কলকাতা, 30 নভেম্বর: গতবছরের তুলনায় শক্তিশালী দল গড়া হয়েছে । কোনও কারণে তা প্রত্যাশিত ফুটবল খেলতে ব্যর্থ । শেষ পর্যন্ত দলের খেলায় পরিবর্তনের দেখা মিলতেই খুশির কথা জানালেন ইস্টবেঙ্গলের শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার । তাঁর কথায়, ইস্টবেঙ্গল লড়াই করে । সেই লড়াকু ফুটবল নর্থইস্ট ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে দেখা গিয়েছে । আশা করা যায় সামনের ম্যাচগুলোতে আরও ভালো খেলবে দল ।
লাল-হলুদের এই বদলের পেছনে কোচ অস্কার ব্রুঁজোকে কৃতিত্ব দিতে চান । কারণ কোচই কৌশল ঠিক করেন । এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগ এবং আইএসএলের দু’টো ম্যাচ মিলিয়ে মোট পাঁচটা ম্যাচে ইস্টবেঙ্গল এখনও পর্যন্ত অপরাজিত । গোল হজম করেনি । দলের খেলায় রক্ষণ এবং আক্রমণের প্রত্যাশিত তালমিলে ঘুরে দাঁড়ানোর বার্তা ।
দিমিত্রিয়স দিয়ামান্তাকোস বলছেন, “মহমেডানের বিরুদ্ধে ম্যাচটা আমাদের অনেক আত্মবিশ্বাস জোগায় । ওদের বিরুদ্ধে আমরা প্রথম পয়েন্ট পাই । শুক্রবারের জয় আমাদের তিন পয়েন্ট দিয়েছে । মহমেডান ম্যাচের মতো একসঙ্গে ডিফেন্স করেছি । ফলে প্রতিপক্ষের কাজটা আরও কঠিন হয়ে ওঠে । দলের জন্য আমাদের সব ম্যাচেই এরকম লড়াই করতে হবে । এই খেলাটা আমাদের বজায় রাখতে হবে ।’’
বলা হচ্ছে অস্কার ব্রুঁজো দায়িত্ব নেওয়ার পরে দলে বদল এসেছে । বিষয়টি মেনে নিয়ে চলতি মরশুমে আইএসএলে প্রথম জয় এনে দেওয়া স্ট্রাইকার বলছেন, “নতুন কোচ আসায় আমাদের কিছু জিনিস বদলাতে হয় । সেগুলোর সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ায় উপকারই হয়েছে আমাদের । নিজেদের গোল অক্ষত রাখাটা যে জরুরি, এর ওপর জোর দেন তিনি । দলের ছেলেদের যে সমস্যাগুলো ছিল, সেগুলোও উনি মেটান । এগুলো করেই দলকে এই জায়গায় নিয়ে এসেছেন কোচ ।”
নিজের সেরাটা দিয়ে গোল করার চেষ্টার পরে বাড়তি কিছু করার কথা মাথায় ছিল দিয়ামান্তাকোসের । তাই আক্রমণে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি রক্ষণে বারবার নেমে গিয়ে সাহায্য করেছিলেন । তবে মাদিহ তালালের সঙ্গে তাঁর টেলিপ্যাথি এবং গোল চমকে দিয়েছে । তালালের পায়ে বল পড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাত দিয়ে ইশারা করেছিলেন গ্রিসের স্ট্রাইকার । সেই ইঙ্গিত বুঝেই মাপা সেন্টার তালালের এবং তা থেকে হেডে গোল দিয়ামান্তাকোসের । দু’জনের বোঝাপড়া নিয়ে বলতে গিয়ে লাল-হলুদ স্ট্রাইকার বলেছেন, “তালাল গ্রিক বোঝে । মাঠে ও মাঠের বাইরেও আমাকে খুবই সাহায্য করে । ওর সঙ্গে খেলাটা আমি উপভোগ করছি ৷”
জয়ের নায়কের সুর ম্যাচের সেরা মাদিহ তালালের গলায় । ফরাসি ম্যাজিশিয়ান বলছেন, “আমার মনে হয়, এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে জয় আমাদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে এবং মহমেডান এসসির বিরুদ্ধে ন’জন খেলোয়াড় নিয়ে ড্র করা আমাদের পক্ষে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে । আশা করি, আমরা পরবর্তী ম্যাচেও এভাবেই সাফল্য অব্যহত রাখতে পারব । এটা শুধু ফিটনেসের ব্যাপার নয়, শুধুমাত্র মানসিকতার বিষয় । আমরা দু’সপ্তাহ বা এক মাসে খেলোয়াড় পরিবর্তন করতে পারি না । আমাদের মানসিক অবস্থা ঠিক ছিল না । এখন এই জয় আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে । সবাই তাদের মানসিকতা বদলেছে । সে জন্যই এভাবে খেলার জন্য আমরা উৎসাহ পেয়েছি ।” সব মিলিয়ে ইস্টবেঙ্গলে এখন বদলের সুর । ঘুরে দাঁড়ানোর প্রতিজ্ঞা ।