ETV Bharat / politics

আরামবাগ-কৃষ্ণনগরে পদ্ম ফোটাতে বিজেপির ভরসা সেই 'মোদি ম্যাজিক'

Narendra Modi: লোকসভা ভোটের দিন ঘোষণার আগেই রাজ্যে আসেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। নির্বাচনের এই উত্তাপ আরও কয়েকগুণ বেড়ে যাবে শুক্রবার। রাজ্যে সভা করতে আসছেন প্রধানমন্ত্রী। রাজনৈতিকভাবে বিজেপির পায়ের তলায় শক্ত মাটি আছে এমন জায়গাই বেছে নেওয়া হয়েছে মোদির মোগা শো-এর জন্য। প্রধানমন্ত্রীর সফরে নানা দিক নিয়ে পড়ুন ইটিভি ভারতের বিস্তারিত বিশ্লেষণ।

Etv Bharat
Etv Bharat
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Feb 29, 2024, 10:36 PM IST

Updated : Feb 29, 2024, 10:54 PM IST

কলকাতা, 29 ফেব্রুয়ারি: রাজ্যে লোকসভা ভোটের বিজেপির প্রচারের সুর বেধে দিতে দু'দিনের সফরে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পরপর দু'দিন প্রধানমন্ত্রীর সভার জন্য যে দুটি জায়গা বেছে নেওয়া হয়েছে, তা রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ ৷ জানা গিয়েছে, আগামিকাল অর্থাৎ শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী সভা করবেন আরামবাগে এবং শনিবার তিনি যাবেন কৃষ্ণনগরে। 2019 সালের লোকসভা ভোটের নিরীখে রাজ্যে বিজেপির অবস্থান বিশ্লেষণ করলে দেখা যাচ্ছে, রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল এবং উত্তরের একাধিক জেলাতেই ভালো ফল করেছিল বিজেপি ৷ সেই হিসেবে এই সফরের আলাদা গুরুত্ব রয়েছে।

দক্ষিণবঙ্গের তুলনায় 18 সাংসদের অর্ধেকেরও বেশি সাংসদ তাদের এসেছিল উত্তর এবং পশ্চিমের জেলাগুলি থেকেই ৷ স্বাভাবিকভাবেই রাজনৈতিক মহলের প্রাথমিক ধারনা, চলতি লোকসভা ভোটের আগে সলতে পাকানোর কাজটা সেই এলাকাগুলি থেকেই শুরু করতে পারতেন প্রধানমন্ত্রী ৷ অন্তত সন্দেশখালি ইস্যুর মধ্যে বারাসত বা বসিরহাটের মতো এলাকাও মোদির সভার জন্য বেছে নিতে পারত পদ্ম শিবির ৷ কিন্তু সে সব পথে হাঁটলেন না নরেন্দ্র মোদি ৷ আর তার জেরেই বাড়ছে জল্পনা ৷

মার্চের প্রথম দুটি দিন 1 ও 2 তারিক পর্যায়ক্রমে হুগলির আরামবাগ আর তারপরই কৃষ্ণনগরে সভা করবেন প্রধানমন্ত্রীর ৷ আর 8 মার্চ নারী দিবসের দিন বারাসতকে মোদির সভার জন্য বেছে নিয়েছে বিজেপি ৷ কিন্তু পয়লা মার্চ কালীপুর ময়দানে দুপুরে প্রধানমন্ত্রী যে সভা করতে চলেছেন, তার পিছনে বেশ কিছু কারণ উঠে আসছে ৷ এর আগে চলতি মাসের 12 তারিখে এই কালীপুরেই সভা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে জানা গিয়েছে, মোদির সভা আরও বড় পরিসর নিয়ে হবে। শেষ লোকসভা নির্বাচন অর্থাৎ 2019 সালে রাজ্যে বিজেপির সাংসদ সংখ্যে 18-তে দাঁড়ায় ৷ হুগলি থেকে জিতেছিলেন লকেট চট্টোপাধ্য়ায় ৷ অল্পের জন্য সেবার হাতছাড়া হয়েছিল আরামবাগ ৷ 2019 সালে অত্যন্ত কম মার্জিনে মাত্র 1142 ভোটে আরামবাগ থেকে জয়ী হয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী অপরূপা পোদ্দার।

ওই বছর 42টি লোকসভা আসনের মধ্যে একমাত্র আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রে সবথেকে কম মার্জিনে জেতেন অপরূপা। আর এই বিষয়টিকেই কাজে লাগিয়ে ফায়দা পেতে চাইছে বিজেপি ! আমাবাগ লোকসভা কেন্দ্রে এই পাঁচ বছরে পদ্ম শিবির নিজের অনেকটাই স্ট্রং হোল্ড বাড়াতে পেরেছে বলেই মনে করছে বিজেপি। তবে কিছু জায়গায় দলীয় কোন্দলের ঘটনাও ঘটেছে। তাই বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে মনোবল বাড়াতে এবং আরামবাগকে আসন্ন নির্বাচনে জিতিয়ে নিয়ে আসাটা তেমন কষ্ট সাধ্য নাও হতে পারে বলে মনে করছে দল। তাই বিজেপির সবচেয়ে বড় ট্রাম্প কার্ড নরেন্দ্র মোদিকে দিয়েই আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের প্রচার শুরু করতে চাইছে দল।

প্রসঙ্গত, আরামবাগ লোকসভার অন্তর্গত সাতটি বিধাসভার মধ্যে ছয়টি হুগলি এবং একটি বিধানসভা কেন্দ্র পশ্চিম মেদিনীপুর। অন্যদিকে, আরামবাগে একটি পঞ্চায়েত সমিতি (খানাকুল 2 নম্বর পঞ্চায়েত সমিতি ) বিজেপির দখলে। আর মোট 9টি গ্রাম পঞ্চায়েত বিজেপির দখলে রয়েছে। হুগলি জেলা পরিষদে বিরোধী হিসাবে দু'জন সদস্য বিজেপির রয়েছেন। তার মধ্যে এখন খানাকুলের বিধায়ক। 2014 সাল থেকে 2019 আবারও ওই আসনে তৃণমূল কংগ্রেস জয়ী হয়। তবে শেষ লোকসভা নির্বাচনে অল্পের জন্য অপরূপা পোদ্দারের জয় পদ্ম শিবিরের মনবল অবশ্যই অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছে। তাই সেই বিশ্বাসের উপরে ভর করে ওই কেন্দ্রের আরও অক্সিজেন সঞ্চার করতেই মোদি ম্যাজিক করতে চাইছে দল।

অন্যদিকে, আগামী 2 মার্চ কৃষ্ণনগরের গভর্নমেন্ট কলেজের মাঠে প্রধানমন্ত্রীর সভা। আরামবাগের মতো নদিয়ার অন্যতম সদর শহর কৃষ্ণনগরেও একাধিক ফ্যাক্টর বেছে নিচ্ছে বিজেপি শিবির ৷ তার মধ্যে দুটি অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য হিসাবে তাদের ব্যাখ্য়া, মতুয়া ভোট ব্যাঙ্ক এবং সীমান্তবর্তি এলাকা-সহ বিস্তির্ণ গ্রামীন এলাকা ৷ পরিসংখ্য়ান বলছে, করিমপুর, তেহট্ট, পলাশিপাড়া বিস্তির্ণ এলাকা জুড়ে মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষের বাস ৷ 2020 সালে কৃষ্ণনগরে সভা করে গিয়েছেন অমিত শাহ ৷ বিজেপির দাবি, শাহের সেই সভায় মানুষের উপস্থিতি এবং আরও নির্দিষ্ট করে বললে মতুয়াদের উপস্থিতি দেখে উচ্ছ্বসিত হয়েছিল খোদ বিজেপির চানক্য ৷

নদিয়া জেলার বড় অংশের বাসিন্দা মতুয়া সম্প্রদায়ের। আর 2019 এবং 21 পর পর দুই ভোটেই দেখা গিয়েছে, রাজ্যের মতুয়াদের বড় অংশের ভোট চলে গিয়েছিল বিজেপির দখলে। নদিয়ার যে অংশে রাস উৎসব হয় সেখানেই মতুয়া সম্প্রদায়ের বাস। অর্থাৎ শান্তিপুর, নবদ্বীপ এবং কৃষ্ণনগর ৷ শুধু তাই নয়, ভৌগলিক অবস্থার বিচারেও দেখা যাচ্ছে, তাহেরপুর, তেহট্ট, চাকদা, রানাঘাট, কৃষ্ণনগর-এর মতো নদিয়ার এলাকাগুলি বনগাঁ, গোপালনগর, অশোকনগর বা উত্তর 24 পরগনার একাধিক এলাকার সঙ্গে সংযুক্ত ৷ যেগুলিও 'মতুয়া গড়' বলেই পরিচিত ৷ গত পঞ্চায়েত ভোটেও দেখা গিয়েছে মতুয়াদের একটা বড় অংশের ভোট নিজেদের দখলে রাখতে পেরেছে বিজেপি ৷ 2019-এ রানাঘাট সংসদ আসনটিও জিতেছিল বিজেপি। লোকসভা ভোটের আগে গেরুয়া শিবিরের সেই মাটি কাটতে চাইছেন তৃণমূল নেত্রী। আর তাতেই জল ঢালতে বিজেপির প্রধান হাতিয়ার নরেন্দ্র মোদি ৷ সেক্ষেত্রে কৃষ্ণনগরের প্রধানমন্ত্রীর সভার জেরে এক ঢিলে দুই জেলার মতুয়াদের কাছেও খুব সহজেই বার্তা পৌঁছে দেওয়া যাবে বলেও মনে করছে বিজেপি ৷

অন্যদিকে, সংসদের গোপন তথ্য ফাঁস করে দেওয়া এবং অর্থের বিনিময় প্রশ্নের অভিযোগে সংসদের এথিক্স কমিটি বহিষ্কার করে মহুয়া মৈত্রকে ৷ এই বাস্তবতাকে হাতিয়ার করেও আশায় বুক বেঁধেছে পদ্ম শিবির। প্রসঙ্গত, এই এলাকার সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে তেহট্ট, পলাশীপাড়া, কালীগঞ্জ, নাকাশিপাড়া, কৃষ্ণনগর উত্তর এবং কৃষ্ণনগর দক্ষিণে 2009 সালের আগে তৃণমূলও এই লোকসভা কেন্দ্রে দাঁত ফোটাতে পারেনি। এরপর তাপস পাল এবং তারপর মৌহুয়া মৈত্রের হাত ধরে তৃণমূলের উত্থান এই কেন্দ্রে। আর সেই কেন্দ্রেই এবার মতুয়া তাস খেলে বাজিমাত করতে চাইছে বিজেপিও ৷

আরও পড়ুন

মা-বোনেদের স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদের জেরেই গ্রেফতার শাহজাহান, বলছে বিজেপি

পাখির চোখ লোকসভা ভোট, জনগর্জনের প্রস্তুতিতে পাঁচশো সভা তৃণমূলের

কলকাতা, 29 ফেব্রুয়ারি: রাজ্যে লোকসভা ভোটের বিজেপির প্রচারের সুর বেধে দিতে দু'দিনের সফরে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পরপর দু'দিন প্রধানমন্ত্রীর সভার জন্য যে দুটি জায়গা বেছে নেওয়া হয়েছে, তা রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ ৷ জানা গিয়েছে, আগামিকাল অর্থাৎ শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী সভা করবেন আরামবাগে এবং শনিবার তিনি যাবেন কৃষ্ণনগরে। 2019 সালের লোকসভা ভোটের নিরীখে রাজ্যে বিজেপির অবস্থান বিশ্লেষণ করলে দেখা যাচ্ছে, রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল এবং উত্তরের একাধিক জেলাতেই ভালো ফল করেছিল বিজেপি ৷ সেই হিসেবে এই সফরের আলাদা গুরুত্ব রয়েছে।

দক্ষিণবঙ্গের তুলনায় 18 সাংসদের অর্ধেকেরও বেশি সাংসদ তাদের এসেছিল উত্তর এবং পশ্চিমের জেলাগুলি থেকেই ৷ স্বাভাবিকভাবেই রাজনৈতিক মহলের প্রাথমিক ধারনা, চলতি লোকসভা ভোটের আগে সলতে পাকানোর কাজটা সেই এলাকাগুলি থেকেই শুরু করতে পারতেন প্রধানমন্ত্রী ৷ অন্তত সন্দেশখালি ইস্যুর মধ্যে বারাসত বা বসিরহাটের মতো এলাকাও মোদির সভার জন্য বেছে নিতে পারত পদ্ম শিবির ৷ কিন্তু সে সব পথে হাঁটলেন না নরেন্দ্র মোদি ৷ আর তার জেরেই বাড়ছে জল্পনা ৷

মার্চের প্রথম দুটি দিন 1 ও 2 তারিক পর্যায়ক্রমে হুগলির আরামবাগ আর তারপরই কৃষ্ণনগরে সভা করবেন প্রধানমন্ত্রীর ৷ আর 8 মার্চ নারী দিবসের দিন বারাসতকে মোদির সভার জন্য বেছে নিয়েছে বিজেপি ৷ কিন্তু পয়লা মার্চ কালীপুর ময়দানে দুপুরে প্রধানমন্ত্রী যে সভা করতে চলেছেন, তার পিছনে বেশ কিছু কারণ উঠে আসছে ৷ এর আগে চলতি মাসের 12 তারিখে এই কালীপুরেই সভা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে জানা গিয়েছে, মোদির সভা আরও বড় পরিসর নিয়ে হবে। শেষ লোকসভা নির্বাচন অর্থাৎ 2019 সালে রাজ্যে বিজেপির সাংসদ সংখ্যে 18-তে দাঁড়ায় ৷ হুগলি থেকে জিতেছিলেন লকেট চট্টোপাধ্য়ায় ৷ অল্পের জন্য সেবার হাতছাড়া হয়েছিল আরামবাগ ৷ 2019 সালে অত্যন্ত কম মার্জিনে মাত্র 1142 ভোটে আরামবাগ থেকে জয়ী হয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী অপরূপা পোদ্দার।

ওই বছর 42টি লোকসভা আসনের মধ্যে একমাত্র আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রে সবথেকে কম মার্জিনে জেতেন অপরূপা। আর এই বিষয়টিকেই কাজে লাগিয়ে ফায়দা পেতে চাইছে বিজেপি ! আমাবাগ লোকসভা কেন্দ্রে এই পাঁচ বছরে পদ্ম শিবির নিজের অনেকটাই স্ট্রং হোল্ড বাড়াতে পেরেছে বলেই মনে করছে বিজেপি। তবে কিছু জায়গায় দলীয় কোন্দলের ঘটনাও ঘটেছে। তাই বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে মনোবল বাড়াতে এবং আরামবাগকে আসন্ন নির্বাচনে জিতিয়ে নিয়ে আসাটা তেমন কষ্ট সাধ্য নাও হতে পারে বলে মনে করছে দল। তাই বিজেপির সবচেয়ে বড় ট্রাম্প কার্ড নরেন্দ্র মোদিকে দিয়েই আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের প্রচার শুরু করতে চাইছে দল।

প্রসঙ্গত, আরামবাগ লোকসভার অন্তর্গত সাতটি বিধাসভার মধ্যে ছয়টি হুগলি এবং একটি বিধানসভা কেন্দ্র পশ্চিম মেদিনীপুর। অন্যদিকে, আরামবাগে একটি পঞ্চায়েত সমিতি (খানাকুল 2 নম্বর পঞ্চায়েত সমিতি ) বিজেপির দখলে। আর মোট 9টি গ্রাম পঞ্চায়েত বিজেপির দখলে রয়েছে। হুগলি জেলা পরিষদে বিরোধী হিসাবে দু'জন সদস্য বিজেপির রয়েছেন। তার মধ্যে এখন খানাকুলের বিধায়ক। 2014 সাল থেকে 2019 আবারও ওই আসনে তৃণমূল কংগ্রেস জয়ী হয়। তবে শেষ লোকসভা নির্বাচনে অল্পের জন্য অপরূপা পোদ্দারের জয় পদ্ম শিবিরের মনবল অবশ্যই অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছে। তাই সেই বিশ্বাসের উপরে ভর করে ওই কেন্দ্রের আরও অক্সিজেন সঞ্চার করতেই মোদি ম্যাজিক করতে চাইছে দল।

অন্যদিকে, আগামী 2 মার্চ কৃষ্ণনগরের গভর্নমেন্ট কলেজের মাঠে প্রধানমন্ত্রীর সভা। আরামবাগের মতো নদিয়ার অন্যতম সদর শহর কৃষ্ণনগরেও একাধিক ফ্যাক্টর বেছে নিচ্ছে বিজেপি শিবির ৷ তার মধ্যে দুটি অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য হিসাবে তাদের ব্যাখ্য়া, মতুয়া ভোট ব্যাঙ্ক এবং সীমান্তবর্তি এলাকা-সহ বিস্তির্ণ গ্রামীন এলাকা ৷ পরিসংখ্য়ান বলছে, করিমপুর, তেহট্ট, পলাশিপাড়া বিস্তির্ণ এলাকা জুড়ে মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষের বাস ৷ 2020 সালে কৃষ্ণনগরে সভা করে গিয়েছেন অমিত শাহ ৷ বিজেপির দাবি, শাহের সেই সভায় মানুষের উপস্থিতি এবং আরও নির্দিষ্ট করে বললে মতুয়াদের উপস্থিতি দেখে উচ্ছ্বসিত হয়েছিল খোদ বিজেপির চানক্য ৷

নদিয়া জেলার বড় অংশের বাসিন্দা মতুয়া সম্প্রদায়ের। আর 2019 এবং 21 পর পর দুই ভোটেই দেখা গিয়েছে, রাজ্যের মতুয়াদের বড় অংশের ভোট চলে গিয়েছিল বিজেপির দখলে। নদিয়ার যে অংশে রাস উৎসব হয় সেখানেই মতুয়া সম্প্রদায়ের বাস। অর্থাৎ শান্তিপুর, নবদ্বীপ এবং কৃষ্ণনগর ৷ শুধু তাই নয়, ভৌগলিক অবস্থার বিচারেও দেখা যাচ্ছে, তাহেরপুর, তেহট্ট, চাকদা, রানাঘাট, কৃষ্ণনগর-এর মতো নদিয়ার এলাকাগুলি বনগাঁ, গোপালনগর, অশোকনগর বা উত্তর 24 পরগনার একাধিক এলাকার সঙ্গে সংযুক্ত ৷ যেগুলিও 'মতুয়া গড়' বলেই পরিচিত ৷ গত পঞ্চায়েত ভোটেও দেখা গিয়েছে মতুয়াদের একটা বড় অংশের ভোট নিজেদের দখলে রাখতে পেরেছে বিজেপি ৷ 2019-এ রানাঘাট সংসদ আসনটিও জিতেছিল বিজেপি। লোকসভা ভোটের আগে গেরুয়া শিবিরের সেই মাটি কাটতে চাইছেন তৃণমূল নেত্রী। আর তাতেই জল ঢালতে বিজেপির প্রধান হাতিয়ার নরেন্দ্র মোদি ৷ সেক্ষেত্রে কৃষ্ণনগরের প্রধানমন্ত্রীর সভার জেরে এক ঢিলে দুই জেলার মতুয়াদের কাছেও খুব সহজেই বার্তা পৌঁছে দেওয়া যাবে বলেও মনে করছে বিজেপি ৷

অন্যদিকে, সংসদের গোপন তথ্য ফাঁস করে দেওয়া এবং অর্থের বিনিময় প্রশ্নের অভিযোগে সংসদের এথিক্স কমিটি বহিষ্কার করে মহুয়া মৈত্রকে ৷ এই বাস্তবতাকে হাতিয়ার করেও আশায় বুক বেঁধেছে পদ্ম শিবির। প্রসঙ্গত, এই এলাকার সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে তেহট্ট, পলাশীপাড়া, কালীগঞ্জ, নাকাশিপাড়া, কৃষ্ণনগর উত্তর এবং কৃষ্ণনগর দক্ষিণে 2009 সালের আগে তৃণমূলও এই লোকসভা কেন্দ্রে দাঁত ফোটাতে পারেনি। এরপর তাপস পাল এবং তারপর মৌহুয়া মৈত্রের হাত ধরে তৃণমূলের উত্থান এই কেন্দ্রে। আর সেই কেন্দ্রেই এবার মতুয়া তাস খেলে বাজিমাত করতে চাইছে বিজেপিও ৷

আরও পড়ুন

মা-বোনেদের স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদের জেরেই গ্রেফতার শাহজাহান, বলছে বিজেপি

পাখির চোখ লোকসভা ভোট, জনগর্জনের প্রস্তুতিতে পাঁচশো সভা তৃণমূলের

Last Updated : Feb 29, 2024, 10:54 PM IST

For All Latest Updates

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.