কলকাতা, 29 এপ্রিল: হাইকোর্টের রায়ে 25,753 জন শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হয়েছে। তা নিয়ে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। রাজ্য সরকার ও পর্ষদ এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে। এই রায় নিয়ে রাজ্যে বামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে দ্বিমত দেখা দিয়েছে। আলাদা মিছিল করার সিধান্ত নিয়েছে ফরওর্য়াড ব্লক। অনেকে আবার পুনর্বিবেচনার দাবি তুলেছে। মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে গত 24 তারিখ বাম-কংগ্রেস ধর্মতলা থেকে কলেজ স্কোয়ার পর্যন্ত মিছিল করে। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, আরএসপি নেতা মনোজ ভট্টাচার্য, কংগ্রেস নেতা অমিতাভ চক্রবর্তী, আশুতোষ চট্টোপাধ্যায়, সিপিআই প্রবীর দেব-রা উপস্থিত ছিলেন এই মিছিলে। তবে মিছিলে ফরওয়ার্ড ব্লকের কোনও নেতাকে দেখা যায়নি। দলের কোনও পতাকাও ছিল না। তা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।
এই প্রসঙ্গে বাম নেতাদের যুক্তি, কংগ্রেস থাকায় নরেন চট্টোপাধ্যায়রা আসেননি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক নেতারই আবার দাবি, তৃণমূলের সঙ্গে হেমন্ত বসু ভবনের ( ফরওর্য়াড ব্লকের রাজ্য দফতর) ভালো সম্পর্ক। এমনকী দুর্নীতির অভিযোগে জেলে যাওয়া রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের যাতায়াত ছিল ফরওয়ার্ড ব্লক অফিসে। যদিও ফরওয়ার্ড ব্লক রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায় বলেন, "আমরাও চাকরি চুরির জন্য মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করছি। সেই দাবিতে আগামী 2 মে কলকাতায় মিছিল করবে ফরওয়ার্ড ব্লক।"
অন্যদিকে, দুর্নীতিতে জড়িত তৃণমূল নেতা-মান্ত্রীদের গ্রেফতারি চাইলেও বিপ্লবী ছাত্র ফ্রন্ট কলকাতা হাইকোর্টের এই রায় বাতিল করার কথা বলেছে। তাঁদের দাবি, 'সিবিআই তদন্ত সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত চাকরি বাতিল করা চলবে না। অর্থনৈতিক সংকটের ফায়দা তুলে তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা যাঁদের দুর্নীতির জালে আবদ্ধ করেছেন তাঁদের জীবিকার ব্যবস্থা রাজ্য সরকারকেই করতে হবে। পাশাপাশি এতদিন বেতন বাবদ যে অর্থ তাঁরা রোজগার করেছেন তা ফেরত নেওয়াও চলবে না।'
একই সুরে লিবারেশনের ছাত্র সংগঠন আইসা'র পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদক শুভাশিস দাস বলেন, "হাইকোর্টে এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতির মামলার রায়কে সর্বোচ্চ আদালতে পুনর্বিবেচনা করতে হবে। নিজের যোগ্যতার ভিত্তিতে যারা চাকরি পেয়েছেন কোনওভাবেই তাদের জীবনকে বিপন্ন করা চলবে না। দ্রুত তদন্তের মধ্যে দিয়ে আসল দোষীদের চিহ্নিত করে নিরপেক্ষ ও প্রভাবমুক্ত বিচার সুনিশ্চিত করতে হবে।"
অন্যদিকে, এসইউসিআইয়ের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদক চণ্ডীদাস ভট্টাচার্য বলেন,"হাইকোর্টের রায়ে রাজ্য সরকারের নিয়োগ দুর্নীতির বহরটি সকলের সামনে পরিস্কার হয়েছে। দুর্নীতির মাধ্যমে যারা চাকরি পেয়েছেন তাদের দুর্নীতিকে সমর্থন করার প্রশ্ন ওঠে না। কিন্তু 2016 সালের প্যানেলে এমন অনেকেই আছেন যাঁরা যোগ্য হিসেবে চাকরি পেয়েছেন। কোন আইন ও যৌক্তিকতায় তাঁদেরও চাকরি খোয়াতে হবে, তা বোধগম্য নয়। এটা ন্যায় বিচারের পরিপন্থী।"
আরও পড়ুন: