শ্রীরামপুর, 31 মার্চ: বিদায়ী তৃণমূল সাংসদ অপরূপা পোদ্দার বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন ৷ এমনই বিস্ফোরক দাবি করলেন শ্রীরামপুরের বিজেপি প্রার্থী কবীর শংকর বোস। যার পালটা দিতে গিয়ে অপরূপা বলেন, "দম থাকলে বলুন, কোন বিজেপির নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করেছি ৷"
আরামবাগ থেকে প্রার্থীপদ না পেয়ে তৃণমূলের একাধিক নেতা-মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন অপরূপা পোদ্দার। শুক্রবার সংবাদ মাধ্যমে তৃণমূল নেতৃত্বের উপর উষ্মা প্রকাশ করতে দেখা যায় তাঁকে। এরপরই তৃণমূলের অন্দরে ও বাইরে অপরূপাকে নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়ে যায়। দু'বারের তৃণমূল সাংসদ বিজেপিতে যোগ দেওয়া নিয়েও প্রশ্ন ওঠে রাজনৈতিক মহলে। এরপরই অপরূপার বিজেপিতে যোগ দেওয়া ব্যাপারে নিশ্চিত করেন শ্রীরামপুরের বিজেপির প্রার্থী কবীর শঙ্কর বোস। তাঁর বক্তব্যে পরিষ্কার, বিজেপিতে যোগ দেওয়া জন্য যোগাযোগ করছেন অপরূপা নিজেই। সেই কথা কানে আসতেই নিজের অবস্থান স্পষ্ট করতে মরিয়া হয়ে ওঠেন তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ। 24 ঘন্টা পেরতে না পেরতেই বেসুরো অপরূপা দাবি করেন, তিনি তৃণমূলেই থাকছেন। তাঁর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। বিজেপির প্রার্থী কবীরের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জও ছুঁড়ে দেন তিনি। সমস্ত রাগ-রোষ ভুলে তিনি আশাবাদী শ্রীরামপুর থেকে প্রবীণ সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ই জিতবেন।
গত দু'বারের আরামবাগের জয়ী সাংসদ অপরূপা পোদ্দার। গত লোকসভা ভোটে 1100-এর কিছু বেশি ভোটে বিজেপির বিরুদ্ধে জয় পেয়েছিলেন তিনি। এরপর তাঁকে টিকিট দেওয়া নিয়ে দলের অন্দরে জল্পনা শুরু হয়। অপরূপার পরিবর্তে মিতালি বাগকে আরামবাগের তৃণমূলের প্রার্থী করে দল ৷ এরপরই টিকিট না পাওয়া নিয়ে সরব হন তিনি। টাকা না-থাকার জন্য টিকিট পাননি বলেও দাবি করতে শোনা যায় অপরূপাকে ৷ প্রার্থী না হওয়ার জন্য প্রবীণ সাংসদ ও দুই মন্ত্রীর বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগড়ে দেন। সেই প্রসঙ্গ উস্কে দিয়েছেন, শ্রীরামপুরের বিজেপি প্রার্থী কবীর শঙ্কর বোস। শনিবার প্রচারে বেড়িয়ে বিজেপি প্রার্থী বলেন, "তৃণমূলের একজন পুরনো নেত্রী অপরূপা পোদ্দার বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ করেছে ৷ শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছেন।"
সেই কথা প্রকাশ্যে আসতেই সরব হয়েছেন বিদায়ী সাংসদ অপরূপা পোদ্দার। তিনি বলেন, "কবীর শঙ্করবাবুর যদি দম থাকে, তাহলে বলুন আমি কোন বিজেপি নেতার সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছি। কেন মিথ্যা অভিযোগ করছেন ? আসলে কবীরবাবু বিধানসভা নির্বাচনে হেরো প্রার্থী হিসেবে শ্রীরামপুর থেকে বিদায় নিয়েছিলেন। আমি মমতাদির ছোট বোন হিসেবে দলে এসেছিলাম এবং থাকব। তার এই মিথ্যা অভিযোগ আমি প্রমাণ করে ছাড়ব। কল্যাণদা অনেক ভোটে শ্রীরামপুর থেকে জিতবেন। আমার বাবা ক্যানসারের রোগী। তাঁর একটা কিডনি বাদ গিয়েছে । মা দু'বছর ধরে কোমায় রয়েছেন । সত্যি আমার আর্থিক অবস্থা ঠিক নেই । আমার মা-বাবাকে নিয়ে আমি চিন্তায় আছি। তাই আমি বলেছি, আমার আর্থিক অবস্থা ঠিক নেই তাই আমি ভোটে দাঁড়াইনি । আমার মা-বাবার যা অবস্থা সে নিয়ে আমি খুব চিন্তায় রয়েছি ।"
আরও পড়ুন