জগদ্দল, 12 মে: ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে দাঁড়িয়ে বাংলার চট ও চটকল শিল্প নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করতে শোনা গেল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ৷ তাঁর কথায় চট শিল্পে কেন্দ্র কৃষকদের নূন্যতম সহায়কমূল্য বাড়িয়ে দিয়েছে ৷ তারপরেও বাংলার তৃণমূল সরকার নিজেদের স্বার্থে চট শিল্প ও কৃষকদের ভবিষ্য়ৎকে নষ্ট করেছেন বলে অভিযোগ করলেন মোদি ৷ তাঁর কথায়, ব্যারাকপুরের চটকল শিল্পকে তৃণমূল তাদের মিথ্যের জালে নষ্ট করে দিয়েছে ৷
ব্যারাকপুর লোকসভার একটা বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে রয়েছে চট শিল্প ৷ আর এই চট শিল্পকে কেন্দ্র করেই উত্থান হয়েছে অর্জুন সিংয়ে ৷ ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের চটকলের উন্নয়ন নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে মতোবিরোধের কারণেই গত বিধানসভা নির্বাচনের পর বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন অর্জুন ৷ পরে অবশ্য তৃণমূলের তরফে ব্যারাকপুরের টিকিট না পাওয়ায় তিনি বিজেপিতে ফিরে গিয়েছিলেন ৷ সেখানে গিয়ে আবারও বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন ব্যারাকপুরের 'বাহুবলি' ৷ কিন্তু, ব্যারাকপুরের চট শিল্পের দুরাবস্থা আজও বড় ইস্যু ৷ যা স্বয়ং অর্জুন সিং কেন্দ্রের কাছে বহুবার তুলে ধরেছেন ৷
তাই নির্বাচনী প্রচারে এসে মোদিকে চটশিল্প নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করতে শোনা গেল ৷ তিনি বলেন, "আমাদের ব্যারাকপুর চট শিল্পের হাব ৷ মা গঙ্গার আশির্বাদে তুলো, পেপার ও ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্ডাস্ট্রি ফুলে ফেঁপে উঠেছিল এখানে ৷ কিন্তু, আজ চট শিল্পের বেহাল অবস্থা ৷ এই পরিস্থিতি তখন, যখন চটের জন্য নূন্যতম সমর্থন মূল্য আরও বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার ৷ চটের ব্যাগে সবজি, শস্য চিনি-সহ নানান দ্রব্য প্যাক করার কথা কেন্দ্র বলছে ৷ সেখানে তৃণমূল নিজেদের স্বার্থে মিথ্যেকে আশ্রয় করে চট শিল্পকে মিথ্যে নষ্ট করছে ৷ তৃণমূলের দুর্নীতির শিকার হচ্ছে ব্যারাকপুরের চট শিল্প ৷"
তৃণমূলের দুর্নীতির প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে ক্যাগের একটি রিপোর্টের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী ৷ তিনি বলেন, "কিছু সময় আগে তৃণমূলের সরকারকে নিয়ে ক্যাগের রিপোর্ট এসেছে ৷ সেখানে বলা হয়েছে, 2 লক্ষ 30 হাজার কোটি টাকার কোনও হিসেব দেয়নি পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল সককার ৷ এই টাকা কীভাবে খরচ হয়েছে ? কার পকেটে গেছে ? এর কোনও হিসেব নেই ৷"
সংরক্ষণ ইস্যুতেও এদিন সরব হন প্রধানমন্ত্রী ৷ ধর্মের ভিত্তিতে সংরক্ষণের অভিযোগে কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ 'ইন্ডিয়া' জোটকে একহাত নেন তিনি ৷ ভোট ব্যাংকের রাজনীতিতে আদিবাসী এবং দলিতদের সংরক্ষণ তিনি কেড়ে নিতে দেবেন না বলে চ্যালেঞ্জ করেছেন ৷ এই ইস্যুতে বিরোধীদের উদ্দেশ্য চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে মোদি জানান, বাংলার মানুষকে তিনি 5টি গ্যারান্টি দিচ্ছেন- "প্রথমত, মোদি যতক্ষণ আছে ধর্মের নামে সংরক্ষণ হবে না ৷ দ্বিতীয়ত, মোদি যতক্ষণ আছে এসসি, এসটি ও ওবিসিদের সংরক্ষণ কেউ কাড়তে পারবে না ৷ তৃতীয়ত, মোদি থাকতে কেউ বাংলার মানুষকে রামনবমী পালন করতে আটকাতে পারবে না ৷ চতুর্থ, সুপ্রিম কোর্টের রামমন্দির নিয়ে রায় কেউ বদলাতে পারবে না ৷ পঞ্চম ও সর্বশেষ হল, সিএএ বা সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বাতিল করতে দেবে না মোদি ৷"
আরও পড়ুন: