ETV Bharat / politics

রায়গঞ্জে দুই শিষ্যের মুখোমুখি গুরু, প্রচারে ব্যক্তিগত আক্রমণে 'না' - West Bengal BYE ELECTION 2024

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jul 2, 2024, 4:06 PM IST

Raiganj Assembly Bye Election 2024: রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয়েছে যাঁর কাছে, এবারের উপনির্বাচনে সেই 'গুরু' তথা বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থী মোহিত সেনগুপ্তের বিরুদ্ধে ভোটে লড়বেন বিরোধী দুই প্রার্থী ৷ প্রচারে ব্যক্তিগত আক্রমণে যাবেন 'না' তৃণমূলের প্রার্থী কৃষ্ণ কল্যাণী এবং বিজেপি প্রার্থী মানস ঘোষ ৷

Raiganj Assembly Bye Election 2024
রায়গঞ্জ উপনির্বাচন (নিজস্ব চিত্র)

রায়গঞ্জ, 2 জুলাই: হাতে আর মাত্র ক'দিন ৷ আগামী 10 জুলাই রায়গঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে হবে উপনির্বাচন ৷ সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনের মতো উপনির্বাচনেও ফের ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখবে রায়গঞ্জ ৷ এই নির্বাচনেই ভোটের ময়দানে লড়াই করবেন গুরু-শিষ্য ৷ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে প্রচার ৷ শেষ হাসি কে হাসবে, তা সময় বলবে ৷ কিন্তু গুরু-শিষ্যের এই লড়াই ঘিরে এখন জমজমাট রায়গঞ্জ ৷

বিধানসভা উপনির্বাচনে রায়গঞ্জ কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী করেছে লোকসভা ভোটে পরাজিত প্রার্থী কৃষ্ণ কল্যাণীকে ৷ তাঁর বিরুদ্ধে বিজেপির অস্ত্র মানস ঘোষ ৷ কিন্তু সব হিসেব উলটে দিতে মোহিত সেনগুপ্তকে প্রার্থী করেছে বাম-কংগ্রেস জোট ৷ বিরোধী শিবিরের এই প্রার্থী বাকি দুই প্রার্থীর রাজনৈতিক অভিভাবক তিনি ৷ সে কথা জানে রায়গঞ্জের আঠারো থেকে আশি সকলেই ৷ 64 বছর বয়সি মোহিত শুধু দু'দফায় রায়গঞ্জ কেন্দ্রের বিধায়কই ছিলেন না, সামলেছেন পৌরসভার চেয়ারম্যান পদও ৷ তিনি যখন পৌরসভার চেয়ারম্যান, তখন সেই বোর্ডের কাউন্সিলর ছিলেন কৃষ্ণ কল্যাণীর বাবা দীনদয়াল কল্যাণী ৷ তিনিও তখন কংগ্রেস করতেন ৷ সেই সূত্রে কল্যাণী ভবনে অবাধ যাতায়াত ছিল মোহিতের ৷

আবার দীনদয়ালও সেনগুপ্তদের বাড়িতে হামেশাই ঢুঁ মারতেন ৷ বাবার সঙ্গে যেতেন কৃষ্ণও ৷ কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর দুই পরিবারের মধ্যে খানিকটা দূরত্ব তৈরি হলেও, এখনও কৃষ্ণের কাছে 'কাকা' হয়ে রয়ে গিয়েছেন মোহিত ৷ এখনও 'মোহিতকাকু' সম্বোধনেই কংগ্রেস প্রার্থীকে ডাকেন 45 বছরের কৃষ্ণ ৷ এবারের উপনির্বাচনে প্রতিপক্ষ কংগ্রেস প্রার্থী সম্পর্কে তৃণমূল প্রার্থীর মূল্যায়ন, "ব্যক্তিগতভাবে মোহিতকাকু আমার শ্রদ্ধেয় ৷ বরাবর তাঁকে সম্মান জানিয়ে এসেছি ৷ কিন্তু বিধায়ক কিংবা পৌরসভার চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি রায়গঞ্জের জন্য কিছুই করেননি ৷ নির্বাচনি প্রচারে সেই বিষয়গুলি তুলে ধরেছি ৷"

47 বছরের বিজেপি প্রার্থী মানস ঘোষের রাজনৈতিক জীবনও বেশ চমকপ্রদ ৷ মোহিতের হাত ধরেই তাঁর রাজনীতিতে হাতেখড়ি ৷ পরে তাঁর সহকর্মী হিসেবে দীর্ঘদিন রাজনীতি করেছেন ৷ 2008 থেকে 2011 পর্যন্ত তিনি ছিলেন যুব কংগ্রেসের রায়গঞ্জ ব্লকের সভাপতি ৷ 2011 থেকে 2017 পর্যন্ত দলের যুব সংগঠনের জেলা সভাপতির পদেও ছিলেন তিনি ৷ এরই মধ্যে 2013 সালে নির্বাচনে জিতে কংগ্রেস পরিচালিত রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ হন তিনি ৷ এরপর 2017 সালে কংগ্রেস ছেড়ে যোগ দেন তৃণমূলে ৷

2018 সালের পঞ্চায়েত ভোটে জয় পেয়ে রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন মানস ৷ গত 2023 সাল পর্যন্ত সেই পদেই আসীন ছিলেন ৷ তারপরই ঘাসফুল ছেড়ে যোগ দেন পদ্ম শিবিরে ৷ রায়গঞ্জ কেন্দ্রে জিততে তাঁর উপরেই ভরসা রেখেছে গেরুয়া শিবিরের থিংক ট্যাংক ৷ বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী সম্পর্কে তাঁর মন্তব্য, "তিনি আমার গুরুজন ৷ তাঁকে আমি শ্রদ্ধা করি ৷ তাঁর কাছেই রাজনীতির পাঠ নিয়েছি ৷ একসময় কংগ্রেসের একাধিক পদ সামলেছি ৷ তবে সেখানে কাজের সুযোগ কমে গিয়েছিল ৷ তাই দলবদল করি ৷ কিন্তু এতে মোহিতদার সঙ্গে আমার সম্পর্ক খারাপ হয়নি ৷ এখনও আগের মতোই আছে সবকিছু ৷ শুধু রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিটা পালটেছে মাত্র ৷"

অন্যদিকে, প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থী সম্পর্কে মোহিতবাবুর বক্তব্য, "ওঁদের দু'জনকেই ছোট থেকে চিনি ৷ পারিবারিক সম্পর্ক ছিল ৷ রাজনীতির খেলায় এখন হয়তো সেই সম্পর্ক আগের মতো জোরালো নয় ৷ তবে ওঁদের ভালোবাসি এখনও ৷ ওঁরা বড় হোক সেটাই চাই ৷ কিন্তু এবারের উপনির্বাচনে ওঁরা হেরে যাবে ৷ কারণ এক্ষেত্রে আমার থেকেও এগিয়ে মানুষের আশীর্বাদ ৷"

রায়গঞ্জ, 2 জুলাই: হাতে আর মাত্র ক'দিন ৷ আগামী 10 জুলাই রায়গঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে হবে উপনির্বাচন ৷ সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনের মতো উপনির্বাচনেও ফের ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখবে রায়গঞ্জ ৷ এই নির্বাচনেই ভোটের ময়দানে লড়াই করবেন গুরু-শিষ্য ৷ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে প্রচার ৷ শেষ হাসি কে হাসবে, তা সময় বলবে ৷ কিন্তু গুরু-শিষ্যের এই লড়াই ঘিরে এখন জমজমাট রায়গঞ্জ ৷

বিধানসভা উপনির্বাচনে রায়গঞ্জ কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী করেছে লোকসভা ভোটে পরাজিত প্রার্থী কৃষ্ণ কল্যাণীকে ৷ তাঁর বিরুদ্ধে বিজেপির অস্ত্র মানস ঘোষ ৷ কিন্তু সব হিসেব উলটে দিতে মোহিত সেনগুপ্তকে প্রার্থী করেছে বাম-কংগ্রেস জোট ৷ বিরোধী শিবিরের এই প্রার্থী বাকি দুই প্রার্থীর রাজনৈতিক অভিভাবক তিনি ৷ সে কথা জানে রায়গঞ্জের আঠারো থেকে আশি সকলেই ৷ 64 বছর বয়সি মোহিত শুধু দু'দফায় রায়গঞ্জ কেন্দ্রের বিধায়কই ছিলেন না, সামলেছেন পৌরসভার চেয়ারম্যান পদও ৷ তিনি যখন পৌরসভার চেয়ারম্যান, তখন সেই বোর্ডের কাউন্সিলর ছিলেন কৃষ্ণ কল্যাণীর বাবা দীনদয়াল কল্যাণী ৷ তিনিও তখন কংগ্রেস করতেন ৷ সেই সূত্রে কল্যাণী ভবনে অবাধ যাতায়াত ছিল মোহিতের ৷

আবার দীনদয়ালও সেনগুপ্তদের বাড়িতে হামেশাই ঢুঁ মারতেন ৷ বাবার সঙ্গে যেতেন কৃষ্ণও ৷ কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর দুই পরিবারের মধ্যে খানিকটা দূরত্ব তৈরি হলেও, এখনও কৃষ্ণের কাছে 'কাকা' হয়ে রয়ে গিয়েছেন মোহিত ৷ এখনও 'মোহিতকাকু' সম্বোধনেই কংগ্রেস প্রার্থীকে ডাকেন 45 বছরের কৃষ্ণ ৷ এবারের উপনির্বাচনে প্রতিপক্ষ কংগ্রেস প্রার্থী সম্পর্কে তৃণমূল প্রার্থীর মূল্যায়ন, "ব্যক্তিগতভাবে মোহিতকাকু আমার শ্রদ্ধেয় ৷ বরাবর তাঁকে সম্মান জানিয়ে এসেছি ৷ কিন্তু বিধায়ক কিংবা পৌরসভার চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি রায়গঞ্জের জন্য কিছুই করেননি ৷ নির্বাচনি প্রচারে সেই বিষয়গুলি তুলে ধরেছি ৷"

47 বছরের বিজেপি প্রার্থী মানস ঘোষের রাজনৈতিক জীবনও বেশ চমকপ্রদ ৷ মোহিতের হাত ধরেই তাঁর রাজনীতিতে হাতেখড়ি ৷ পরে তাঁর সহকর্মী হিসেবে দীর্ঘদিন রাজনীতি করেছেন ৷ 2008 থেকে 2011 পর্যন্ত তিনি ছিলেন যুব কংগ্রেসের রায়গঞ্জ ব্লকের সভাপতি ৷ 2011 থেকে 2017 পর্যন্ত দলের যুব সংগঠনের জেলা সভাপতির পদেও ছিলেন তিনি ৷ এরই মধ্যে 2013 সালে নির্বাচনে জিতে কংগ্রেস পরিচালিত রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ হন তিনি ৷ এরপর 2017 সালে কংগ্রেস ছেড়ে যোগ দেন তৃণমূলে ৷

2018 সালের পঞ্চায়েত ভোটে জয় পেয়ে রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন মানস ৷ গত 2023 সাল পর্যন্ত সেই পদেই আসীন ছিলেন ৷ তারপরই ঘাসফুল ছেড়ে যোগ দেন পদ্ম শিবিরে ৷ রায়গঞ্জ কেন্দ্রে জিততে তাঁর উপরেই ভরসা রেখেছে গেরুয়া শিবিরের থিংক ট্যাংক ৷ বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী সম্পর্কে তাঁর মন্তব্য, "তিনি আমার গুরুজন ৷ তাঁকে আমি শ্রদ্ধা করি ৷ তাঁর কাছেই রাজনীতির পাঠ নিয়েছি ৷ একসময় কংগ্রেসের একাধিক পদ সামলেছি ৷ তবে সেখানে কাজের সুযোগ কমে গিয়েছিল ৷ তাই দলবদল করি ৷ কিন্তু এতে মোহিতদার সঙ্গে আমার সম্পর্ক খারাপ হয়নি ৷ এখনও আগের মতোই আছে সবকিছু ৷ শুধু রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিটা পালটেছে মাত্র ৷"

অন্যদিকে, প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থী সম্পর্কে মোহিতবাবুর বক্তব্য, "ওঁদের দু'জনকেই ছোট থেকে চিনি ৷ পারিবারিক সম্পর্ক ছিল ৷ রাজনীতির খেলায় এখন হয়তো সেই সম্পর্ক আগের মতো জোরালো নয় ৷ তবে ওঁদের ভালোবাসি এখনও ৷ ওঁরা বড় হোক সেটাই চাই ৷ কিন্তু এবারের উপনির্বাচনে ওঁরা হেরে যাবে ৷ কারণ এক্ষেত্রে আমার থেকেও এগিয়ে মানুষের আশীর্বাদ ৷"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.