কলকাতা, 12 জুন: সামান্য হলেও সংসদে শক্তি বেড়েছে বামেদের । 9 জন সাংসদ হয়েছে বর্তমানে । সিপিএম 4, সিপিআই 2, সিপিআই (এমএল) লিবারেশন 2 ও আরএসপি-র 1 জনকে নিয়ে লোকসভায় তাদের উপস্থিতি সামান্য উন্নতি হয়েছে । কিন্তু, কেরালা ও বাংলায় বামেদের দুরবস্থা । কেরালায় সম্মানরক্ষা হলেও 34 বছর ক্ষমতায় থাকা বঙ্গ সিপিএম এবারও শূন্য ৷
2024 লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হলেও রাজ্যের 42 আসনে ছাপ ফেলতে পারেনি তারা । সংখ্যা-শতাংশের নিরিখে বাংলায় আরও দুর্বল হয়েছে বামেরা । কিন্তু, দেশের নিরিখে সামান্য উন্নতি হওয়ায় আগামিদিনে রাজ্যে বামেদের সঙ্গে জোটে যেতে আগ্রহী সিপিআই (এমএল) লিবারেশন । বিশেষ করে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে অন্যতম বাম শরিক সিপিএম রাজি থাকলে একসঙ্গে তাঁরা হাটতে পারে ।
মঙ্গলবার বিকেলে ইটিভি ভারতকে সিপিআই (এমএল) লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, "একটা সময় খেটে খাওয়া গ্রাম বাংলার মানুষ সিপিএম নির্ভর ছিল । এখন তাঁরা দূরে সরে গিয়েছে । তবে, সামান্য হলেও শহরে নতুন প্রজন্মের মধ্যে বামপন্থী মনোভাব বেড়েছে । ফলে, বামেদের যা অবস্থা তাতে শক্তি বৃদ্ধি করা প্রয়োজন । আগামীতে রাজ্যে বামেদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়তেই হবে । আমরা আগ্রহী আছি । বাকিটা অন্যান্যদের উপর নির্ভর করছে ।"
এবারের লোকসভা নির্বাচনেও তৃণমূল-বিজেপি বিরোধী ভোটব্যাংককে এককাট্টা করতে আগ্রহী হয়েছিল বামেরা । কিন্তু, কিছু মতাদর্শ সমস্যার কারণে সিপিএমের আবেদনে সাড়া দেয়নি লিবারেশন । বরং, তাঁরা মাত্র একটি আসনে প্রার্থী দিয়েই 42টি আসনে বিজেপি বিরোধী প্রচার চালিয়েছিল । আদতে তাতে লাভবান হয়েছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস । সে কথা স্বীকার করে নিচ্ছেন দীপঙ্কর ভট্টাচার্য ।
একই সঙ্গে তিনি মনে করেন, বাম-কংগ্রেস জোটের কারণে রায়গঞ্জ-সহ কয়েকটি আসনে বিজেপি লাভবান হয়েছে । তা না হলে বিজেপিকে বঙ্গে 6টি আসনে নামিয়ে আনা সম্ভব হতো । দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, "আমরা 42টি আসনে প্রার্থী দিইনি ঠিকই । কিন্তু, 42 আসনেই বিজেপি বিরোধী প্রচার চালিয়ে ছিলাম । তাতে 12টি আসনেই সীমাবদ্ধ থাকতে হয়েছে বিজেপির । একই ভাবে এরাজ্যে আমাদের মনে হয়েছিল, এই মুহূর্তে বিজেপিকে পরাস্ত করতে পারে তৃণমূল । কিন্তু, সিপিএমের মনে হয়নি । বরং, রায়গঞ্জ, পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার মতো বেশ কয়েকটি আসনে বাম-কংগ্রেসের ভোটকাটাকাটিতে বিজেপির সুবিধা হয়েছে । তাই, আগামীতে বামেদের শক্তিশালী হওয়া প্রয়োজন ।"
সিপিএমের মতো লিবারেশন সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, "মহারাষ্ট্র, পঞ্জাব, রাজস্থান, হরিয়ানা এবং পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ মিলিয়ে পাঁচটি রাজ্যের কৃষিকাজের যুক্ত মানুষেরা বিজেপি যোগ্য জবাব দিয়েছে । বিজেপি এই 5 রাজ্য থেকেই 38টি আসনে হারিয়েছে । জীবিকা ধ্বংসের বিরুদ্ধে গ্রামীণ ভারত মোদি সরকারকে শিক্ষা দিয়েছে । অনুমান করা হয়েছে যে 159টি গ্রামীণ নির্বাচনী এলাকায়, মানুষ পরিবর্তনের পক্ষে ভোট দিয়েছেন । তাই, এবারের নির্বাচনে যে প্রচার কর্মসূচি ইন্ডিয়ার জোটসঙ্গীদের তরফে নেওয়া হয়েছে, তা আরও জোরদার করা হবে ।"