হাওড়া/কলকাতা, 11 ফেব্রুয়ারি: কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রতিবাদে রেড রোডের পাশাপাশি, জেলায় জেলায় আন্দোলনও শুরু করেছে তৃণমূল ৷ সেখানেও চলছে কেন্দ্রের কাছে বকেয়া প্রাপ্তির দাবিতে ধরনা ৷ আর সেখানেই হাওড়ার ধরনা মঞ্চে নজিরবিহীন ঘটনার সাক্ষী থাকল রাজ্য রাজনীতি ৷ তৃণমূল কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখেই 'গদ্দার' স্লোগান উঠল ধরনা মঞ্চ থেকেই ৷ আর তার জেরে বেজায় চটলেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী ৷ তিনি সরাসরি জেলার শীর্ষ নেতাদের নির্দেশ দিলেন, ধরনা মঞ্চ থেকে নেমে যেতে ৷ প্রয়োজনে তিনি এই সভাই বন্ধ করে দেবেন বলেও হুশিয়ারি দেন নেতা ৷
একশোদিনের কাজের টাকা, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, সড়ক যোজনা-সহ একাধিক কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা আটকে রাখার প্রতিবাদে রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি চালাচ্ছে তৃণমূল ৷ রবিবার হাওড়ার ধরনা মঞ্চে সুব্রত বক্সির উপস্থিতিতে ওঠেন জেলার একদা দাপুটে নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ কিন্তু, রাজীব মঞ্চে উঠতেই প্রতিবাদ মঞ্চের আবহাওয়া বদলে যায় ৷ মঞ্চ থেকেই 'গদ্দার', 'গদ্দার' স্লোগান উঠতে শুরু করে ৷ অভিযোগ হাওড়া জেলারই একাংশ নেতা সেই স্লোগান দিতে শুরু করেন ৷ আর সঙ্গে গলা মেলান মঞ্চের নিচে উপস্থিত কর্মী-সমর্থকরাও ৷
তখন মঞ্চে ছিলেন অরূপ রায়, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ হাওড়ার প্রথম সারির তৃণমূল নেতারা ৷ তাঁরাই দলীয় সমার্থকদের সামলানোর চেষ্টা করেন ৷ আর পুরো বিষয়টিতে মঞ্চের নিচে বসে লক্ষ্য রাখছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী ৷ এমন ঘটনা যে ঘটতে পারে তিনি ভাবতেও পারেননি ৷ আর তাই তিনিও রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়েন ৷ তবে, পরিস্থিতি সামাল দিতে তিনি নিজে ময়দানে নামেন ৷ হাওড়া জেলার নেতাদের কাছ থেকে মাইক চেয়ে নিয়ে দলীয় নেতৃত্বকে চরম ভর্ৎসনা করেন সুব্রত ৷
ক্ষুব্ধ সুব্রত বক্সী বলেন, "হাওড়া জেলা থেকে যে সমস্ত নেতারা আছেন, তাঁরা সবাই নেমে যান ৷ এটা গুন্ডামির জায়গা নয় ৷ আপনারা না থাকলেই এই ধরনা মঞ্চ চলবে ৷ এখানে এসব চলতে পারে না ৷ আপনারা মঞ্চে থাকার যোগ্য নন ৷" রাজ্য সভাপতি এহেন ভর্ৎসনার পর কয়েকজন বাছাই করা নেতাদের নিয়েই এই ধরনা চলতে থাকে ৷ তবে, এই ঘটনা তৃণমূলের অন্দরের দ্বন্দ্বকে একদিকে যেমন আরও প্রকাশ্যে এনে দিল ৷
উল্লেখ্য, 2021 সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তবে, নির্বাচনের কয়েকমাস পরই অবশ্য তিনি তৃণমূলে ফিরে আসেন ৷ শীর্ষ নেতৃত্ব তাঁকে গ্রহণ করলেও, রাজ্য বা হাওড়া জেলার অনেক নেতারই বিষয়টি ভালো লাগেনি ৷ সোজা ত্রিপুরা তৃণমূল কংগ্রেসের দায়িত্ব দিয়ে পাঠানো হয় রাজীবকে ৷ কিন্তু, সেখানেও সংগঠনকে সেভাবে শক্তিশালী করে তুলতে পারেননি রাজীব ৷ এবার তাঁকে ঘিরেই স্লোগানে তপ্ত হল তৃণমূলের প্রতিবাদ মঞ্চ।
আরও পড়ুন: