কলকাতা, 4 মার্চ: রাগ গলে জল ৷ চা-নাড়ু-মিষ্টি দিয়ে দেড় ঘণ্টার বেশি সুদীপের সঙ্গে বৈঠকের পর কুণাল বলেন, "দল যাঁকে প্রার্থী করবে আমরা তাঁকে জয়ী করার জন্য লড়াই করব ৷"
সোমবার সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে ঢুকেছিলেন সন্ধে সাতটা কুড়িতে। রাত ন'টার কিছু পরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, "ভুল বোঝাবুঝি দূর হয়েছে। চায়ের টেবিলে বেশ কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বৃহত্তর পরিবারের নাম তৃণমূল কংগ্রেস। পার্টি একটাই ৷ নেত্রীর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দল যাকে প্রার্থী করবে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাকেই জেতানোর জন্য লড়াই করব।"
গত কয়েকদিন সংবাদের শিরোনামে ছিল সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা কুণাল ঘোষ এবং তাপস রায়ের মুখ খোলা। আজ ইতিমধ্যেই তাপস দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছেন। বিধানসভায় গিয়ে তাঁর ইস্তফা জমা দিয়েছেন। অন্যদিকে, কুণাল ঘোষ হাতে শো-কজের চিঠি পাওয়ার পর আজ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বসেছিলেন। দেড় ঘণ্টার বেশি সময় বৈঠকের পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানিয়েছেন, কিছু ইস্যু ছিল ৷ বিকালের পর সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ফোন করেন। কিছু বিষয়ে কথা হয়। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় চা-খাওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।
এরপর তিনি বলেন, "সে কারণেই আসা। সুদীপ দা এবং নয়না বউদি ছিলেন। কথা হয়েছে। যে ছোটখাটো ভুল বোঝাবুঝি ছিল সেদিন, তা আজ দূর করে নেওয়া হয়েছে।" এদিন কুণাল ঘোষ জানিয়েছেন, আজকের চা বৈঠকের মেনু ছিল তাঁর পছন্দের নাড়ু, মিষ্টি, ফিশ ফ্রাই। কুণাল ঘোষের কথায়, "ঘরোয়া চা চক্রে যা থাকে তাই ছিল আর কী!"
যেহেতু সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় নিয়ে কুণাল ঘোষের ক্ষোভের পর তাঁকে সঙ্গ দিয়েছিলেন তাপস রায়। খুব স্বাভাবিকভাবেই এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে তাপস রায়ের প্রসঙ্গে ওঠে। কুণাল ঘোষ সে ব্যাপারে বলেন, "সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে বলেছেন তাপস রায় চলে যাক ৷ যা আমি নিজেও চাইনি।" একইসঙ্গে তাপস রায়ের কাছে আরও একবার অনুরোধ করেছেন কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, "যন্ত্রণার কারণে যদি ইস্তফা দিয়েও থাকেন তাহলেও তাপস দার কাছে অনুরোধ কোনও বিরোধী রাজনৈতিক দলে যোগদান করবেন না। আপনার যদি মনে হয় সমস্যা হয়েছে কিছুদিন বিশ্রামে থাকুন। একটু ছুটি কাটিয়ে নিন আমাদের অনুরোধ বিপক্ষ কোনও রাজনৈতিক দলে যোগ দেবেন না। বিপক্ষ দলে যোগ দিলে আমরা যে বৃহত্তর পরিবার সেটা ধাক্কা খায়। আর নিজেদের মধ্যে একটা বৈরিতা তৈরি হয়।
এদিনও কুণাল ঘোষ বলেন, "তাপসদা আমার নেতা, আমি দলের সহকর্মী। কিন্তু আজ যে কোনও কারণেই হোক তাপসদা দলের চৌকাঠ পার করে গিয়েছেন। যতক্ষণ দলের মধ্যের বিষয় দাদা ভাই সহকর্মী থাকে। কিন্তু আমি তো তৃণমূল কংগ্রেসের গণ্ডির বাইরে যেতে পারি না। এখন কিছুটা অবস্থানগত দূরত্ব দেখা যাবে সেটা তো স্বাভাবিক ব্যাপার।"
আরও পড়ুন: