ETV Bharat / politics

বহরমপুরে চূর্ণ অধীর-গড়, মালদা দক্ষিণে গনি-মিথে ভর করেই মসৃণ জয় ইশার ! - Lok Sabha Election Results 2024

Lok Sabha Election Results 2024: রাজ্যজুড়ে সবুজ সুনামির মধ্যেও মালদা দক্ষিণে অটুট গণির গড় ৷ এবারও সেখানে জিতেছে কংগ্রেস ৷ কিন্তু উলটো চিত্র বহরমপুরে ৷ সেখানে পাঠানি-ছক্কা কুপোকাত ‘রবিনহুড’ অধীররঞ্জন চৌধুরী ৷ পাশাপাশি দুই জেলা, যেখানে এক সময় কংগ্রেস শক্তিশালী ছিল, সেখানে এবারে ভোটে দুই ছবি কেন উঠে এল ?

Lok Sabha Election Results 2024
ইশা খান চৌধুরী ও অধীররঞ্জন চৌধুরী (ইটিভি ভারত)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jun 6, 2024, 3:25 PM IST

মালদা, 5 জুন: মধ্যে দিয়ে বইছে গঙ্গা ৷ পুণ্যতোয়ায় ভাঙন চলছে প্রতি বছর ৷ আয়তন কমছে দু’পাড়ের মুর্শিদাবাদ-মালদা জেলায় ৷ ভাঙনের তীব্রতা কি ওপারের রাজনীতিকেও প্রভাবিত করেছে ? হয়তো তাই অধীরগড়ে ভূপতিত কংগ্রেস ৷ আড়াই দশক পর সেখানে অর্ধনমিত হাতের পতাকা ৷ অল্পস্বল্প নয়, 85 হাজার 22 ভোটে বিধ্বস্ত বহরমপুরের ‘রবিনহুড’ ৷ কিন্তু গনি গড়ে এবারও সসম্মানে উত্তীর্ণ প্রয়াত নেতার উত্তরসূরী ৷ বিপুল ভোটে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী, বিজেপির শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরীকে শুধু পরাজিত করাই নয়, রাজ্যের শাসকদলকে এই কেন্দ্রে তৃতীয় স্থানে ঠেলে দিয়েছেন ইশা খান চৌধুরী ৷ আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই ফল ঘাসফুলের কাছে যে বেশ চিন্তার, তা বলার অপেক্ষা রাখে না ৷

এটা ঠিক, যে সময় কোতওয়ালির খান চৌধুরী পরিবারের একের পর এক সদস্য হাত ছেড়ে ঘাসফুল ধরেছিলেন, তখনও পারিবারিক পুরনো দলের প্রতি আনুগত্য রেখে গিয়েছেন বাবা আবু হাসেম খান চৌধুরী (ডালু) ও ছেলে ইশা খান চৌধুরী ৷ গনি খানের বাসভবনে এই ফাটলটা প্রথম তৈরি করেন প্রয়াত নেতার ভ্রাতুষ্পুত্রী শেহনাজ কাদেরি ৷ এরপর আবু নাসের খান চৌধুরী এবং সব শেষে মৌসম নুর তৃণমূলে নাম লেখান ৷ তাঁরা তিনজন তৃণমূলনেত্রীর কাছ থেকে প্রতিদানও পেয়েছেন ৷ মৌসম এখনও রাজ্যসভার সাংসদ ৷ একই বাড়িতে বসবাসকারী সদস্যরা দুই বিরোধী দলের নেতা-নেত্রী ৷ তার প্রভাব পড়েছে পারিবারিক বন্ধনেও ৷ কোতওয়ালি ভবন এখন তিন ভাগে বিভক্ত ৷ এত কিছুর পরেও কংগ্রেস ছাড়েননি ডালু-ইশা ৷

একুশের বিধানসভা নির্বাচনে প্রথম পরাজয়ের স্বাদ পেয়েছিলেন ইশা ৷ হেরেছিলেন সুজাপুর কেন্দ্রে ৷ সেই নির্বাচনে সেখানে আরেক গনিকে প্রার্থী করেছিলেন মমতা ৷ গনির নামেই ভোট হয়েছিল ৷ রেকর্ড ভোটে জেতেন আবদুল গনি ৷ কলকাতা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি তিনি ৷ সঙ্গে ওয়াকফ কমিশনের চেয়ারপার্সন ৷ মমতার ঘনিষ্ঠও ৷ সুজাপুর ভেবেছিল, এলাকায় উন্নয়নের জোয়ার বয়ে যাবে ৷ কিন্তু ভোটের পর সেই গনিকে আর এলাকায় দেখা যায়নি ৷ এবারের ভোট প্রচারে এসে এই নিয়ে দুঃখপ্রকাশ করতে হয়েছে স্বয়ং মমতাকেও ৷

মানুষের সেই ক্ষোভকে অস্ত্র করেই বছর দুয়েক আগে থেকে ময়দানে নেমে পড়েছিলেন ইশা ৷ বয়সের ভার আর রোগে জর্জরিত সাংসদ বাবা সেভাবে এলাকায় সময় দিতে পারতেন না ৷ তাই বাবার হয়ে তিনিই চষে বেড়াতেন সাতটি বিধানসভা কেন্দ্র৷ সমাজের উঁচুতলা থেকে একেবারে নিচুতলা, মানুষের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ বাড়াতে শুরু করেন তিনি ৷ এনআরসি আর সিএএ নিয়ে মানুষের ভয় কাটানোর চেষ্টা করতে থাকেন ৷ তার ফলও মিলতে শুরু করে ৷ তেইশের পঞ্চায়েত ভোটেই আভাস পাওয়া গিয়েছিল যে তৃণমূলে চলে যাওয়া সংখ্যালঘু ভোট কংগ্রেসে ফিরতে শুরু করেছে ৷ এটাই অক্সিজেন জোগায় ডালু-ইশাকে ৷ এবারও এই কেন্দ্রে প্রার্থী হওয়ার কথা ছিল ডালু মিয়াঁর ৷ কিন্তু অসুস্থতার জন্য তাঁকে দফায় দফায় হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় ৷ এমনকি ঠিকমতো হাঁটাচলাও করতে পারছিলেন না ৷ তিনি এআইসিসিকে জানান, তাঁর জায়গায় এবার ইশাকে দক্ষিণ মালদা কেন্দ্রে প্রার্থী করা হোক ৷ সেই আবেদন মেনে নেয় এআইসিসি ৷ ফল হাতেগরমে ৷ গোটা রাজ্যে কংগ্রেসের বাতি জ্বালিয়ে রেখেছেন সেই ইশাই ৷

ভোটের হিসাব বলছে, মালদা দক্ষিণের মধ্যে থাকা সংখ্যালঘু অধ্যুষিত চারটি বিধানসভা কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বীদের উড়িয়ে দিয়েছেন ইশা ৷ দু’টি কেন্দ্রে তিনি দ্বিতীয় স্থানে৷ একমাত্র ইংরেজবাজারে তিনি তৃতীয় স্থানে আছেন ৷ অন্যদিকে শুধুমাত্র ইংরেজবাজার আর সুজাপুর কেন্দ্রে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে তৃণমূল ৷ বাকি পাঁচটিতে তৃতীয় স্থানে ৷ ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই ফল নিশ্চিতভাবেই চিন্তায় রাখবে রাজ্যের শাসক শিবিরকে ৷ তবে এই সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ইংরেজবাজারে নিজেদের জয় অক্ষুণ্ণ রেখেছে বিজেপি ৷ পদ্ম প্রার্থী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী এই কেন্দ্রের বিধায়কও ৷

মৃত্যুর 18 বছর পরেও গনি মিথ যে মালদা জেলার ভোটে যথেষ্ট সক্রিয়, এবারও তার প্রমাণ মিলেছে মালদা দক্ষিণ কেন্দ্রে ৷ তৃণমূল কিংবা বিজেপি যাই বলুক না কেন, জেলার রাজনৈতিক মহল নিশ্চিত, গনি মিথেই এখানে ইশার জয় এত মসৃণ ৷ মুখে স্বীকার না করলেও কবরে শায়িত মানুষটিকে এখনও অবশ্যই ভয় পায় অন্য রাজনৈতিক দলগুলিও ৷ তাই ভোট প্রচারে এসে এখনও গনি স্মরণ করতে হয় মমতা-মোদিকে ৷

আর এখানেই বোধহয় গনি খান আর অধীর চৌধুরীর রাজনীতির ফারাক ৷ সেই কারণেই পরপর পাঁচবার জেতা আসন বহরমপুর হাতছাড়া হয় নবাগত ইউসুফ পাঠানের জন্য ৷ মালদায় যেমন সংখ্যালঘু অনেকটাই নিজেদের দিকে টানতে পেরেছে কংগ্রেস ৷ বহরমপুরে সেটা সম্ভব হয়নি ৷ বরং উল্টোটাই হয়েছে ৷ তার সঙ্গে অধীর চৌধুরীকে ভোট খোয়াতে হয়েছে, এমন দু’টি বিধানসভা আসনে, যেখান থেকে বরাবরই তিনি সবচেয়ে বেশি লিড পেতেন ৷

ওই দু’টি কেন্দ্র হল কান্দি ও বহরমপুর ৷ 2019 সালে ওই দুই কেন্দ্র থেকে প্রায় 90 হাজার ভোটের লিড ছিল অধীরের ৷ এবার সেটা 10-12 হাজারে নেমেছে ৷ এটাই অধীরের পরাজয়ের অন্যতম কারণ ৷ এই দুই কেন্দ্রের সংখ্যালঘু তৃণমূলের দিকে গিয়েছে ৷ পাশাপাশি সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটের একটা বড় অংশ গিয়েছে বিজেপির দিকে ৷ এর মূল কারণ, বিজেপি প্রার্থী ড. নির্মলকুমার সাহার জনপ্রিয়তা ৷ এলাকায় তিনি গরিবের ডাক্তার বলে পরিচিত ৷ সেই ইমেজই তাঁকে এই দুই বিধানসভা থেকে ভোট টানতে সাহায্য করেছে ৷ যা লাভজনক হয়েছে তৃণমূলের জন্য ৷ আর বহরমপুরে অধীরের দাপট শেষ করতে সুবিধা হয়েছে শাসক দলের ৷

মালদা, 5 জুন: মধ্যে দিয়ে বইছে গঙ্গা ৷ পুণ্যতোয়ায় ভাঙন চলছে প্রতি বছর ৷ আয়তন কমছে দু’পাড়ের মুর্শিদাবাদ-মালদা জেলায় ৷ ভাঙনের তীব্রতা কি ওপারের রাজনীতিকেও প্রভাবিত করেছে ? হয়তো তাই অধীরগড়ে ভূপতিত কংগ্রেস ৷ আড়াই দশক পর সেখানে অর্ধনমিত হাতের পতাকা ৷ অল্পস্বল্প নয়, 85 হাজার 22 ভোটে বিধ্বস্ত বহরমপুরের ‘রবিনহুড’ ৷ কিন্তু গনি গড়ে এবারও সসম্মানে উত্তীর্ণ প্রয়াত নেতার উত্তরসূরী ৷ বিপুল ভোটে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী, বিজেপির শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরীকে শুধু পরাজিত করাই নয়, রাজ্যের শাসকদলকে এই কেন্দ্রে তৃতীয় স্থানে ঠেলে দিয়েছেন ইশা খান চৌধুরী ৷ আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই ফল ঘাসফুলের কাছে যে বেশ চিন্তার, তা বলার অপেক্ষা রাখে না ৷

এটা ঠিক, যে সময় কোতওয়ালির খান চৌধুরী পরিবারের একের পর এক সদস্য হাত ছেড়ে ঘাসফুল ধরেছিলেন, তখনও পারিবারিক পুরনো দলের প্রতি আনুগত্য রেখে গিয়েছেন বাবা আবু হাসেম খান চৌধুরী (ডালু) ও ছেলে ইশা খান চৌধুরী ৷ গনি খানের বাসভবনে এই ফাটলটা প্রথম তৈরি করেন প্রয়াত নেতার ভ্রাতুষ্পুত্রী শেহনাজ কাদেরি ৷ এরপর আবু নাসের খান চৌধুরী এবং সব শেষে মৌসম নুর তৃণমূলে নাম লেখান ৷ তাঁরা তিনজন তৃণমূলনেত্রীর কাছ থেকে প্রতিদানও পেয়েছেন ৷ মৌসম এখনও রাজ্যসভার সাংসদ ৷ একই বাড়িতে বসবাসকারী সদস্যরা দুই বিরোধী দলের নেতা-নেত্রী ৷ তার প্রভাব পড়েছে পারিবারিক বন্ধনেও ৷ কোতওয়ালি ভবন এখন তিন ভাগে বিভক্ত ৷ এত কিছুর পরেও কংগ্রেস ছাড়েননি ডালু-ইশা ৷

একুশের বিধানসভা নির্বাচনে প্রথম পরাজয়ের স্বাদ পেয়েছিলেন ইশা ৷ হেরেছিলেন সুজাপুর কেন্দ্রে ৷ সেই নির্বাচনে সেখানে আরেক গনিকে প্রার্থী করেছিলেন মমতা ৷ গনির নামেই ভোট হয়েছিল ৷ রেকর্ড ভোটে জেতেন আবদুল গনি ৷ কলকাতা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি তিনি ৷ সঙ্গে ওয়াকফ কমিশনের চেয়ারপার্সন ৷ মমতার ঘনিষ্ঠও ৷ সুজাপুর ভেবেছিল, এলাকায় উন্নয়নের জোয়ার বয়ে যাবে ৷ কিন্তু ভোটের পর সেই গনিকে আর এলাকায় দেখা যায়নি ৷ এবারের ভোট প্রচারে এসে এই নিয়ে দুঃখপ্রকাশ করতে হয়েছে স্বয়ং মমতাকেও ৷

মানুষের সেই ক্ষোভকে অস্ত্র করেই বছর দুয়েক আগে থেকে ময়দানে নেমে পড়েছিলেন ইশা ৷ বয়সের ভার আর রোগে জর্জরিত সাংসদ বাবা সেভাবে এলাকায় সময় দিতে পারতেন না ৷ তাই বাবার হয়ে তিনিই চষে বেড়াতেন সাতটি বিধানসভা কেন্দ্র৷ সমাজের উঁচুতলা থেকে একেবারে নিচুতলা, মানুষের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ বাড়াতে শুরু করেন তিনি ৷ এনআরসি আর সিএএ নিয়ে মানুষের ভয় কাটানোর চেষ্টা করতে থাকেন ৷ তার ফলও মিলতে শুরু করে ৷ তেইশের পঞ্চায়েত ভোটেই আভাস পাওয়া গিয়েছিল যে তৃণমূলে চলে যাওয়া সংখ্যালঘু ভোট কংগ্রেসে ফিরতে শুরু করেছে ৷ এটাই অক্সিজেন জোগায় ডালু-ইশাকে ৷ এবারও এই কেন্দ্রে প্রার্থী হওয়ার কথা ছিল ডালু মিয়াঁর ৷ কিন্তু অসুস্থতার জন্য তাঁকে দফায় দফায় হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় ৷ এমনকি ঠিকমতো হাঁটাচলাও করতে পারছিলেন না ৷ তিনি এআইসিসিকে জানান, তাঁর জায়গায় এবার ইশাকে দক্ষিণ মালদা কেন্দ্রে প্রার্থী করা হোক ৷ সেই আবেদন মেনে নেয় এআইসিসি ৷ ফল হাতেগরমে ৷ গোটা রাজ্যে কংগ্রেসের বাতি জ্বালিয়ে রেখেছেন সেই ইশাই ৷

ভোটের হিসাব বলছে, মালদা দক্ষিণের মধ্যে থাকা সংখ্যালঘু অধ্যুষিত চারটি বিধানসভা কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বীদের উড়িয়ে দিয়েছেন ইশা ৷ দু’টি কেন্দ্রে তিনি দ্বিতীয় স্থানে৷ একমাত্র ইংরেজবাজারে তিনি তৃতীয় স্থানে আছেন ৷ অন্যদিকে শুধুমাত্র ইংরেজবাজার আর সুজাপুর কেন্দ্রে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে তৃণমূল ৷ বাকি পাঁচটিতে তৃতীয় স্থানে ৷ ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই ফল নিশ্চিতভাবেই চিন্তায় রাখবে রাজ্যের শাসক শিবিরকে ৷ তবে এই সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ইংরেজবাজারে নিজেদের জয় অক্ষুণ্ণ রেখেছে বিজেপি ৷ পদ্ম প্রার্থী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী এই কেন্দ্রের বিধায়কও ৷

মৃত্যুর 18 বছর পরেও গনি মিথ যে মালদা জেলার ভোটে যথেষ্ট সক্রিয়, এবারও তার প্রমাণ মিলেছে মালদা দক্ষিণ কেন্দ্রে ৷ তৃণমূল কিংবা বিজেপি যাই বলুক না কেন, জেলার রাজনৈতিক মহল নিশ্চিত, গনি মিথেই এখানে ইশার জয় এত মসৃণ ৷ মুখে স্বীকার না করলেও কবরে শায়িত মানুষটিকে এখনও অবশ্যই ভয় পায় অন্য রাজনৈতিক দলগুলিও ৷ তাই ভোট প্রচারে এসে এখনও গনি স্মরণ করতে হয় মমতা-মোদিকে ৷

আর এখানেই বোধহয় গনি খান আর অধীর চৌধুরীর রাজনীতির ফারাক ৷ সেই কারণেই পরপর পাঁচবার জেতা আসন বহরমপুর হাতছাড়া হয় নবাগত ইউসুফ পাঠানের জন্য ৷ মালদায় যেমন সংখ্যালঘু অনেকটাই নিজেদের দিকে টানতে পেরেছে কংগ্রেস ৷ বহরমপুরে সেটা সম্ভব হয়নি ৷ বরং উল্টোটাই হয়েছে ৷ তার সঙ্গে অধীর চৌধুরীকে ভোট খোয়াতে হয়েছে, এমন দু’টি বিধানসভা আসনে, যেখান থেকে বরাবরই তিনি সবচেয়ে বেশি লিড পেতেন ৷

ওই দু’টি কেন্দ্র হল কান্দি ও বহরমপুর ৷ 2019 সালে ওই দুই কেন্দ্র থেকে প্রায় 90 হাজার ভোটের লিড ছিল অধীরের ৷ এবার সেটা 10-12 হাজারে নেমেছে ৷ এটাই অধীরের পরাজয়ের অন্যতম কারণ ৷ এই দুই কেন্দ্রের সংখ্যালঘু তৃণমূলের দিকে গিয়েছে ৷ পাশাপাশি সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটের একটা বড় অংশ গিয়েছে বিজেপির দিকে ৷ এর মূল কারণ, বিজেপি প্রার্থী ড. নির্মলকুমার সাহার জনপ্রিয়তা ৷ এলাকায় তিনি গরিবের ডাক্তার বলে পরিচিত ৷ সেই ইমেজই তাঁকে এই দুই বিধানসভা থেকে ভোট টানতে সাহায্য করেছে ৷ যা লাভজনক হয়েছে তৃণমূলের জন্য ৷ আর বহরমপুরে অধীরের দাপট শেষ করতে সুবিধা হয়েছে শাসক দলের ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.