কোচবিহার, 29 জানুয়ারি: লোকসভা নির্বাচন আসতেই রাজ্যে আবার ফিরেছে সিএএ বা নাগরিকত্ব আইন নিয়ে রাজনীতির উত্তাপ । রাজ্যে বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা বলছেন, নির্বাচনের আগেই লাগু হবে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন । কেউ আবার সরাসরি সাত দিনের সময়সীমাও বেঁধে দিচ্ছেন । এসব নিয়েই সোমবার কোচবিহারের সভা থেকে সরব হলেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন, সিএএ নিয়ে বিজেপির প্রচার আসলে ভোটের রাজনীতি ।
এ দিন কোচবিহারের সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এনআরসি হবে না, এই আন্দোলন বাংলায় কে করেছিল ! রাজবংশীরা আপনাদের বলি আপনারা সবাই নাগরিক । ক্যা...ফ্যা এসব যারা বলছেন, তারা আসলে ভোটের রাজনীতি করছেন । আপনারা সবাই নাগরিক। আপনাদের সবাইকে নাগরিক হিসেবে আমরা স্বীকৃতি দিয়েছি । সমস্ত উদ্বাস্তু কলোনিকে দিয়েছি স্থায়ী ঠিকানা । আপনারা রেশন পান, আপনারা স্কুলে যান, আপনারা কৃষক বন্ধু পান । এসব নাগরিক না হলে থোরাই পেতেন !’’ তিনি এ দিন প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘আপনারা যদি নাগরিক না হতেন, আপনারা কি ভোট দিতে পারতেন !’’
এ দিন এই মঞ্চ থেকেই সীমান্ত রক্ষী বাহিনী অর্থাৎ বিএসএফের বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী । তাঁর অভিযোগ, ‘‘বিএসএফ সীমান্তে আলাদা আইডেন্টিটি কার্ড দিতে চাইছে । মনে রাখবেন বিএসএফ বর্ডার এলাকার ভিতরে ঢুকে, আলাদা করে আইডেন্টিটি কার্ড দিতে চাইছে । আমি আপনাদের বলব আপনারা কেউ এই কার্ড নেবেন না । বলবেন, আমাদের রেশন কার্ড আছে, আমাদের আধার কার্ড আছে, আমি তোমাদের দু'নম্বরী কার্ড নেব না ।’’
মমতার হুঁশিয়ারি, ‘‘ওই কার্ড যদি নেন আপনারা তাহলে এনআরসিতে পড়ে যাবেন । আপনাদের সব নিয়ে নেওয়া হবে ।’’ একই সঙ্গে এ দিন মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, মানুষ বিপদে পড়লে তিনি আছেন । বাঘের বাচ্চার মতো তিনি পাশে থাকবেন ।
প্রসঙ্গত, এবারই প্রথম নয় । এনআরসি ও নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে বারবারই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন যে মানুষকে ভুল বোঝানো হচ্ছে । যাঁরা ভোট দেন, দেশের প্রধানমন্ত্রী, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে নির্বাচিত করেন, যাঁদের আধার কার্ড-প্যান কার্ড আছে, যাঁরা সমস্ত নাগরিক পরিষেবা পান, তাঁদের আলাদা করে নাগরিকত্বের প্রয়োজন নেই । তাঁরা সকলেই নাগরিক ।
মুখ্যমন্ত্রী অতীতেও বলেছেন যে নাগরিকত্ব দেওয়ার নামে আদতে বিজেপি ভাগাভাগি করার চেষ্টা করছে ৷ আর সেই কারণেই কোনোভাবেই তিনি রাজ্যে এই নাগরিকত্ব আইন অর্থাৎ সিএএ লাগু হতে দেবেন না । এ দিন সরাসরি সিএএ লাগু হতে না দেওয়ার কথা না বললেও লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি নেতাদের মুখে উঠে আসা সিএএ প্রসঙ্গ আসলে ভোট রাজনীতি ছাড়া কিছু নয়, সেটাই তিনি বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন ।
আরও পড়ুন: