দুর্গাপুর, 21 মার্চ: সাতসকালে সাইকেল চালিয়ে প্রচার শুরু করে দিলেন বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী কীর্তি আজাদ ৷ বৃহস্পতিবার হাতে বাজারের থলে নিয়ে দুর্গাপুর স্টিল টাউনশিপের সবচেয়ে জনবহুল চণ্ডীদাস বাজার চষে ফেললেন তিনি ৷ বাজার ঘুরে ঘুরে কিনলেন ফল, সবজি । আর তাঁকে দেখে বাজার করতে আসা স্টিল টাউনশিপের মানুষেরা হতবাক । 1983 বিশ্বকাপ জয়ী ভারতীয় ক্রিকেট দলের অন্যতম প্রধান সদস্য তথা বর্তমানে বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী কীর্তি আজাদকে এইভাবে চাক্ষুস করতে পেরে উৎসাহ ধরা পড়ে স্থানীয়দের মধ্যে ৷
এ দিন সাইকেলে চড়ে নিজের কেন্দ্রে বাজারে যান কীর্তি আজাদ ৷ আর এভাবেই চলে প্রচার ৷ আলু, পটল, টমেটো, মুলো কেনার পর বিক্রেতারা তাঁকে প্লাস্টিকে ভরে সবজি দিতে চাইলে তা নিতে চাননি তৃণমূল প্রার্থী ৷ মুখে চওড়া হাসি নিয়ে তিনি বলেন, "প্লাস্টিকের ব্যবহার করবেন না ৷"
কীর্তি আজাদের সঙ্গে এ দিন ছিলেন রাজ্যের পঞ্চায়েত গ্রামোন্নয়ন ও সমবায় দফতরের মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার এবং পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী-সহ কয়েকশো তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী সমর্থক । বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের দুর্গাপুরে কার্যত এভাবেই জনসংযোগের মাধ্যমে ভোট প্রচার শুরু করলেন একসময়ের মারকুটে মেজাজের এই ব্যাটসম্যান ।
বাজারে অগণিত মানুষের সঙ্গে এ দিন কথা বলে তাঁদের সুবিধে অসুবিধের কথা জানতে চান তৃণমূল প্রার্থী ৷ তিনি জানতে চান জিনিসপত্রের দাম নাগালের মধ্যে আছে কি না ? এরপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অলরাউন্ডার বললেন, "একসময় নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহরা এ রাজ্যে এসে বলেছিলেন আবকি বার দোসো পার । কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল তারা সেঞ্চুরি করতেও পারলেন না । আসলে বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের সবচেয়ে দীন দরিদ্র মানুষও ভাবেন যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের আপন । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তাঁরা বিশ্বাস করেন । তাই পশ্চিমবঙ্গে লোকসভায় 42-এ 42-ই পাবে তৃণমূল কংগ্রেস ।"
ক্রিকেটে তাঁর জুনিয়র ইউসুফ পাঠান এখন রাজনীতিতে তাঁর সহকর্মী ৷ বহরমপুর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হলে কীর্তি আজাদ বলেন, "ইউসুফ অত্যন্ত ভালো ছেলে । সে একজন দক্ষ ক্রিকেটার । অত্যন্ত গরিব ঘরের ছেলে । তাকে বলবো সৎ পথে থেকে কাজ করে যাও । বিরোধীরা এখনও এই আসনে প্রার্থী দেয়নি, কারণ আমার বোলিংকে ভয় পেয়েছে ।" এ দিন অত্যন্ত হাসিখুশি মেজাজে বাজার করার পাশাপাশি জনসংযোগ সারলেন তিনবারের সাংসদ ।
যদিও বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘড়ুই কীর্তি আজাদকে বহিরাগত বলে তোপ দেগেছেন ৷ তিনি বলেন, "নরেন্দ্র মোদি এবং অমিত শাহ যখন এ রাজ্যে আসেন তখন তাঁরা হয়ে যান বহিরাগত । আর ভাগলপুরের বাসিন্দা যখন দুর্গাপুরের প্রার্থী হন তখন দিদি কেন চুপ থাকেন ? তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা বুঝে গিয়েছেন যে, এই প্রার্থী জয় পাবে না । তাই এই প্রার্থীর সমর্থনে অনেকেই প্রচারে নামছে না বলে শুনছি । আমাদের প্রার্থী আগামিকাল সন্ধ্যার মধ্যেই ঘোষণা হয়ে যাবে । এর আগের বারের লোকসভা নির্বাচনে মাত্র 15 দিন সময় পেয়েছিলাম প্রচারের জন্য, তাতেই গোল দিয়ে দিয়েছিলাম । এবার তো 55 দিন হাতে আছে ।"
আরও পড়ুন: