বাঁকুড়া, 28 ফেব্রুয়ারি: বিজেপি হোক বা বামেরা, সন্দেশখালিকে সিঙ্গুর বা নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সঙ্গে একসারিতে জুড়ে দেওয়ার চেষ্টা বিরোধীদের তরফে গত একসপ্তাহ ধরে চলছে ৷ কিন্তু, যে দু’টি আন্দোলন থেকে তৃণমূল তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষমতায় আসার উত্থান সেখানে যে দাগ লাগতে মমতা দেবেন না, তা বলার অপেক্ষা রাখে না ৷ তাই সন্দেশখালির নাম না করেই বুধবার মুখ্যমন্ত্রী বললেন, "সিঙ্গুর সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম নন্দীগ্রাম, খাতরা খাতরা আর বিষ্ণুপুর বিষ্ণুপুর ৷ এক একটা জায়গার, এক একটা চেহারা আছে ৷"এদিন মমতা বলেন, "সিঙ্গুর সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম নন্দীগ্রাম, খাতরা খাতরা আর বিষ্ণুপুর বিষ্ণুপুর ৷ এক একটা জায়গার, এক একটা চেহারা আছে ৷ কাজেই একটার সঙ্গে আরেকটা তুলনা করে... ভুল করবেন না ৷ আমি কোথাও রক্ত ঝরুক চাই না ৷ কোথাও অত্যাচার হোক চাই না ৷"
তবে অজান্ত হলেও, অন্যায়কে প্রশ্রয় দেবেন না বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ কোন অন্যায় ? কার অন্যায়ের কথা বললেন মমতা ? তবে, কি তিনি মেনে নিচ্ছেন সন্দেশখালিতে অন্যায় হয়েছে ৷ মমতা বলেন, "আজ যারা বড় বড় কথা বলে বেড়াচ্ছেন, খুলব তাঁদের ভাণ্ডার ? ভাণ্ডারে অনেক কথা আছে, আস্তে আস্তে ভাণ্ডারটা যখন খুলব, তখন বুঝতে পারবেন ৷ কোনটা ঠিক, কোনটা ভুল ৷ আমি ভুল জিনিসকে কখনই প্রশ্রয় দিই না ৷ অজান্তে যদি কোনও কাজ হয়ে থাকে সেটাকেও সমর্থন করি না ৷ সবরকম সাহায্য করি ৷ যতটা পারব মানুষকে সাহায্য করব ৷ মানুষকে সাহায্য করাই আমার কাজ ৷"
উল্লেখ্য, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে সন্দেশখালি ও শেখ শাহজাহান তৃণমূলের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে ৷ সেখান থেকে এখন রেহাই পেতে মরিয়া শাসকদল ৷ কিন্তু প্রশ্ন হল, বের করে দেওয়া এতটাও কি সহজ ! কারণ, সন্দেশখালিকে আগামী লোকসভায় বিজেপি বড় হাতিয়ারি হিসেবে ব্যবহার করবে ৷ আর তা বলার অপেক্ষা রাখে না ৷ ইতিমধ্যে, নির্মলা সীতারামন এবং কিরেণ রিজিজু এনিয়ে মমতা-সরকারকে নিশানা করেছেন রাজ্যে এসে ৷
1 মার্চ নরেন্দ্র মোদি আরামবাগ থেকে লোকসভার প্রচার পর্ব শুরু করছেন ৷ 6 মার্চ সন্দেশখালির নিকট বারাসতে নারী দিবস উপলক্ষে সভা রয়েছে মোদির ৷ সেই মঞ্চ তো মোদির সামনে, দিদির রাজত্বকে তুলধনা করার স্বর্গৈয় মঞ্চ ৷ কারণ, সন্দেশখালির আন্দোলন মাথাচারা দিয়েছে নির্যাতিতা মহিলারাদের ক্ষোভ থেকে ৷ ফলে এই সন্দেশখালিকে মমতা, নন্দীগ্রাম বা সিঙ্গুরের সঙ্গে একসারিতে কখনই তুলতে দেবেন না, তা বলাই বাহুল্য ৷
আরও পড়ুন: