ETV Bharat / politics

লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে বাজিমাত, রুটি-রুজির তাসে ফের বাংলায় সবুজ-ঝড় - Lok Sabha Election Results 2024 - LOK SABHA ELECTION RESULTS 2024

TMC Victory in Bengal: লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে ফের বাংলায় বাজিমাত করল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস ৷ লোকসভা নির্বাচনে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার ছাড়াও তাদের জয়ের অন্যতম কাণ্ডারী 100 দিনের কাজ ও আবাস যোজনা নিয়ে ঘাস-ফুলের রণকৌশল ৷

ETV BHARAT
রুটি-রুজির তাসে ফের বাংলায় সবুজ-ঝড় (নিজস্ব চিত্র)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jun 4, 2024, 7:59 PM IST

কলকাতা, 4 জুন: 'দুর্নীতি' হাতিয়ারে শান দিয়ে রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে লোকসভা নির্বাচনের লড়াইয়ে নেমেছিল বিজেপি ৷ দুর্নীতি ইস্যুতেই আদালতের একের পর এক রায়ে সরকারের অস্বস্তি বাড়ায় 2024 সালেই বাংলা দখলের ট্রেলার দেখানোর স্বপ্ন দেখেছিলেন শুভেন্দু অধিকারীরা ৷ তবে সেই প্রচেষ্টাই ব্যুমেরাং হয়ে গেল ৷ আদালতের রায়ে যাঁরা চাকরিহারা, তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে এক ধাক্কায় অনেকগুলো ভোট কুড়িয়ে কাছিয়ে নিজেদের ঝুলিতে পুরে নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ শুধু তাই নয়, এবারের ভোটে তাঁদের জয়ের আরও দুই স্তম্ভ লক্ষ্মীর ভাণ্ডার এবং আবাস-যোজনা ও 100 দিনের কাজের টাকা নিয়ে 'কেন্দ্রীয় বঞ্চনা'৷

লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে কেল্লা-ফতে: গত বিধানসভা ভোটে কামাল করে দিয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প ৷ বাড়ির মা-বোনেদের প্রতি মাসে 500 টাকা করে হাতখরচ দিয়ে রাজ্যের মহিলা ভোটারদের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছিল 'মমতাময়ী' সরকার ৷ এর জন্য শুনতে হয়েছে নানা কটাক্ষ ৷ মমতার 'অনুদানের রাজনীতি'কে বারবার নিন্দা করলেও ভোটের মুখে মহিলা ভোটব্যাংকের কথা ভেবে মাসিক 3000 টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিতে দেখা গিয়েছে বিজেপিকে ৷ লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ধাঁচে তাঁরা বঙ্গবাসীকে 'অন্নপূর্ণার ভাণ্ডার'-এর স্বপ্ন দেখিয়েছে ৷ মমতার প্রকল্প ধার করেই 'লাডলি বহেনা' প্রকল্প ইতিমধ্যেই মধ্যপ্রদেশে সুফল দিয়েছে বিজেপিকে ৷ তবে বাংলার প্রতিটি মহিলাকে মাসে 3 হাজার টাকা দেওয়ার জন্য এত পরিমাণ টাকা রাজকোষের কোথা থেকে আসবে, তার হিসেব দিতে পারেনি গেরুয়া শিবির ৷

অপরদিকে, বিধানসভা ভোটের আগের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার হাতিয়ারকেই লোকসভার আগে আরও ধারালো করেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তিনি ভোটের আগে ঘোষণা করেন যে, রাজ্যের মহিলারা ভোটের পর থেকেই লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে মাসে আর 500 টাকা নয়, পাবেন 1000 টাকা করে ৷ আর তফশিলি জাতি ও উপজাতির মহিলারা হাজারের পরিবর্তে পাবেন মাসিক 1200 টাকা ৷ তাঁরাই আবার বৃদ্ধ বয়সে সরাসরি বার্ধক্যভাতার জন্য নির্বাচিত হবেন ৷ ভোটের আগে মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের এই তাস ট্রাম্প কার্ডের মতো কাজ করেছে ভোটবাক্সে ৷

হাতিয়ার 'কেন্দ্রীয় বঞ্চনা': প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও বঙ্গবাসীর ঘাস-ফুলে আস্থা রাখার আরও এক কারণ 100 দিনের কাজ ও আবাস যোজনার টাকা না-পাওয়া ৷ বাংলাকে শাস্তি দিতে বিভিন্ন বাংলার প্রকল্পের টাকা কেন্দ্রীয় সরকার ইচ্ছে করে আটকে রেখেছে বলে বারবার তোপ দেগেছে তৃণমূল কংগ্রেস ৷ এর জন্য আলাদা আলাদা করে তৈরি হয়েছে কর্মসূচি ৷ 'কেন্দ্রীয় বঞ্চনা'র অভিযোগ এনে বাংলার রাজভবন ও বিধানসভা থেকে শুরু করে দিল্লির মসনদ পর্যন্ত তৃণমূল কংগ্রেসের আন্দোলন বাংলার নিম্নবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত মানুষকে কাছে টানতে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে ৷

  • নির্বাচনের ফলাফল সংক্রান্ত আরও খবর জানুন

কর্মশ্রীতে রুটি-রুজির স্বপ্ন ফেরি: শুধু আন্দোলনই নয়, 100 দিনের কাজের ধাঁচে রাজ্য সরকারের 50 দিনের কাজের কর্মশ্রী প্রকল্প ঘোষণা রাজ্যের খেটে খাওয়া মানুষকে রুটি-রুজির স্বপ্ন দেখিয়েছে ৷ কেন্দ্রের মুখাপেক্ষী না-হয়ে জব কার্ডের মাধ্যমে বাংলার বেকার যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ তার পাশাপাশি 100 দিনের কাজের যে 3700 কোটি টাকা কেন্দ্র দেয়নি, প্রতিশ্রুতি মতো সেই টাকাও রাজ্য সরকার মিটিয়ে দেওয়া শুরু করেছে ৷ আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই উদ্যোগের প্রত্যক্ষ প্রতিফলন দেখা গিয়েছে ভোটবাক্সে ৷

আবাস-কার্ডে বাজিমাৎ: 100 দিনের কাজের পাশাপাশি কেন্দ্র আবাস যোজনার টাকাও রাজ্যকে দেয়নি বলে জানিয়ে ভোটের আগে গলা চড়িয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস ৷ কেন্দ্র তাদের বিরুদ্ধে আবাস যোজনায় কারচুপির অভিযোগ আনলেও তার শক্তপোক্ত প্রমাণ সামনে আসেনি ৷ তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোটের ঠিক আগেই ঘোষণা করে দেন যে, আর কেন্দ্রের অপেক্ষায় না-থেকে তিনি নিজেই বাংলার গরিব মানুষদের বাড়ি তৈরি করে দেবেন ৷ আর এই কাজ শুরু হয়ে যাবে ঠিক ভোটটা মিটলেই ৷

বারবার আলটিমেটামেও কাজ না-হওয়ায়, নতুন পোর্টাল চালু করে আবাসের টাকা দেওয়ার রণকৌশল সাজান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ প্রকল্পে নাম লেখানোর পরও দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবশেষে সমাপ্তি ঘটার আশায় বুক বাঁধেন বাংলার মানুষ ৷ সেই আশীর্বাদই গিয়ে পড়ে মা-মাটি-মানুষের দলের মাথায় ৷

চাকরিহারাদের ত্রাতা: দুর্নীতির প্রশ্নে আদালতের রায়ে সম্প্রতি চাকরি গিয়েছে হাজার হাজার মানুষের ৷ যোগ্য হোক বা অযোগ্য, কোনও মানুষের চাকরি চলে যাওয়ার বিপক্ষে জোরালো সওয়াল করতে দেখা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ৷ চাকরিহারাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বিচারপতিদের বিরুদ্ধেও মুখ খুলতে দেখা গিয়েছে তাঁকে ৷ ভোটের বাক্সে এই বিষয়টিরও ইতিবাচক প্রভাবর সুফল মমতার দিকে ঝুঁকেছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের ৷ তাঁদের মতে, ভোটের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই নিজেদের ত্রাতা হিসেবে মনে করে তাঁকেই খড়-কুটোর মতো আঁকড়ে ধরে হয়তো বাঁচতে চেয়েছেন চাকরিহারারা ৷

ফ্যাক্টর যখন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়: তার উপর একটা সময়ে চাকরিপ্রার্থীরা যাঁকে মসীহা হিসেবে দেখছিলেন, সেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের আচমকা পদত্যাগ করে বিজেপিতে যোগদানকেও বাংলার মানুষ ভালো চোখে দেখেননি বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের, যা সুবিধে করে দিয়েছে রাজ্যের শাসকদলকে ৷ এই একটা ঘটনাকে হাতিয়ার করেই বিচারব্যবস্থার বিরুদ্ধে রাজ্যের শাসকদলের অভিযোগকে সত্যি হিসেবে তুলে ধরতে কোনও কসুর বাকি রাখেনি তৃণমূল কংগ্রেস ৷

ব্রিগেডের সভা থেকে বাংলা-বিরোধীদের বিসর্জনের ডাক দিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস ৷ 42টি কেন্দ্রে প্রার্থী ঘোষণা করে সেদিন জনগণের গর্জনকেই হাতিয়ার করেছিলেন মমতা ও অভিষেক ৷ পার্থ চট্টোপাধ্যায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, অনুব্রত মণ্ডলবিহীন ভোটে মানুষের পাশে থাকার উপরই বেশি জোর দিয়েছিল রাজ্যের শাসকদল ৷ যার ফল তারা হাতে হাতে পেয়েছে ৷ দুর্নীতি নিয়ে বিজেপির তর্জন-গর্জন আস্থা জাগাতে পারেনি বঙ্গবাসীর মনে ৷

কলকাতা, 4 জুন: 'দুর্নীতি' হাতিয়ারে শান দিয়ে রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে লোকসভা নির্বাচনের লড়াইয়ে নেমেছিল বিজেপি ৷ দুর্নীতি ইস্যুতেই আদালতের একের পর এক রায়ে সরকারের অস্বস্তি বাড়ায় 2024 সালেই বাংলা দখলের ট্রেলার দেখানোর স্বপ্ন দেখেছিলেন শুভেন্দু অধিকারীরা ৷ তবে সেই প্রচেষ্টাই ব্যুমেরাং হয়ে গেল ৷ আদালতের রায়ে যাঁরা চাকরিহারা, তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে এক ধাক্কায় অনেকগুলো ভোট কুড়িয়ে কাছিয়ে নিজেদের ঝুলিতে পুরে নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ শুধু তাই নয়, এবারের ভোটে তাঁদের জয়ের আরও দুই স্তম্ভ লক্ষ্মীর ভাণ্ডার এবং আবাস-যোজনা ও 100 দিনের কাজের টাকা নিয়ে 'কেন্দ্রীয় বঞ্চনা'৷

লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে কেল্লা-ফতে: গত বিধানসভা ভোটে কামাল করে দিয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প ৷ বাড়ির মা-বোনেদের প্রতি মাসে 500 টাকা করে হাতখরচ দিয়ে রাজ্যের মহিলা ভোটারদের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছিল 'মমতাময়ী' সরকার ৷ এর জন্য শুনতে হয়েছে নানা কটাক্ষ ৷ মমতার 'অনুদানের রাজনীতি'কে বারবার নিন্দা করলেও ভোটের মুখে মহিলা ভোটব্যাংকের কথা ভেবে মাসিক 3000 টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিতে দেখা গিয়েছে বিজেপিকে ৷ লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ধাঁচে তাঁরা বঙ্গবাসীকে 'অন্নপূর্ণার ভাণ্ডার'-এর স্বপ্ন দেখিয়েছে ৷ মমতার প্রকল্প ধার করেই 'লাডলি বহেনা' প্রকল্প ইতিমধ্যেই মধ্যপ্রদেশে সুফল দিয়েছে বিজেপিকে ৷ তবে বাংলার প্রতিটি মহিলাকে মাসে 3 হাজার টাকা দেওয়ার জন্য এত পরিমাণ টাকা রাজকোষের কোথা থেকে আসবে, তার হিসেব দিতে পারেনি গেরুয়া শিবির ৷

অপরদিকে, বিধানসভা ভোটের আগের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার হাতিয়ারকেই লোকসভার আগে আরও ধারালো করেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তিনি ভোটের আগে ঘোষণা করেন যে, রাজ্যের মহিলারা ভোটের পর থেকেই লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে মাসে আর 500 টাকা নয়, পাবেন 1000 টাকা করে ৷ আর তফশিলি জাতি ও উপজাতির মহিলারা হাজারের পরিবর্তে পাবেন মাসিক 1200 টাকা ৷ তাঁরাই আবার বৃদ্ধ বয়সে সরাসরি বার্ধক্যভাতার জন্য নির্বাচিত হবেন ৷ ভোটের আগে মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের এই তাস ট্রাম্প কার্ডের মতো কাজ করেছে ভোটবাক্সে ৷

হাতিয়ার 'কেন্দ্রীয় বঞ্চনা': প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও বঙ্গবাসীর ঘাস-ফুলে আস্থা রাখার আরও এক কারণ 100 দিনের কাজ ও আবাস যোজনার টাকা না-পাওয়া ৷ বাংলাকে শাস্তি দিতে বিভিন্ন বাংলার প্রকল্পের টাকা কেন্দ্রীয় সরকার ইচ্ছে করে আটকে রেখেছে বলে বারবার তোপ দেগেছে তৃণমূল কংগ্রেস ৷ এর জন্য আলাদা আলাদা করে তৈরি হয়েছে কর্মসূচি ৷ 'কেন্দ্রীয় বঞ্চনা'র অভিযোগ এনে বাংলার রাজভবন ও বিধানসভা থেকে শুরু করে দিল্লির মসনদ পর্যন্ত তৃণমূল কংগ্রেসের আন্দোলন বাংলার নিম্নবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত মানুষকে কাছে টানতে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে ৷

  • নির্বাচনের ফলাফল সংক্রান্ত আরও খবর জানুন

কর্মশ্রীতে রুটি-রুজির স্বপ্ন ফেরি: শুধু আন্দোলনই নয়, 100 দিনের কাজের ধাঁচে রাজ্য সরকারের 50 দিনের কাজের কর্মশ্রী প্রকল্প ঘোষণা রাজ্যের খেটে খাওয়া মানুষকে রুটি-রুজির স্বপ্ন দেখিয়েছে ৷ কেন্দ্রের মুখাপেক্ষী না-হয়ে জব কার্ডের মাধ্যমে বাংলার বেকার যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ তার পাশাপাশি 100 দিনের কাজের যে 3700 কোটি টাকা কেন্দ্র দেয়নি, প্রতিশ্রুতি মতো সেই টাকাও রাজ্য সরকার মিটিয়ে দেওয়া শুরু করেছে ৷ আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই উদ্যোগের প্রত্যক্ষ প্রতিফলন দেখা গিয়েছে ভোটবাক্সে ৷

আবাস-কার্ডে বাজিমাৎ: 100 দিনের কাজের পাশাপাশি কেন্দ্র আবাস যোজনার টাকাও রাজ্যকে দেয়নি বলে জানিয়ে ভোটের আগে গলা চড়িয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস ৷ কেন্দ্র তাদের বিরুদ্ধে আবাস যোজনায় কারচুপির অভিযোগ আনলেও তার শক্তপোক্ত প্রমাণ সামনে আসেনি ৷ তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোটের ঠিক আগেই ঘোষণা করে দেন যে, আর কেন্দ্রের অপেক্ষায় না-থেকে তিনি নিজেই বাংলার গরিব মানুষদের বাড়ি তৈরি করে দেবেন ৷ আর এই কাজ শুরু হয়ে যাবে ঠিক ভোটটা মিটলেই ৷

বারবার আলটিমেটামেও কাজ না-হওয়ায়, নতুন পোর্টাল চালু করে আবাসের টাকা দেওয়ার রণকৌশল সাজান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ প্রকল্পে নাম লেখানোর পরও দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবশেষে সমাপ্তি ঘটার আশায় বুক বাঁধেন বাংলার মানুষ ৷ সেই আশীর্বাদই গিয়ে পড়ে মা-মাটি-মানুষের দলের মাথায় ৷

চাকরিহারাদের ত্রাতা: দুর্নীতির প্রশ্নে আদালতের রায়ে সম্প্রতি চাকরি গিয়েছে হাজার হাজার মানুষের ৷ যোগ্য হোক বা অযোগ্য, কোনও মানুষের চাকরি চলে যাওয়ার বিপক্ষে জোরালো সওয়াল করতে দেখা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ৷ চাকরিহারাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বিচারপতিদের বিরুদ্ধেও মুখ খুলতে দেখা গিয়েছে তাঁকে ৷ ভোটের বাক্সে এই বিষয়টিরও ইতিবাচক প্রভাবর সুফল মমতার দিকে ঝুঁকেছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের ৷ তাঁদের মতে, ভোটের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই নিজেদের ত্রাতা হিসেবে মনে করে তাঁকেই খড়-কুটোর মতো আঁকড়ে ধরে হয়তো বাঁচতে চেয়েছেন চাকরিহারারা ৷

ফ্যাক্টর যখন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়: তার উপর একটা সময়ে চাকরিপ্রার্থীরা যাঁকে মসীহা হিসেবে দেখছিলেন, সেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের আচমকা পদত্যাগ করে বিজেপিতে যোগদানকেও বাংলার মানুষ ভালো চোখে দেখেননি বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের, যা সুবিধে করে দিয়েছে রাজ্যের শাসকদলকে ৷ এই একটা ঘটনাকে হাতিয়ার করেই বিচারব্যবস্থার বিরুদ্ধে রাজ্যের শাসকদলের অভিযোগকে সত্যি হিসেবে তুলে ধরতে কোনও কসুর বাকি রাখেনি তৃণমূল কংগ্রেস ৷

ব্রিগেডের সভা থেকে বাংলা-বিরোধীদের বিসর্জনের ডাক দিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস ৷ 42টি কেন্দ্রে প্রার্থী ঘোষণা করে সেদিন জনগণের গর্জনকেই হাতিয়ার করেছিলেন মমতা ও অভিষেক ৷ পার্থ চট্টোপাধ্যায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, অনুব্রত মণ্ডলবিহীন ভোটে মানুষের পাশে থাকার উপরই বেশি জোর দিয়েছিল রাজ্যের শাসকদল ৷ যার ফল তারা হাতে হাতে পেয়েছে ৷ দুর্নীতি নিয়ে বিজেপির তর্জন-গর্জন আস্থা জাগাতে পারেনি বঙ্গবাসীর মনে ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.