ফতোরদা, 6 মার্চ: প্রায় শেষ হয়ে আসছে শেষ ছ’য়ে ওঠার সম্ভবনা ৷ তাতেও ইস্টবেঙ্গল আছে ইস্টবেঙ্গলেই ৷ আলেকজান্ডার পন্টিচ, প্রোভসুখন গিলের ব্যর্থতায় গোল করে গেলেন নোয়া সাদায়ৌ ৷ তারপর আর ম্যাচেই ফিরতেই পারল না লাল-হলুদ ৷ গোয়ার কাছে হেরে ডার্বি খেলতে ‘ঘরে’ ফিরছে কার্লেস কুয়াদ্রাতের ছেলেরা ৷
এই হারের ফলে 18 পয়েন্টেই আটকে রইল লাল-হলুদ । এফসি গোয়া এই জয়ের সৌজন্যে প্রথম ছ’য়ে আরও জাকিয়ে বসল । 42 মিনিটে জয়সূচক গোল নোয়া সাদায়ৌয়ের । গোয়ার গোলসংখ্যা বাড়ত যদি না মার্কুয়েজ, নোয়া, উদান্ত, ব্র্যান্ডনরা সহজ সুযোগ নষ্ট না করতেন । হতশ্রী ফুটবলে আত্মসমর্পণ । ঘরে-বাইরে দু’ক্ষেত্রেই ইস্টবেঙ্গল পরাজিত এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে । যা ডার্বির আগে দুঃস্বপ্নের মধ্যে রাখবে লাল-হলুদকে ।
সুপার কাপ জয়, ডার্বিতে চোখে চোখ রেখে জয় ছিনিয়ে নেওয়ার আপাত সাফল্য কি ইস্টবেঙ্গলের আত্মতুষ্টি হয়ে নেমে এসেছে ? লাল-হলুদ সমর্থকদের মধ্যে এই প্রশ্নটাই এখন ঘুরছে । না-হলে যাদের খেলায় কয়েক সপ্তাহ আগেও একটা আগ্রাসী ছবি পাওয়া যাচ্ছিল, তা এখন ভোজবাজির মত উধাও । কোনও ম্যাচ দেখে মনে হচ্ছে না ইস্টবেঙ্গল দাপুটে ফুটবল উপহার দিতে পারে । আইএসএলের দ্বিতীয় পর্বের প্রথম ম্যাচ থেকেই এই রোগে কার্লেস কুয়াদ্রাতের ছেলেরা আক্রান্ত । যা নিয়ে প্রশ্ন করলে কুয়াদ্রাত স্বয়ং বলছেন, বেশ কিছু সমস্যার মধ্যে দিয়ে মরশুমের প্রথম থেকে যেতে হচ্ছে । যার এখনও সমাধান হয়নি । বুধসন্ধ্যার ম্যাচেও সেই বেহাল দশার ছবি । লাল-হলুদ অর্ধে এখন প্রতিপক্ষ অনায়াসে পাস খেলতে পারে । ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষ তাদের ফেলে আসা ফর্ম খুঁজে পায় । এফসি গোয়া মঙ্গলবারের আগে চারটে ম্যাচে সমস্যায় ছিল । কিন্তু ইস্টবেঙ্গল তাদের অক্সিজেন দিল । খাতায়-কলমে প্রথম ছ’য়ে প্রবেশের সুযোগ রয়েছে জেনেও লাল-হলুদ ফুটবলাররা ম্রিয়মাণ ।
ম্যাচের কিছু সময় বাদ দিলে ইস্টবেঙ্গল যে মাঠে রয়েছে তা জার্সি নম্বর ছাড়া বোঝা যায়নি । মাঝমাঠে খেলা তৈরি হয়নি । প্রতিপক্ষের আক্রমণ থামানোর চেষ্টা নেই, দিগভ্রষ্ট একাদশ । 42 মিনিটে ডানপায়ের জোরালো শটে এফসি গোয়াকে এগিয়ে দেন সাদায়ৌ । তার আগে 12 মিনিটে অবিশ্বাস্যভাবে দিনের সহজতম সুযোগ নষ্ট করেন । তবে তাঁর এই ব্যর্থতার কারণ প্রোভসুখন গিলের অবিশ্বাস্য গোলরক্ষা । পরের মিনিটে বোরহার শট কার্যত গোললাইনের ওপর দিয়ে বাইরে চলে যায় ।
এই তিনটি সুযোগের ক্ষেত্রেই দায়ী পন্টিচ । তিনবারই বল আটকাতে পারলেন না, বরং প্রতিপক্ষের জন্য গোলের মুখ খুলে দিলেন । প্রতিপক্ষের এই অসহায়তার সুযোগে পুরো সময় জুড়েই বোরহা, জয় গুপ্তা, বরিস সিং, রওলিন বর্জেসরা তাণ্ডব চালালেন । কার্লোস মার্টিনেজ এবং নোয়াও একাধিবার গোল করার মত পরিস্থিতি তৈরি করে ফেলেছিলেন । পরিবর্ত হিসেবে মাঠে নামা উদান্ত সিংয়ের হেড পোস্টে লেগে প্রতিহত হয় । কিন্তু কখনও লক্ষভ্রষ্টতা, কখনও হিজাজি মাহের বা প্রোভসুখন গিল গোল আটকালেন ।
চোট-আঘাত-ক্লান্তি, কার্ড সমস্যা নিঃসন্দেহে কুয়াদ্রাতের দলের সমস্যা । তার থেকেও বড় সমস্যা নবাগত তিন বিদেশি ভাসকুয়েজ, পন্টিচ এবং ফেলিসিও ব্রাউনের ফর্ম । ভাসকুয়েজ বার্সেলোনার মন্ত্রে ফুটবল স্নাতক । কিন্তু বয়স কাউকে রেয়াত করে না । হিজাজির পাশে পন্টিচ যেন সময়ের সঙ্গে আরও বর্ণহীন । ফেলিসিও ব্রাউনের ‘ফুটবল ট্রেলার’ দেখলে মুগ্ধ হবেন । কিন্তু পুরো নব্বই মিনিট দেখলে হতাশ হতে বাধ্য । ফলে শেষ আধঘণ্টা মাঠে থাকলেও তিনি প্রভাবহীন । ফলস্বরূপ মাণ্ডভীর তীরে নিভল মশাল । একই সঙ্গে প্রথম ছয়ে ঢুকে পড়ার আশাও ।
আরও পড়ুন: