নয়াদিল্লি, 9 ফেব্রুয়ারি: ভারতরত্ন পুরস্কার ঘোষণা করে আরও একবার চমক দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দেশের দুই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পিভি নরসিমহ রাও এবং চৌধুরি চরণ সিংয়ের পাশাপাশি সবুজ বিপ্লবের প্রাণপুরুষ এমএস স্বামীনাথনও পাচ্ছেন সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান। নরসিমহাকে পুরস্কার দেওয়া নিয়ে রাজনৈতিক মহলে তুমুল তরজা হচ্ছে। এমনই আবহে তাঁর সম্মান প্রাপ্তিতে খুশি সোনিয়া গান্ধি। কংগ্রেসের এই প্রাক্তন সভাপতি জানান, নরসিমহার ভারতরত্ন পাওয়ার সিদ্ধান্তকে তিনি স্বাগত জানাচ্ছেন। সংসদ চত্বরে এই সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, "অবশ্যই স্বাগত জানাচ্ছি। স্বাগত জানাব না কেন!"
নরসিমহার সঙ্গে সোনিয়া থেকে শুরু করে গান্ধি পরিবার তথা কংগ্রেসের সম্পর্ক নিয়ে তরজা আজও চলে। 2004 সালের 23 ডিসেম্বর মৃত্যু হয় নরসিমহার। তবে তার আগের বেশ কয়েক বছর রাজনৈতিক পরিসরের বাইরেই থেকেছেন। শুধু তাই নয়, তিনিই দেশের একমাত্র প্রধানমন্ত্রী যাঁর শেষকৃত্য দিল্লিতে হয়নি। এক্ষেত্রেও অনেকেই কংগ্রেস বিশেষ করে গান্ধি পরিবারের ভূমিকা দেখেন।
1992 সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংস হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু'পক্ষের সম্পর্কের অবনতি হতে থাকে। রাজনৈতিক মহলের মতে, সেই তিক্ততা অনেকাংশেই থেকে গিয়েছিল শেষ পর্যন্ত। ঠিক এখানেই লোকসভা নির্বাচনের মাত্র কয়েক মাস আগে নরসিমহাকে ভারতরত্ন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। রাজনৈতিক মহলের একটা বড় অংশই এই সিদ্ধান্তের নেপথ্যে রাজনৈতিক সমীকরণ আছে বলে মনে করছে।
সোনিয়ার আগে এ নিয়ে কংগ্রেসের তরফে প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়েছিল। তিনজনকে ভারতরত্ন দেওয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও মোদি সরকারকে খোঁচা দিতে ছাড়েনি কংগ্রেস। আজীবন কৃষকদের নিয়ে সংগ্রাম ল়ড়ে চলা স্বামীনাথন চেয়ছিলেন কৃষকের নূন্যতম সহায়ক মূল্য পাওয়ার বিষয়টি আইনি মর্যাদা পাক। এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকার কেন নীরব সেই প্রশ্নই তুলেছে কংগ্রেস।
দলের পর প্রাক্তন সভাপতি সোনিয়াও প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। সংসদের বাইরে তিনি বলেন, "অবশ্যই স্বাগত জানাচ্ছি। স্বাগত জানাব না কেন!" তার আগে দলের নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জয়রাম রমেশ সোশাল মিডিয়ায় লেখেন, "নরসিমা রাও, চৌধুরি চরণ সিং এবং এমএস স্বামীনাথান সবসময়ই ভারতরত্ন ছিলেন। তাঁরা আগামিদিনেও ভারতরত্নই থাকবেন। দেশ গড়ার নেপথ্যে তাঁদের অবদান দেশবাসী কোনও দিন ভুলবে না।" প্রসঙ্গত, এই নিয়ে চলতি বছরে 5 জনকে ভারতরত্ন দিল কেন্দ্র। এই তিনজনের আগে বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী করপুরি ঠাকুর এবং দেশের প্রাক্তন উপ-প্রধানমন্ত্রী লালকৃষ্ণ আদবানীকেও সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন