বল করে গিয়েছেন । সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বল নিয়ে দৌড় শুরু করার সময় স্টার্কের মনে কামিন্সকে টেক্কা দেওয়ার ভাবনা হয়তো কাজ করবে । কারণ, কামিন্স অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অধিনায়ক । দেশের হয়ে কামিন্স এবং স্টার্ক দু’জনেই একই সাজঘরে কাটান । কিন্তু আইপিএলের মঞ্চে দু’জনেই যুযুধান । সেকথা মাথায় রেখেই আইয়ার বলছেন, “স্টার্কের আসাটা আমাদের দলে অ্যাডভান্টেজ । সব জায়গায় বল করতে পারে । বিশ্বকাপ জয়ের ফলে আত্মবিশ্বাস আছে ।” একই সঙ্গে যোগ করেছেন, “আমরা একটা দল হিসাবে খেলছি, সেটাই আমাদের শক্তি । সেটা আমাদের এক্স-ফ্যাক্টরও । মরশুমের শুরুতেই কাউকে বিশেষ চাপ দেব না ।”
আইপিএলের প্রথম ম্যাচে নাইট শিবিরে ব্যাটিং লাইন-আপ কী হতে চলেছে তা নিয়েও চর্চা রয়েছে । বিশেষ করে ওপেন কারা করবেন সেটাও বড় প্রশ্ন । কারণ ফিল সল্ট এবং গুরবাজের মধ্যে যেকোনও একজনকে বাছবে নাইট থিঙ্ক ট্যাঙ্ক । শ্রেয়স অবশ্য বলছেন, টিম মিটিংয়ের পরে ওপেনার দু’জন কারা হবেন সেই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে । তবে দু’জনেই খুব ভালো ক্রিকেটার । দু’জনেই একাধিক টি-20 লিগ খেলে ।
দশ বছর আগে কেকেআর শেষবার আইপিএল জিতেছিল । সেই দলের অধিনায়ক এ বছর মেন্টর । তাঁর উপস্থিতি যে সাজঘরের আবহে পরিবর্তন নিয়ে এসেছে, তা জানিয়েছেন নাইট অধিনায়কও । শ্রেয়স বলছেন, “গৌতম গম্ভীর কলকাতাকে দু’টো আইপিএল ট্রফি দিয়েছে । অনেক অভিজ্ঞতা । চন্দ্রকান্ত পণ্ডিত এবং গৌতি একসঙ্গে খুব ভালো কাজ করছে ।” গত বছর আইপিএলে সাত নম্বরে শেষ করেছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স । এবছর দল গঠন থেকে মেন্টর নির্বাচন, সব ক্ষেত্রেই নাইটরা গা ঝাড়া দিয়ে উঠতে চাইছে । প্রত্যাবর্তনের লড়াইটা শুরু করতে স্টার্টিং ব্লকে কেকেআর ।
আরও পড়ুন: