ETV Bharat / politics

রাজ্যসভার ভোটে হিমাচল প্রদেশে ক্রস ভোটিংয়ের আশঙ্কা কংগ্রেসে, স্বস্তিতে নেই সুখবিন্দর সিং সুখু - Congress

Himachal Rajya Sabha Election 2024: যদিও হিমাচল প্রদেশের রাজ্যসভা নির্বাচনের ফলাফল সন্ধ্যায় আসবে, কিন্তু এই নিয়ে দিনভর ‘সুখে’ ছিলেন ওই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখু ৷ ক্রস ভোটিংয়ের আশঙ্কায় তিনি চিন্তিত । সেকথা তিনি নিজে মুখে জানিয়েছেন ৷ ফলে শেষ পর্যন্ত সেখানে কংগ্রেসের অভিষেক মনু সিংভি জেতেন, নাকি বিজেপির হর্ষ মহাজন শেষ হাসি হাসেন সেটাই এখন দেখার !

Himachal Rajya Sabha Election 2024
Himachal Rajya Sabha Election 2024
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Feb 27, 2024, 5:23 PM IST

সিমলা, 27 ফেব্রুয়ারি: রাজ্যসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হিমাচল প্রদেশে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তোলপাড় ৷ মঙ্গলবার সেখানে রাজ্যসভার একটি আসনে ভোট হচ্ছে ৷ অঙ্কের হিসেবে কংগ্রেসের প্রার্থী অভিষেক মনু সিংভিরই জেতা উচিত ৷ কিন্তু ক্রস ভোটিংয়ের আশঙ্কায় তাঁর জয় নিয়ে প্রশ্ন চিহ্ন রয়েছে ৷ সূত্রের খবর, ওই রাজ্যের 6-9 জন বিধায়ক ক্রস ভোটিং করেছেন । এঁদের নির্দল বিধায়ক-সহ কংগ্রেসের জন প্রতিনিধিরা রয়েছেন বলে খবর ৷ এই পরিস্থিতিতে ওই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখু ও বিরোধী দলনেতা বিজেপির জয়রাম ঠাকুরের মন্তব্য়ে ধোঁয়াশাল আরও বেড়েছে ৷

হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কংগ্রেসের সুখবিন্দর সিং সুখু বলেছেন, "সমস্ত বিধায়ক দলের আদর্শ অনুযায়ী ভোট দিয়েছেন। ফলাফল এলেই আমরা জানতে পারব । বিজেপিতে বিবেক বলে কিছু নেই, টাকাই সেখানে বিবেক । কেউ যদি বিপক্ষে ভোট দেয় । তাহলে এর অর্থ হবে কোথাও দর কষাকষি হয়েছে । নির্বাচনে বিবেকের কথা শোনা যায় না, দলের আদর্শের কথা শুনতে হয় ।"

অন্যদিকে হিমাচল বিধানসভার বিরোধী দলনেতা জয়রাম ঠাকুর এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেসকে কটাক্ষ করেছেন ৷ তিনি জানান, অঙ্কের হিসেব কংগ্রেসের পক্ষে রয়েছে ৷ কিন্তু সেই হিসেব গোলমাল হতে বেশি সময় লাগে না ৷ তাই শেষ পর্যন্ত কে জেতেন, সেই দিকেই তাকিয়ে সকলে ৷

হিমাচলে রাজ্যসভার ভোটের অঙ্ক: 68 বিধায়কের হিমাচল প্রদেশ বিধানসভায় 40 জন বিধায়ক কংগ্রেসের এবং 25 জন বিধায়ক বিজেপির । এছাড়াও 3 জন নির্দল বিধায়ক রয়েছেন । রাজ্যসভার প্রার্থীকে জিততে হলে 35 জন বিধায়কের ভোট প্রয়োজন । অঙ্কের হিসেবে কংগ্রেসের জয় নিশ্চিত হওয়া উচিত ৷ কিন্তু সূত্রের খবর, ক্রস ভোটিংয়ের ফলে বিজেপি প্রার্থী হর্ষ মহাজন আরও 6-9 বিধায়কের ভোট পেতে পারেন ৷

যদি 9 জনের কম বিধায়ক ক্রস ভোটিং করেন, তাহলে কংগ্রেস প্রার্থী অভিষেক মনু সিংভির জয় নিশ্চিত ৷ কিন্তু যদি 9 জন বিধায়ক ক্রস ভোটিং করেন এবং সমস্ত ভোট বৈধ বলে বিবেচিত হয়, তাহলে বিজেপি ও কংগ্রেস প্রার্থীরা 34-34 ভোট পাবেন । তাহলে আবার ভোট হবে ৷ কিন্তু যদি ক্রস ভোটিংয়ের সংখ্যা 9 এর থেকে বেড়ে যায়, তাহলে বিজেপির জয় নিশ্চিত ৷

প্রায় 2 ঘণ্টা বিধানসভায় অনুপস্থিত ছিল শাসক দল: এখন হিমাচল প্রদেশের বিধানসভার বাজেট অধিবেশন চলছে ৷ এই অধিবেশন চলবে 29 ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত । তার মাঝেই মঙ্গলবার রাজ্যসভার ভোট হয় ৷ রাজ্যের 68 জন বিধায়কই রাজ্যসভা নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন ৷ এর পর প্রত্যেককে বিধানসভার অধিবেশনে অংশ নেন । কিন্তু দুপুর 2টা পর্যন্ত ক্ষমতাসীন দল কংগ্রেসের একজন সদস্যও বিধানসভার অধিবেশন কক্ষে আসেননি ।

এর ফলে এই নিয়ে সরব হন বিরোধী বিধায়করা ৷ তাঁরা স্লোগান দিতে থাকেন 'ক্ষমতায় থাকা লোকজন কোথায় গেল ?' দুপুর সোয়া দু’টোর দিকে বিধানসভায় প্রবেশন করেন স্পিকার কুলদীপ পাঠানিয়া । এর পরে, মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখু এবং অন্যান্য মন্ত্রীরাও অধিবেশন কক্ষে পৌঁছান ।

এরপর বিরোধী দলনেতা জয়রাম ঠাকুর শাসক দল ও স্পিকার সম্পর্কে বলেন, "এই আসনের সম্মান আছে এবং এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । কিন্তু ক্ষমতার দম্ভ থাকলে ঈশ্বরও এই সরকারকে বাঁচাতে পারবেন না ৷’’ এর পরেই হাউজে তোলপাড় শুরু হয় । শাসক দল ও বিরোধী বিধায়কদের মধ্যে হট্টগোল দেখে স্পিকার কুলদীপ সিং পাঠানিয়া বিধানসভার কার্যক্রম আগামিকাল (বুধবার) পর্যন্ত মুলতবি করেছেন ।

তবে বিজেপি যদি ক্রসিং ভোটিংয়ের সাহায্যে নিজেদের প্রার্থীকে জেতাতে সক্ষম হয়, তাহলে সংকটে পড়ে যাবে সুখুর সরকার৷ বিজেপি অনাস্থা ভোট ডেকে বিপাকে ফেলতে পারে কংগ্রেসকে ৷ লোকসভা নির্বাচনের আগে তা রাহুল গান্ধির দলের জন্য বড় ধাক্কা হতে পারে ৷

আরও পড়ুন:

  1. রাজ্যসভার ভোটে বাংলা থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী তৃণমূলের চার ও বিজেপির এক প্রার্থী
  2. আসন সমঝোতা নিয়ে অখিলেশ-কেজরির পর মমতারও ‘মান’ ভাঙানো যাবে, আশাবাদী কংগ্রেস
  3. লালুর কথা গুরুত্বহীন, মহাজোটে ফেরা নিয়ে আরজেডি সুপ্রিমোর প্রস্তাবের পালটা জবাব নীতীশের

সিমলা, 27 ফেব্রুয়ারি: রাজ্যসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হিমাচল প্রদেশে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তোলপাড় ৷ মঙ্গলবার সেখানে রাজ্যসভার একটি আসনে ভোট হচ্ছে ৷ অঙ্কের হিসেবে কংগ্রেসের প্রার্থী অভিষেক মনু সিংভিরই জেতা উচিত ৷ কিন্তু ক্রস ভোটিংয়ের আশঙ্কায় তাঁর জয় নিয়ে প্রশ্ন চিহ্ন রয়েছে ৷ সূত্রের খবর, ওই রাজ্যের 6-9 জন বিধায়ক ক্রস ভোটিং করেছেন । এঁদের নির্দল বিধায়ক-সহ কংগ্রেসের জন প্রতিনিধিরা রয়েছেন বলে খবর ৷ এই পরিস্থিতিতে ওই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখু ও বিরোধী দলনেতা বিজেপির জয়রাম ঠাকুরের মন্তব্য়ে ধোঁয়াশাল আরও বেড়েছে ৷

হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কংগ্রেসের সুখবিন্দর সিং সুখু বলেছেন, "সমস্ত বিধায়ক দলের আদর্শ অনুযায়ী ভোট দিয়েছেন। ফলাফল এলেই আমরা জানতে পারব । বিজেপিতে বিবেক বলে কিছু নেই, টাকাই সেখানে বিবেক । কেউ যদি বিপক্ষে ভোট দেয় । তাহলে এর অর্থ হবে কোথাও দর কষাকষি হয়েছে । নির্বাচনে বিবেকের কথা শোনা যায় না, দলের আদর্শের কথা শুনতে হয় ।"

অন্যদিকে হিমাচল বিধানসভার বিরোধী দলনেতা জয়রাম ঠাকুর এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেসকে কটাক্ষ করেছেন ৷ তিনি জানান, অঙ্কের হিসেব কংগ্রেসের পক্ষে রয়েছে ৷ কিন্তু সেই হিসেব গোলমাল হতে বেশি সময় লাগে না ৷ তাই শেষ পর্যন্ত কে জেতেন, সেই দিকেই তাকিয়ে সকলে ৷

হিমাচলে রাজ্যসভার ভোটের অঙ্ক: 68 বিধায়কের হিমাচল প্রদেশ বিধানসভায় 40 জন বিধায়ক কংগ্রেসের এবং 25 জন বিধায়ক বিজেপির । এছাড়াও 3 জন নির্দল বিধায়ক রয়েছেন । রাজ্যসভার প্রার্থীকে জিততে হলে 35 জন বিধায়কের ভোট প্রয়োজন । অঙ্কের হিসেবে কংগ্রেসের জয় নিশ্চিত হওয়া উচিত ৷ কিন্তু সূত্রের খবর, ক্রস ভোটিংয়ের ফলে বিজেপি প্রার্থী হর্ষ মহাজন আরও 6-9 বিধায়কের ভোট পেতে পারেন ৷

যদি 9 জনের কম বিধায়ক ক্রস ভোটিং করেন, তাহলে কংগ্রেস প্রার্থী অভিষেক মনু সিংভির জয় নিশ্চিত ৷ কিন্তু যদি 9 জন বিধায়ক ক্রস ভোটিং করেন এবং সমস্ত ভোট বৈধ বলে বিবেচিত হয়, তাহলে বিজেপি ও কংগ্রেস প্রার্থীরা 34-34 ভোট পাবেন । তাহলে আবার ভোট হবে ৷ কিন্তু যদি ক্রস ভোটিংয়ের সংখ্যা 9 এর থেকে বেড়ে যায়, তাহলে বিজেপির জয় নিশ্চিত ৷

প্রায় 2 ঘণ্টা বিধানসভায় অনুপস্থিত ছিল শাসক দল: এখন হিমাচল প্রদেশের বিধানসভার বাজেট অধিবেশন চলছে ৷ এই অধিবেশন চলবে 29 ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত । তার মাঝেই মঙ্গলবার রাজ্যসভার ভোট হয় ৷ রাজ্যের 68 জন বিধায়কই রাজ্যসভা নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন ৷ এর পর প্রত্যেককে বিধানসভার অধিবেশনে অংশ নেন । কিন্তু দুপুর 2টা পর্যন্ত ক্ষমতাসীন দল কংগ্রেসের একজন সদস্যও বিধানসভার অধিবেশন কক্ষে আসেননি ।

এর ফলে এই নিয়ে সরব হন বিরোধী বিধায়করা ৷ তাঁরা স্লোগান দিতে থাকেন 'ক্ষমতায় থাকা লোকজন কোথায় গেল ?' দুপুর সোয়া দু’টোর দিকে বিধানসভায় প্রবেশন করেন স্পিকার কুলদীপ পাঠানিয়া । এর পরে, মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখু এবং অন্যান্য মন্ত্রীরাও অধিবেশন কক্ষে পৌঁছান ।

এরপর বিরোধী দলনেতা জয়রাম ঠাকুর শাসক দল ও স্পিকার সম্পর্কে বলেন, "এই আসনের সম্মান আছে এবং এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । কিন্তু ক্ষমতার দম্ভ থাকলে ঈশ্বরও এই সরকারকে বাঁচাতে পারবেন না ৷’’ এর পরেই হাউজে তোলপাড় শুরু হয় । শাসক দল ও বিরোধী বিধায়কদের মধ্যে হট্টগোল দেখে স্পিকার কুলদীপ সিং পাঠানিয়া বিধানসভার কার্যক্রম আগামিকাল (বুধবার) পর্যন্ত মুলতবি করেছেন ।

তবে বিজেপি যদি ক্রসিং ভোটিংয়ের সাহায্যে নিজেদের প্রার্থীকে জেতাতে সক্ষম হয়, তাহলে সংকটে পড়ে যাবে সুখুর সরকার৷ বিজেপি অনাস্থা ভোট ডেকে বিপাকে ফেলতে পারে কংগ্রেসকে ৷ লোকসভা নির্বাচনের আগে তা রাহুল গান্ধির দলের জন্য বড় ধাক্কা হতে পারে ৷

আরও পড়ুন:

  1. রাজ্যসভার ভোটে বাংলা থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী তৃণমূলের চার ও বিজেপির এক প্রার্থী
  2. আসন সমঝোতা নিয়ে অখিলেশ-কেজরির পর মমতারও ‘মান’ ভাঙানো যাবে, আশাবাদী কংগ্রেস
  3. লালুর কথা গুরুত্বহীন, মহাজোটে ফেরা নিয়ে আরজেডি সুপ্রিমোর প্রস্তাবের পালটা জবাব নীতীশের
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.