কলকাতা, 23 জানুয়ারি: এক বছরের বেশি সময় ধরে জেলবন্দি বীরভূমে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল । তবু এই জেলবন্দি নেতার উপরই আস্থা অটুট রয়েছে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের । তাই কেষ্ট মণ্ডলের কৌশলেই বীরভূমে ভোট চান তিনি ।
লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জেলা বীরভূম নিয়ে মঙ্গলবার কালীঘাটের বাড়িতে বৈঠকে বসেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । সেখানেই অনুব্রত মণ্ডলের উপর পূর্ণ আস্থা জানালেন তিনি । এ দিন বৈঠকে তৃণমূল নেত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, শুধু কেষ্ট মণ্ডলের পদ্ধতি অবলম্বন করলে হবে না, বাদ দেওয়া যাবে না কেষ্টর কোনও অনুগামীকেই । এ দিন বৈঠকে অনুব্রত প্রসঙ্গ উঠতেই মমতা বলেন, ‘‘অনুব্রত মণ্ডলকে ভুলে যাওয়া যাবে না । ও সংগঠন দেখত । বিনা কারণে ওকে আটকে রেখেছে । দীর্ঘদিন আটকে রাখতে পারবে না । ও ফিরে এলে ওর জায়গা ফেরত পাবে ।’’
এখানেই শেষ নয়, অতীতে অনুব্রত মণ্ডলের অনুপস্থিতিতে 9 জনের কমিটি গড়ে জেলা-শাসনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল । সেই সিদ্ধান্ত কিছুটা ফের বদল করে পাঁচজনের কোর কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে । পাঁচজনের এই কোর কমিটিতে রয়েছেন চন্দ্রনাথ সিনহা, আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, বিকাশ রায়চৌধুরী, অভিজিৎ সিনহা (রানা) ও সুদীপ্ত ঘোষ । বাস্তবে এঁরা সকলেই অনুব্রত অনুগামী । এ দিন এই কমিটির বাইরে রাখা হয়েছে ফায়জুল হক ওরফে কাজল শেখকে । এই মুহূর্তে তিনি বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি । তাঁকে সেই দায়িত্বই ঠিকমতো পালন করার কথা বলা হয়েছে ।
একই সঙ্গে বীরভূমের নেতাদের ঐক্যবদ্ধ ভাবে জেলার দু’টি আসন জেতার লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছে তৃণমূল । এক্ষেত্রে কোর কমিটির দায়িত্বে থাকা পাঁচ সদস্য এবং কাজল শেখকে বিধানসভা ধরে ধরে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে । এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি চার বিধানসভার দায়িত্ব পেয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা । তিনি দেখবেন বোলপুর, ময়ূরেশ্বর নলহাটি ও মুরারই । বিধায়ক অভিজিত্ সিনহাকে লাভপুর ও সাঁইথিয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে । বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের দায়িত্বে থাকবে রামপুরহাট ও হাঁসন বিধানসভা কেন্দ্র । কাজল শেখের দায়িত্বে থাকবে নানুর ও কেতুগ্রাম (পূর্ব বর্ধমান) । বিকাশ রায়চৌধুরীকে সিউড়ির পাশাপাশি দুবরাজপুরেরও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে । আর সুদীপ্ত ঘোষ দেখবেন দুবরাজপুর ।
তবে বৈঠক থেকে স্পষ্ট যে আসন্ন লোকসভা নির্বাচন অনুব্রত মডেলে ভরসা রেখে জিততে চায় শাসক দল । তাই অনুব্রতর অনুগামীদের উপরে আস্থা রাখা হয়েছে আর অনুব্রত বিরোধী বলে পরিচিত কাজল শেখের দায়িত্ব কমানো হয়েছে বলে খবর ৷
আরও পড়ুন: