আলিপুরদুয়ার, 16 এপ্রিল: আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্র ৷ উত্তরবঙ্গের এই আসনটি 2019 সাল থেকে বিজেপির শক্ত ঘাঁটি ৷ গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী জন বার্লা এই কেন্দ্র থেকে বিপুল ব্যবধানে জয়ী হয়েছিলেন ৷ এমনকি 2021 বিধানসভা নির্বাচনেও সাতটি আসনে জয় পান বিজেপি প্রার্থীরা ৷ এ বার বিজেপির গড় আলিপুরদুয়ারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নকে হাতিয়ার করে প্রচারে নেমেছেন তৃণমূল প্রার্থী তথা রাজ্যসভার সাংসদ প্রকাশ চিক বড়াইক ৷ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে কী কী কাজ আলিপুরদুয়ারের মানুষের জন্য হয়েছে ? কোন কোন কাজ করার আশ্বাস দিয়েও বিজেপির সাংসদ তথা মন্ত্রী তা করতে ব্যর্থ ? এমনকি বর্তমান বিজেপি প্রার্থী মনোজ টিগ্গা বিধায়ক হিসেবে কতটা ব্যর্থ ? তাও মানুষের কাছে তুলে ধরছেন বলে জানালেন প্রকাশ চিক বড়াইক ৷ সেই সব নিয়েই ইটিভি ভারতের সঙ্গে কথা বললেন তৃণমূল প্রার্থী ৷
চা বাগানের উন্নয়ন
আলিপুরদুয়ার লোকসভার তৃণমূল প্রার্থীর কথায়, আলিপুরদুয়ারের লোকসভা কেন্দ্র 111টি চা বাগানে ও 473টি বুথ নিয়ে তৈরি ৷ কুমারগ্রাম থেকে নাগরাকাটা বেশিরভাগ বিধানসভা চা বাগান অধ্যুষিত ৷ আর সেই সঙ্গে গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা সবচেয়ে বেশি ৷ আমরা এই চা বলয়ের জন্য যে কাজ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলেছিলাম, তা হয়েছে ৷ যেমন ক্রেস হাউসের কথা বলেছিলাম ৷ যাঁরা মা, সেই সব মহিলাকর্মীরা বাচ্চাদের নিয়ে চা পাতা তুলতে আসতেন ৷ তাঁদের বাচ্চাদের রাখার জায়গা ছিল না ৷ এটা ম্যানেজমেন্ট করার কথা ছিল ৷ কিন্তু, রাজ্য সরকার এটা করেছে ৷ 96টি চা বাগানের ক্রেস হাউস তৈরি হয়ে গিয়েছে ৷
প্রত্যেকটি চা বাগানের স্বাস্থ্য পরিষেবা উন্নতির কথা বলেছিলাম ৷ প্রতিটি গ্রামীণ এলাকায় চা বাগানের জন্য হাসপাতাল প্রয়োজন ছিল ৷ 53টি জায়গায় হাসপাতাল হয়ে গিয়েছে ৷ আরও কয়েকটি জায়গায় আন্ডার কনস্ট্রাকশন রয়েছে ৷ প্রতিটি হাসপাতালে এমবিবিএস চিকিৎসক-সহ 14 জনের ম্যান পাওয়ার থাকবে ৷ যেখানে অ্যাম্বুল্যান্স ড্রাইভার, নার্স, ওয়ার্ড বয়-সহ আরও অন্যান্য কর্মীরা কাজ করবেন ৷ ইতিমধ্যে, হাসপাতালগুলিতে আসবাবপত্র ও অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা শুরু হয়ে গিয়েছে ৷
চা বাগান শ্রমিকদের জমির পাট্টা
চা শ্রমিকদের 200 বছর আগের দাবি ছিল জমির পাট্টা ৷ সেটা কিন্তু ভূমি অধিগ্রহণ বিল পাশ করে চা শ্রমিকদের দেওয়া হচ্ছে ৷ আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি জেলায় সর্বাধিক 22 হাজার চা শ্রমিক জমির পাট্টা পেয়ে গিয়েছেন ৷ ঘর বানানোর জন্য 1 লক্ষ 20 হাজার টাকার মধ্যে 60 হাজার টাকা দেওয়া হয়ে গিয়েছে ৷
হিন্দি ও আঞ্চলিক ভাষায় পড়াশোনা
আমি 2004 সালে গ্র্যাজুয়েশন করেছি ৷ সেই সময় আমাদের মতো হিন্দি ভাষীদের হিন্দিতে পরীক্ষা দেওয়ার নিয়ম ছিল না ৷ আমাকে ইংরেজিতে লিখতে হয়েছিল ৷ তৃণমূল ক্ষমতা আসার পর মুখ্য়মন্ত্রী আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়িতে হিন্দি ও অন্যান্য আঞ্চলিক ভাষায় পড়াশোনা ও পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে ৷ তবে, হিন্দি কলেজ ও স্কুলের সংখ্যা কম ৷ আমাকে নির্বাচিত করলে, চেষ্টা করব হিন্দি কলেজ তৈরির জন্য ৷
আলিপুরদুয়ারে রেলের ফ্লাইওভার
জন বারলা গত 5 বছরে বীরপাড়া ও কামাক্ষ্যায় রেলের ফ্লাইওভার করতে পারেননি ৷ আমি রাজ্যসভার সাংসদ হিসেবে রেলমন্ত্রকের কাছে আবেদন করেছিলাম এই দুই ফ্লাইওভারের জন্য ৷ আমাকে নির্বাচিত করলে, এই দু’টি ফ্লাইওভারের কাজ আগে শেষ করার চেষ্টা করব ৷ প্রয়োজনে রাজ্য সরকারের কাছেও আর্জি দেব ৷ ইতিমধ্যে পিডব্লিউডি এই কাজের জন্য জমির রিকুইজিশন দিয়েছে ৷ সার্ভে হয়ে গিয়েছে ফ্লাইওভারের জন্য ৷
আরও পড়ুন: