ETV Bharat / opinion

পাকিস্তান নিয়ে বদলাচ্ছে বাইডেনের ভাবনা, নেপথ্যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ? - US Pakistan Relations

US Pakistan Relations: পাকিস্তান মুসলিম লিগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই, করাচি নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাবে ধীরে ধীরে বদল আসতে শুরু করেছে ৷ কূটনৈতিকমহলের মতে, এর পিছনে রয়েছে আগামী নভেম্বরে মার্কিন মুলুকে হতে চলা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রভাব ৷ সেই নিয়েই মতামত জানালেন প্রাক্তন কূটনীতিক আঁচল মালহোত্রা ৷

ETV BHARAT
পাকিস্তান নিয়ে বদলাচ্ছে ওয়াশিংটনের চিন্তাধারা (ফাইল চিত্র)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : May 14, 2024, 8:00 AM IST

নয়াদিল্লি, 13 মে: সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পাকিস্তানের প্রতি আচরণে বিস্তার পরিবর্তন লক্ষ্য করা গিয়েছে ৷ যা নিয়ে ভারতীয় কূটনৈতিকমহলে একটা চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে ৷ যেখানে মনে করা হচ্ছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দুই দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও তারও বেশি কোনও পদক্ষেপের মাধ্যমে সম্পর্ককে পুনরায় গোছাতে চাইছে ৷ পাকিস্তানের সংসদীয় নির্বাচন শেষ হওয়ার পরেই এই ইঙ্গিত মিলতে শুরু করেছে ৷ বিশেষত, 2024 সালের মার্চ মাসে জোট সরকার গঠন করে পাকিস্তান মুসলিম লিগ (এনএস)-এর নেতা শাহবাজ শারিফ প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ৷

এই বদলের ক্ষেত্রে একটা কূটনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে ৷ মনে রাখতে হবে যে, কয়েক দশক ধরে মার্কিন নিরাপত্তা মেট্রিক্সে, বিশেষ করে আফগানিস্তানে মার্কিন/ন্যাটোর স্বার্থের প্রেক্ষাপটে একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে ছিল পাকিস্তান । আর সেই পরিস্থিতি খুব বাজেভাবে বদলে গিয়েছে 2021 সালের 15 অগস্ট ৷ যেদিন ওয়াশিংটন আফগানিস্তান থেকে তাদের সেনা প্রত্যাহার করে নেয় এবং মুহূর্তের মধ্যে সমগ্র আফগানিস্তানের দখল চলে যায় তালিবান জঙ্গিদের দখলে ৷ যা এশিয়ার কূটনীতিতে বড়সড় রদবদল নিয়ে আসে ৷

আর 2015 সালের জানুয়ারি মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর, আফগানিস্তান থেকে অপমানজনক সেনা প্রত্যাহারে জো বাইডেনের জনপ্রিয়তায় ধাক্কা খায় ৷ যদিওস ন্যাটোর প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত বাইডেনের পূর্বসূরি ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে নেওয়া হয়েছিল ৷ যা পূর্ব প্রতিশ্রুতি হিসেবে বাইডেন প্রশাসন পালন করেছিল ৷ এখান থেকে প্রেসিডেন্ট বাইডেন পাকিস্তানি নেতৃত্বের সঙ্গে সম্পর্কের ইস্যুতে কিছুটা সমঝে পা-ফেলতে শুরু করেন ৷ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বা শাহবাজ শরিফের সঙ্গে বাইডেনের যোগাযোগ প্রায় বন্ধ হয়ে যায় ৷ যা সবচেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রতিফলিত হয়েছিল কূটনৈতিকমহলে ৷

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভূ-অর্থনীতি পুনঃস্থাপনের জন্য ইমরান খানের আবেদনে জো বাইডেন সাড়া দেননি ৷ 2022 সালের অক্টোবরে, বাইডেন, একটি 'অফ দ্য কাফ' মন্তব্যে, পাকিস্তানকে "সবচেয়ে বিপজ্জনক দেশগুলির মধ্যে একটি" হিসাবে বর্ণনা করেছিলেন ৷ সেই সঙ্গে পাকিস্তানের পারমাণবিক সুরক্ষা সংক্রান্ত প্রোটোকল নীতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ৷

এদিকে সীমান্ত/ডুরান্ড লাইন নিয়ে পাকিস্তান ও তালিবানের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাড়তে শুরু করে ৷ আফগানিস্তানে তালিবান পাকিস্তান-বিরোধী সন্ত্রাসবাদী সংগঠন টিটিপি-র পৃষ্ঠপোষকতা এবং আফগান উদ্বাস্তুদের ফেরানোর দাবি জানাতে থাকে ৷ এর অর্থ হল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্দেশে তালিবানদের উপর প্রভাব খাটাতে হবে, অন্যথায় পাকিস্তানের ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হবে ৷

খুব সহজেই অনুমান করা যায় যে, 2021 সালে আফগানিস্তানের পরাজয়ের পরে, মার্কিন দৃষ্টিকোণ থেকে পাকিস্তান এই অঞ্চলে তার কৌশলগত গুরুত্ব হারিয়ে ফেলেছিল ৷ আরও সঠিকভাবে বললে, এটাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দু-দিক সামলে চলার নীতির অংশ হিসাবে উল্লেখ করা যেতে পারে ৷ সেই সময় বাইডেন পাকিস্তানের নেতৃত্বকে ঠান্ডা মাথায় নিজের দিকে রেখেছিলেন ৷ যা আদতে মার্কিন পররাষ্ট্র নীতির একটা অংশ ছিল ৷ তারা ভবিষ্যতে পাকিস্তানের জন্য দরজা খোলা রাখার কৌশল নিয়েছিল ৷

জো বাইডেনের মনোভাবের উল্লেখযোগ্য বদল দেখা গিয়েছিল মার্চ মাসের শেষের দিকে ৷ যখন মার্চের শুরুতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শাহবাজ শরিফ শপথ নেন ৷ তার কয়েক সপ্তাহ পরেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট শরিফকে ব্যক্তিগতভাবে একটি চিঠি লেখেন ৷ যেখানে নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে জোর দেওয়া হয় ৷

সেই চিঠিতে বাইডেন লেখেন, "আমাদের দুই দেশের মধ্যে স্থায়ী বোঝাপড়া, আমাদের দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ- এমনকি বিশ্ববাসীর জন্য এবং বিশ্ব ও আঞ্চলিক স্তরে পাকিস্তানের উপর আসা চাপে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সবসময় তাদের সঙ্গে থাকতে প্রস্তুত ৷" সেই সঙ্গে ওই চিঠিতে দৃঢ় নিরাপত্তা, সকলের জন্য শিক্ষা ও পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয়কে যুক্ত করেন জো বাইডেন ৷

পাকিস্তান নেতৃত্বের প্রতি বাইডেনের এই আচরণ 2024 সালে তার চার বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার দিকে বদলেছে ৷ কিছু পর্যবেক্ষক তাই এটিকে কূটনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পদক্ষেপ হিসাবে দেখছে ৷ এখানে উল্লেখ্য যে, গুরুত্বপূর্ণ এই চিঠিটি ইসরাইল-হামাস সংঘর্ষের পটভূমিতে পাঠিয়েছিলেন বাইডেন ৷ এমনকি ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি মধ্যপ্রাচ্যে বৃহত্তর সংঘাতের সম্ভাব্য ইঙ্গিত ৷ সেই সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের পাকিস্তানের প্রতি নরম মনোভাব যথেষ্ঠ গুরুত্বপূর্ণ ৷

আরও পড়ুন:

  1. কঠিন সময়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পাশে থাকার বার্তা মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের
  2. মার্কিন-চিন সম্পর্কে আসছে নয়া বদল, ভারতের উপর কী প্রভাব?
  3. সাইবার সুরক্ষায় ভারতের কাঁটা চিন, জরুরি আরও নিরাপত্তা; পড়ুন বিশেষজ্ঞের বিশ্লেষণ

নয়াদিল্লি, 13 মে: সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পাকিস্তানের প্রতি আচরণে বিস্তার পরিবর্তন লক্ষ্য করা গিয়েছে ৷ যা নিয়ে ভারতীয় কূটনৈতিকমহলে একটা চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে ৷ যেখানে মনে করা হচ্ছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দুই দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও তারও বেশি কোনও পদক্ষেপের মাধ্যমে সম্পর্ককে পুনরায় গোছাতে চাইছে ৷ পাকিস্তানের সংসদীয় নির্বাচন শেষ হওয়ার পরেই এই ইঙ্গিত মিলতে শুরু করেছে ৷ বিশেষত, 2024 সালের মার্চ মাসে জোট সরকার গঠন করে পাকিস্তান মুসলিম লিগ (এনএস)-এর নেতা শাহবাজ শারিফ প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ৷

এই বদলের ক্ষেত্রে একটা কূটনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে ৷ মনে রাখতে হবে যে, কয়েক দশক ধরে মার্কিন নিরাপত্তা মেট্রিক্সে, বিশেষ করে আফগানিস্তানে মার্কিন/ন্যাটোর স্বার্থের প্রেক্ষাপটে একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে ছিল পাকিস্তান । আর সেই পরিস্থিতি খুব বাজেভাবে বদলে গিয়েছে 2021 সালের 15 অগস্ট ৷ যেদিন ওয়াশিংটন আফগানিস্তান থেকে তাদের সেনা প্রত্যাহার করে নেয় এবং মুহূর্তের মধ্যে সমগ্র আফগানিস্তানের দখল চলে যায় তালিবান জঙ্গিদের দখলে ৷ যা এশিয়ার কূটনীতিতে বড়সড় রদবদল নিয়ে আসে ৷

আর 2015 সালের জানুয়ারি মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর, আফগানিস্তান থেকে অপমানজনক সেনা প্রত্যাহারে জো বাইডেনের জনপ্রিয়তায় ধাক্কা খায় ৷ যদিওস ন্যাটোর প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত বাইডেনের পূর্বসূরি ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে নেওয়া হয়েছিল ৷ যা পূর্ব প্রতিশ্রুতি হিসেবে বাইডেন প্রশাসন পালন করেছিল ৷ এখান থেকে প্রেসিডেন্ট বাইডেন পাকিস্তানি নেতৃত্বের সঙ্গে সম্পর্কের ইস্যুতে কিছুটা সমঝে পা-ফেলতে শুরু করেন ৷ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বা শাহবাজ শরিফের সঙ্গে বাইডেনের যোগাযোগ প্রায় বন্ধ হয়ে যায় ৷ যা সবচেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রতিফলিত হয়েছিল কূটনৈতিকমহলে ৷

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভূ-অর্থনীতি পুনঃস্থাপনের জন্য ইমরান খানের আবেদনে জো বাইডেন সাড়া দেননি ৷ 2022 সালের অক্টোবরে, বাইডেন, একটি 'অফ দ্য কাফ' মন্তব্যে, পাকিস্তানকে "সবচেয়ে বিপজ্জনক দেশগুলির মধ্যে একটি" হিসাবে বর্ণনা করেছিলেন ৷ সেই সঙ্গে পাকিস্তানের পারমাণবিক সুরক্ষা সংক্রান্ত প্রোটোকল নীতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ৷

এদিকে সীমান্ত/ডুরান্ড লাইন নিয়ে পাকিস্তান ও তালিবানের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাড়তে শুরু করে ৷ আফগানিস্তানে তালিবান পাকিস্তান-বিরোধী সন্ত্রাসবাদী সংগঠন টিটিপি-র পৃষ্ঠপোষকতা এবং আফগান উদ্বাস্তুদের ফেরানোর দাবি জানাতে থাকে ৷ এর অর্থ হল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্দেশে তালিবানদের উপর প্রভাব খাটাতে হবে, অন্যথায় পাকিস্তানের ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হবে ৷

খুব সহজেই অনুমান করা যায় যে, 2021 সালে আফগানিস্তানের পরাজয়ের পরে, মার্কিন দৃষ্টিকোণ থেকে পাকিস্তান এই অঞ্চলে তার কৌশলগত গুরুত্ব হারিয়ে ফেলেছিল ৷ আরও সঠিকভাবে বললে, এটাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দু-দিক সামলে চলার নীতির অংশ হিসাবে উল্লেখ করা যেতে পারে ৷ সেই সময় বাইডেন পাকিস্তানের নেতৃত্বকে ঠান্ডা মাথায় নিজের দিকে রেখেছিলেন ৷ যা আদতে মার্কিন পররাষ্ট্র নীতির একটা অংশ ছিল ৷ তারা ভবিষ্যতে পাকিস্তানের জন্য দরজা খোলা রাখার কৌশল নিয়েছিল ৷

জো বাইডেনের মনোভাবের উল্লেখযোগ্য বদল দেখা গিয়েছিল মার্চ মাসের শেষের দিকে ৷ যখন মার্চের শুরুতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শাহবাজ শরিফ শপথ নেন ৷ তার কয়েক সপ্তাহ পরেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট শরিফকে ব্যক্তিগতভাবে একটি চিঠি লেখেন ৷ যেখানে নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে জোর দেওয়া হয় ৷

সেই চিঠিতে বাইডেন লেখেন, "আমাদের দুই দেশের মধ্যে স্থায়ী বোঝাপড়া, আমাদের দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ- এমনকি বিশ্ববাসীর জন্য এবং বিশ্ব ও আঞ্চলিক স্তরে পাকিস্তানের উপর আসা চাপে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সবসময় তাদের সঙ্গে থাকতে প্রস্তুত ৷" সেই সঙ্গে ওই চিঠিতে দৃঢ় নিরাপত্তা, সকলের জন্য শিক্ষা ও পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয়কে যুক্ত করেন জো বাইডেন ৷

পাকিস্তান নেতৃত্বের প্রতি বাইডেনের এই আচরণ 2024 সালে তার চার বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার দিকে বদলেছে ৷ কিছু পর্যবেক্ষক তাই এটিকে কূটনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পদক্ষেপ হিসাবে দেখছে ৷ এখানে উল্লেখ্য যে, গুরুত্বপূর্ণ এই চিঠিটি ইসরাইল-হামাস সংঘর্ষের পটভূমিতে পাঠিয়েছিলেন বাইডেন ৷ এমনকি ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি মধ্যপ্রাচ্যে বৃহত্তর সংঘাতের সম্ভাব্য ইঙ্গিত ৷ সেই সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের পাকিস্তানের প্রতি নরম মনোভাব যথেষ্ঠ গুরুত্বপূর্ণ ৷

আরও পড়ুন:

  1. কঠিন সময়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পাশে থাকার বার্তা মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের
  2. মার্কিন-চিন সম্পর্কে আসছে নয়া বদল, ভারতের উপর কী প্রভাব?
  3. সাইবার সুরক্ষায় ভারতের কাঁটা চিন, জরুরি আরও নিরাপত্তা; পড়ুন বিশেষজ্ঞের বিশ্লেষণ
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.