মালদা, 5 ফেব্রুয়ারি: ব্যাটন বদল ! আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে দক্ষিণ মালদা কেন্দ্র থেকে কংগ্রেসের প্রার্থী হতে পারেন ইশা খান চৌধুরীর ৷ সম্প্রতি 'ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা'য় মালদায় এসে এ নিয়ে নিজের সিদ্ধান্ত নাকি জানিয়ে দিয়েছেন রাহুল গান্ধি ৷ যদিও, বিষয়টি নিয়ে এখনও প্রকাশ্যে সেভাবে মুখ খুলতে চাইছে না জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব ৷ তা সত্যি হলেও, ইশা খান চৌধুরীকে নিয়ে সেভাবে ভাবতে নারাজ জেলা তৃণমূল ৷ তাদের বক্তব্য, বিরোধী প্রার্থী যেই হোন না কেন, এবারের নির্বাচনে মালদার দুই কেন্দ্রেই জয়ী হবেন তৃণমূলের প্রার্থীরা ৷
একসময় মালদা জেলায় একটি মাত্র লোকসভা আসন ছিল ৷ সেই আসনে টানা জিতেছেন কংগ্রেসের প্রয়াত নেতা বরকত গনি খান চৌধুরী ৷ বরকত সাহেবের মৃত্যুর পর জেলায় লোকসভা কেন্দ্রের ডিলিমিটেশন বা ভাগ হয় ৷ গঠিত হয় দু’টি লোকসভা আসন ৷ তখন থেকেই বরকত সাহেবের ছোট ভাই আবু হাসেম খান চৌধুরী (ডালু মিঞা) এই আসনে এখনও পর্যন্ত অপরাজিত ৷ গত লোকসভা নির্বাচনে ব্যবধান কমলেও শেষ হাসি হেসেছেন তিনিই ৷
বর্তমানে গুরুতর অসুস্থ আবু হাসেম ৷ বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি আর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না বলে, ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়ে যাচ্ছিলেন ৷ শারীরিক পরিস্থিতি এবং তাঁর ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিয়েই এবার দক্ষিণ মালদা লোকসভা আসনে তাঁর ছেলে ইশা খান চৌধুরীকে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কংগ্রেস ৷ যদিও এ নিয়ে শেষ কথা বলবে এআইসিসি ৷ তবে, সম্প্রতি জেলা সফরে এসে রাহুল গান্ধি সুজাপুর কেন্দ্রের প্রাক্তন বিধায়ক ইশার সমর্থনে বার্তা দিয়ে গিয়েছেন ৷ দলের অন্দরমহল সূত্রে তেমনটাই দাবি করা হচ্ছে ৷
এ নিয়ে জেলা কংগ্রেসের সহ-সভাপতি ভূপেন্দ্রনাথ হালদারকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "রাহুল গান্ধি জেলায় আসার পর মালদার কংগ্রেস কর্মীরা প্রত্যেকেই উজ্জীবিত ৷ তিনি যেখান দিয়ে গিয়েছেন, সেখানেই মানুষের ভিড় আছড়ে পড়েছে ৷ দক্ষিণ মালদা কেন্দ্রে ডালুবাবু কিংবা ইশা, যিনিই প্রার্থী হন না কেন আমাদের কোনও সমস্যা নেই ৷ লোকসভা নির্বাচনের ময়দানে ইশা নতুন হলেও তাঁর প্রতি মানুষের আস্থা রয়েছে ৷ দক্ষিণ মালদার মানুষ লোকসভায় নিজেদের জনপ্রতিনিধি হিসাবে ইশা খানকেই চাইছেন ৷ এই আসনটি আগাগোড়াই কংগ্রেসের ৷ এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না ৷"
তবে দক্ষিণ মালদা কেন্দ্রে ইশা খান প্রার্থী হলেও, তা নিয়ে চিন্তিত নয় তৃণমূল ৷ দলের জেলা সহ-সভাপতি দুলাল সরকার বলেন, "1980 সাল থেকে লোকসভা নির্বাচনে ওই কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থীরাই জয়ী হয়ে এসেছেন ৷ বরকতদার পরবর্তী সময়ে তাঁর করে যাওয়া কাজের উপর ভিত্তি করে ডালুবাবু নির্বাচিত হয়ে আসছিলেন ৷ গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির বাড়বাড়ন্তের মধ্যেও শেষ মুহূর্তে ওই আসনে ডালুবাবু জিতেছেন ৷ কিন্তু, পরে বিধানসভা কিংবা পঞ্চায়েত নির্বাচনে দেখা গিয়েছে কংগ্রেস সেখানে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে ৷ বিধানসভা নির্বাচনে সুজাপুর কেন্দ্রে ইশা খান চৌধুরী রেকর্ড ভোটে হেরেছেন ৷ পঞ্চায়েত নির্বাচনেও একই ছবি দেখা গিয়েছে ৷ এসব নির্বাচনে তৃণমূল যেভাবে জিতেছে, তাতে আমি নিশ্চিত, এবারের লোকসভা নির্বাচনে দক্ষিণ মালদা আসনে তৃণমূলের প্রার্থীই জয়ী হবেন ৷"
আরও পড়ুন: