স্বরূপনগর, 20 মে: দলীয় কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে দেখা করে ফেরার পথে তৃণমূলের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন বনগাঁর বিজেপি প্রার্থী তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। তাঁর গাড়ি ঘিরে ধরে বিক্ষোভ এবং স্লোগান দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শাসকদলের কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে । এনিয়ে শান্তনুর নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের বচসা বাঁধলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ভোটের ঠিক আগের রাতের এই ঘটনায় রীতিমতো সরগরম স্বরূপনগরের বালতি এলাকা। পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে স্বরূপনগর থানার বিশাল পুলিশবাহিনী । এরপর কোনওক্রমে বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে পরিস্থিতির সামাল দেয় তাঁরা। এই ঘটনায় তৃণমূল এবং বিজেপি একে অপরকে দোষারোপ করেছে। ফলে, ভোটের ঠিক আগে এনিয়ে চড়ছে রাজনীতির পারদ।
আজ সোমবার পঞ্চম দফায় হাইভোল্টেজ বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের নির্বাচন। তার ঠিক আগের রাতে তৃণমূলের বিরুদ্ধে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সাধারণ ভোটারদের। বাড়ি বাড়ি তাঁরা শাসিয়ে আসছে ভোটের দিন যেন তাঁরা বাড়ি থেকে বের না হন। এমনই অভিযোগ পেয়ে রবিবার রাতে স্বরূপনগরের বালতি এলাকায় গিয়েছিলেন পদ্ম প্রার্থী শান্তনু ঠাকুর। স্বরূপনগর বিধানসভার এই এলাকাটি বনগাঁ লোকসভার অন্তর্গত। নিজের সংসদীয় এলাকা থেকে হুমকির অভিযোগ পেতেই বিজেপি প্রার্থী দেরি করেননি সেখানে যেতে। দলীয় কর্মীদের সঙ্গে দেখা করে ফেরার সময় আচমকা শান্তনুর গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তৃণমূলের স্থানীয় কর্মীরা। বিক্ষোভ চলাকালীন ওঠে 'জয় বাংলা' স্লোগানও। তুমুল বিক্ষোভে কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর গাড়ি। তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনী পরিস্থিতি সামাল দিতে গেলে বচসা বেঁধে যায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে। ধস্তাধস্তির পরিস্থিতিও তৈরি হয় একসময়। যার জেরে উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। পরে, অবশ্য পুলিশের বিশাল বাহিনী এসে পরিস্থিতি আয়ত্তে এনেছে। বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে এদিন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের কনভয় যাওয়ার রাস্তা করে দেয় পুলিশ।
এদিকে, এই ঘটনায় শাসকদলের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কনভয়ে আক্রমণের অভিযোগ এনে সরব হয়েছে গেরুয়া শিবির। এই বিষয়ে স্থানীয় বিজেপি নেতা বৃন্দাবন সরকার বলেন, "স্বরূপনগরের বালতি, হাকিমপুর, বিথারী প্রভৃতি এলাকায় তৃণমূলের লোকজন বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাধারণ ভোটারদের ধমকাচ্ছে, চমকাচ্ছে। বলে আসছে, ভোটের দিন তাঁরা যেন ভোট দিতে না যান। বাড়ি ছেড়ে অন্য কোথায়ও চলে যায় পরিবার। শুধু ভোটাররাই নয় ! বিজেপির এজেন্টদেরও ভয় দেখাচ্ছে। বুথমুখী না হওয়ার ফরমান দিয়ে আসছে। এই যদি পরিস্থিতি হয়, তাহলে ভোটের দিন কী হবে ? নির্বাচন কমিশন শান্তিপূর্ণভাবে ভোট করুক সেটাই আমরা চাই।"
অন্যদিকে, এদিনের ঘটনার সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেছেন তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার যুব সভাপতি নিরুপম দাস। তাঁর কথায়, "সাংসদ থাকাকালীন গত পাঁচ বছরে স্বরূপনগর বিধানসভা এলাকায় কোনও উন্নয়ন করেননি শান্তনু ঠাকুর। সেখানে একবারের জন্যও যাওয়ার প্রয়োজন মনে করেননি তিনি। এনিয়ে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। সেই ক্ষোভের জেরেই বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীকে।সাধারণ ভোটাররা শান্তনুকে হারাতে তৈরি হয়ে রয়েছেন। এবার বনগাঁয় ঘাসফুল ফুটবেই। এনিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।"
আরও পড়ুন