আসানসোল, 9 এপ্রিল: সংসদে বিদায়ী সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহার ভূমিকা একটি ‘বিগ জিরো’ ! তাঁর সংসদীয় এলাকা আসানসোল নিয়ে একটাও প্রশ্ন তোলেননি তিনি । এমনকি অংশ নেননি কোনও বিতর্কেও । এমনই পরিসংখ্যান সামনে আসতেই বিরোধীরা হইচই শুরু করেছে । যদিও এমন প্রশ্নে সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহার দাবি, "এবার সংসদে কাকে বলতে দেওয়া হয়েছে ? আমাকে তো জিরো আওয়ারেও বলতে দেওয়া হয়নি ।"
বছর আড়াই আগে উপ-নির্বাচনে জিতে আসানসোলের সাংসদ হয়েছিলেন শত্রুঘ্ন সিনহা ৷ তাঁকেই আবার লোকসভা ভোটে প্রার্থী করেছে তৃণমূল ৷ ফলে এই আড়াই বছরে তাঁর কাজের খতিয়ান বড় উঠেছে ভোটের প্রচারে ৷ শত্রুঘ্ন সিনহা ইতিমধ্যেই তাঁর রিপোর্ট কার্ড পেশ করে আসানসোলের জন্য উন্নয়নের পরিসংখ্যান তুলে ধরেছেন । মাত্র আড়াই বছরে তিনি প্রায় 11 কোটি টাকার উন্নয়ন করেছেন বলে দাবি করেছেন । পাশাপাশি তিনি বহু রেল প্রকল্পের অনুমোদন করিয়েছেন বলে দাবি করেছেন এবং প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকেও সাধারণ মানুষের চিকিৎসার জন্য অনেক অনুমোদন তিনি এনেছেন বলে জোর গলায় জানিয়েছেন ।
কিন্তু বাস্তবিক ক্ষেত্রে সংসদে সাংসদের কী ভূমিকা ছিল ? সেই পরিসংখ্যান বলছে, শত্রুঘ্ন সিনহা সংসদে একটিও প্রশ্ন তোলেননি তাঁর সাংসদীয় এলাকা আসানসোলের কোনও সমস্যা নিয়ে । এমনকি সংসদে কোনও বিতর্কেও অংশগ্রহণ করেননি তিনি । সংসদে তাঁর হাজিরাও যথেষ্ট নয় বলে দাবি করছেন বিরোধীরা । মাত্র 63 শতাংশ হাজিরা ছিল তাঁর সংসদে । প্রশ্ন উঠছেই তবে শত্রুঘ্ন সিনহা তাঁর দাবি কোথায় জানালেন ?
বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বাপ্পাদিত্য চট্টোপাধ্যায় বলেন, "আমাদের দুর্ভাগ্য সংসদে আমাদের সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহা তার সংসদ এলাকা নিয়ে একটিও প্রশ্ন তোলেননি । আসানসোলের বিস্তীর্ণ এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে । অথচ তিনি চেষ্টা করলে কেন্দ্রের প্রকল্প তিনি নিয়ে আসতে পারতেন । কিন্তু আসানসোল নিয়ে তিনি কোনও আওয়াজই তোলেননি । তিনি একদিকে যেমন সাধারণ মানুষের সঙ্গে কখনও কথা বলেননি, তেমনই তাঁর কণ্ঠস্বর আমরা সংসদে শুনতে পাইনি ।"
বিজেপি রাজ্য নেতা কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়ও একই প্রশ্নই তুলেছেন । তিনি বলেন, ‘‘ডিবেট হোক কিংবা সংসদে প্রশ্ন তোলা হোক আমাদের সাংসদের রেজাল্ট শূন্য । তবে তিনি যে দাবি করছেন যে কেন্দ্রের কাছে তিনি অনেক অনুমোদন নিয়ে এসেছেন তার সেই দাবি তিনি কোথায় করেছেন ?"
বিষয়টি শত্রুঘ্ন সিনহাকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, "বিরোধীরা তো এমন অভিযোগ তুলবেই । কিন্তু বাস্তবিক চিত্র অন্য । সংসদে তো কাউকে বলতেই দেওয়া হয় না । এবার সংসদে তো অপশব্দ আর অশান্তিই ছড়িয়েছে । কেউ বলার মতো সুযোগই পায়নি । আমি জিরো আওয়ারে বলতে চেয়েছি । তখনও আমাকে বলার সুযোগ করে দেওয়া হয়নি ।"
লোকসভা ভোটের ঠিক আগেই সংসদে সাংসদে পারফরম্যান্স নিয়ে বিরোধীরা হইচই করতে শুরু করেছে । প্রশ্ন উঠছেই আগামিদিনে সাংসদ হিসেবে শত্রুঘ্ন সিনহাকে পুনরায় সংসদে পাঠানো হলে আসানসোলের কি লাভ হবে ?
আরও পড়ুন: