ব্যারাকপুর, 11 এপ্রিল: পাহাড়ের নিয়োগ দুর্নীতিতে যোগ রয়েছে রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ ভৌমিকের । বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার তাঁকে আইনি নোটিশ পাঠালেন ব্যারাকপুরের তৃণমূল প্রার্থী পার্থ ভৌমিক । নিজে নন, এই আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন তাঁর আইনজীবী মারফত ।
জানা গিয়েছে, এদিন ই-মেল মারফত আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর পূর্ব মেদিনীপুরের বাড়ির ঠিকানায় । নোটিশে পার্থ'র আইনজীবী অগ্নিশ বসু উল্লেখ করেছেন,'ভোটের প্রাক্কালে তাঁর মক্কেল রাজ্যের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিকের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী করেছেন তার কোনও ভিত্তি নেই । সম্পূর্ণ অসৎ উদ্দেশ্যে তাঁর মক্কেলকে কালিমালিপ্ত করতেই এই মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে । এর ফলে রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী পার্থ ভৌমিকের ভাবমূর্তিতে ধাক্কা লেগেছে ।'
এমনকি, তাতে শর্ত দেওয়া হয়েছে আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে এই আইনি নোটিশের কোনও উত্তর কিংবা ব্যাখা না মিললে ক্ষতিপূরণ চেয়ে মানহানির মামলা করা হবে । রাজ্যের বিরোধী দলনেতার অভিযোগের প্রেক্ষিতে পার্থ ভৌমিক যে আইনি নোটিশ পাঠাবেন শুভেন্দু অধিকারীকে, তার ইঙ্গিত আগেই মিলেছিল । বুধবারই নৈহাটির বিধায়ক তথা ব্যারাকপুরের তৃণমূল প্রার্থী পার্থ ভৌমিক শুভেন্দু'র অভিযোগ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছিলেন, পাহাড়ের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে তাঁর কোনও যোগ নেই । শুভেন্দু অধিকারীই পরিকল্পনা করে এর সঙ্গে তাঁর এবং অরূপ বিশ্বাসের নাম জড়িয়েছেন । এসব অভিযোগ করে তাঁর স্বচ্ছ ভাবমূর্তিতে কালি লাগানোর চেষ্টা চলছে । অসৎ উদ্দেশ্যেই এসব অভিযোগ করেছেন শুভেন্দু । তাই, তাঁর বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ পাঠাবেন তিনি । আইনি নোটিশের কোনও উত্তর না মিললে পরবর্তীতে আদালতে গিয়ে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলাও করবেন । সেই হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক । হুঁশিয়ারি দেওয়ার একদিন পরই আইনজীবী মারফত শুভেন্দুকে আইনি নোটিশ দিলেন ব্যারাকপুরের তৃণমূল প্রার্থী । এই আইনি নোটিশের প্রেক্ষিতে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কী পদক্ষেপ নেন, সেটাই এখন দেখার বিষয় ।
প্রসঙ্গত, পাহাড়ের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে সম্প্রতি সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু । সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিতে গিয়ে তিনি উল্লেখ করেন এক রহস্যময় চিঠির কথা । যে চিঠিতে পাহাড়ের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে শাসকদলের প্রভাবশালী একাধিক নেতা-মন্ত্রীর নাম রয়েছে বলে সূত্রের খবর । সিবিআইকে 15 দিনের মধ্যে সেই রহস্যময় চিঠির সত্যতা অনুসন্ধান করে রিপোর্ট জমা দিতে হবে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে । সেই সঙ্গে পাহাড়ের নিয়োগে যে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে তা জিটিএকে নথি সমেত পেশ করতে হবে আদালতে । এই নির্দেশের পরই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সরকারি রাজ্যের দুই মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও পার্থ ভৌমিকের নাম উল্লেখ করে পাহাড়ে নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে তাঁদের যোগ রয়েছে বলে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন । আর তাতেই ক্ষুদ্ধ হন রাজ্যের সেচমন্ত্রী ।
আরও পড়ুন :