মালদা, 13 মার্চ: দুঁদে রাজনীতিবিদ খগেন মুর্মু চার দশকেরও বেশি সময় ধরে রাজনীতি করছেন ৷ এবারের লোকসভা নির্বাচনেও তিনিই মালদা উত্তর লোকসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপি প্রার্থী ৷ পঞ্চায়েত নির্বাচনে আদিবাসী নেতার ভোট ময়দানে প্রবেশ ৷ 2001 সাল থেকে বাম দলের হয়ে বিধানসভা নির্বাচনে লড়ছেন ৷ একটানা চার দফায় হবিবপুরের বিধায়ক ছিলেন ৷ তবে 2019 সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে বাম ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন ৷ উত্তর মালদা কেন্দ্র থেকে লোকসভা ভোটে দাঁড়িয়েই সাংসদ হন বিজেপির খগেন মুর্মু ৷ মালদার রাজনৈতিক মহলে প্রবাদ, খগেন মুর্মু ভোটটা হাতের তালুর মতো চেনেন ৷ তিনি ভোটে হারেন না ৷
64 বছর বয়সি এই রাজনীতিবিদ চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনেও উত্তর মালদা কেন্দ্রেই প্রার্থী হয়েছেন ৷ এদিকে তাঁর বিরুদ্ধে তৃণমূলের প্রার্থী প্রাক্তন আইপিএস প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ ভোট-যুদ্ধে এবারই তাঁর হাতেখড়ি ৷ এদিকে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে প্রচারে নেমে পড়েছেন সাংসদ তথা প্রার্থী খগেন মুর্মু ৷ বিজেপি সাংসদ হলেও খগেন মুর্মু এখনও বামপন্থী তকমাটা হারাননি ৷ প্রচারপর্বে তার ফলও যেন কিছুটা দেখা যাচ্ছে ৷
মঙ্গলবার ভোট প্রচারে হরিশ্চন্দ্রপুর 2 নম্বর ব্লকের ভালুকা গ্রামপঞ্চায়েতের জগন্নাথপুরে পৌঁছন উত্তর মালদার বিজেপি সাংসদ ৷ সাংসদ তহবিলের প্রায় চার লক্ষ টাকায় তৈরি ওই গ্রামের হাই মাদ্রাসার মেইন গেটের উদ্বোধন করেন ৷ এই উদ্বোধন দিয়েই শুরু হয় নির্বাচনী প্রচার ৷ শুরুতেই হাসেন আলি নামে স্থানীয় এক প্রৌঢ়কে প্রণাম করেন ৷ প্রৌঢ় বলে ওঠেন, "তিনি আজ আমায় যে সম্মান দিয়েছেন, তাতে আমি জাতিভেদের কোনও বিষয় দেখতে পাইনি ৷ খুব ভালো লাগল ৷ আমরা এমন সাংসদকেই চাই ৷" শুধু হাসেন আলিই নন, বিজেপি প্রার্থীর ব্যবহারে মুগ্ধ এলাকার সংখ্যালঘুরা ৷
এমনই একজন আশরাফুল আলম বলেন, "আজ সাংসদ আমাদের হাই মাদ্রাসার মেইন গেট উদ্বোধনে এসেছিলেন ৷ এই এক সাংসদ, যিনি ছোট কাজেও সাড়া দেন ৷ ডাকলেই তাঁকে পাওয়া যায় ৷" তবে খগেন মুর্মুর বাম পরিচয়ের কথা এখনও ভোলেননি মহম্মদ ইলিয়াস ৷ তাঁর কথায়, "উনি বামফ্রন্টের একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন ৷ তাঁর মতো কিছু লোক ছিল বলেই বামফ্রন্ট 34 বছর রাজত্ব করেছে ৷ সাধারণত সংখ্যালঘুরা বিজেপিকে ভোট দেয় না ৷ কিন্তু তাঁকে অনেকেই ভোট দেবেন ৷" এদিকে রাজ্যের বিরুদ্ধে খগেন মুর্মুর ক্ষোভ, "গঙ্গা ভাঙন রোধের জন্য একাধিকবার রাজ্যকে আবেদন জানিয়েছি, কেন্দ্রের কাছে অর্থ বরাদ্দের আবেদন করা হোক ৷ কিন্তু রাজ্য সরকারের ঘুম ভাঙেনি ৷ তারা কেন্দ্রের কাছে কোনও আবেদন জানায়নি ৷ অথচ নিয়ম এটাই ৷"
আরও পড়ুন: