ETV Bharat / opinion

আমেরিকাকে ফের ‘মহান’ করতে ট্রাম্পের প্রয়াস ভূ-রাজনীতিকে চিরতরে বদলে দেবে

ফের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট হতে চলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ৷ ভূ-রাজনীতিকে কোন পথে নিয়ে যাবেন তিনি ? ভারত কী আশা করতে পারে ?

US Presidential Election 2024
রিপাবলিকান প্রার্থী তথা প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মিলওয়াকির ফিসার ফোরামে 2024 রিপাবলিকান ন্যাশনাল কনভেনশনের চূড়ান্ত পর্যায় ৷ 2024-এর 18 জুলাই ৷ (এপি)
author img

By Rajkamal Rao

Published : 2 hours ago

চব্বিশ ঘণ্টা উদারপন্থীদের প্রতিরোধ, আর তা নিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যমের লাগাতার প্রচার, সবকিছুকে প্রতিহত করে ডোনাল্ড ট্রাম্প ওয়াশিংটনের স্থানীয় সময় অনুযায়ী বুধবার সকালে আমেরিকার 47তম প্রেসিডেন্ট হিসাবে পুনরায় নির্বাচিত হলেন ।

বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের পক্ষে হলিউডের অসংখ্য তারকা ছিলেন ৷ তাঁদের সমর্থন নিয়ে হ্যারিস খুবই উদ্যমী প্রচার চালিয়েছিলেন । টেলর সুইফট, বিয়ন্সে, জেনিফার লোপেজ, এমিনেম, বিলি আইলিশ, কার্ডি বি, হ্যারিসন ফোর্ড, রিচার্ড গেরে ও অপরা উইনফ্রেরা হ্যারিসকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে বসানোর জন্য যথাসাধ্য প্রচার চালিয়েছেন ৷

US Presidential Election 2024
ওয়াশিংটনের হাওয়ার্ড ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে বুধবার, নভেম্বর 6, 2024, মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস নির্বাচন নিয়ে কথা বলছেন৷ (এপি)

রাজনৈতিক দিক থেকে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও বিল ক্লিনটন এবং তাঁদের স্ত্রী মিশেল ওবামা ও হিলারি ক্লিনটন সক্রিয়ভাবে হ্যারিসের পক্ষে প্রচার চালিয়েছিলেন । প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনি এবং তাঁর মেয়ে লিজ চেনি-সহ আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা কমপ্লেক্সের 150টিরও বেশি সদস্য এবং আরও কয়েকশো রিপাবলিকানও হ্যারিসকে সমর্থন করেছিলেন ।

শেষ পর্যন্ত সবই ব্যর্থ হয়েছে ।

ট্রাম্প হ্যারিসকে ইলেক্টোরাল কলেজে 295-226-এ পরাজিত করেছেন ৷ দু’টি প্রদেশ, অ্যারিজোনা ও নেভাদায় এখনও ভোট গণনা চলছে । দু’টি প্রদেশেই ট্রাম্প এগিয়ে ৷ তাই তাঁর প্রাপ্ত ভোট আরও 20টির মতো বৃদ্ধি পেয়ে 312 পর্যন্ত যেতে পারে ৷ যাকে বিভক্ত মতামতের দেশে একটি অসাধারণ প্রাপ্তি বলা যেতেই পারে ৷ যদিও বিজয়ী হওয়ার জন্য একজন প্রার্থীর প্রয়োজন ছিল 270টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট ।

ট্রাম্প একটি পরিচিত নাম

আমেরিকায় সবচেয়ে ধনী রাজনীতিবিদদের একজন হিসাবে ট্রাম্প বিশ্বব্যাপী গল্ফ রিসর্ট, বিলাসবহুল হোটেল এবং অ্যাপার্টমেন্টের মালিক । তিনি এনবিসি/ইউনিভার্সাল-এর একটি রিয়েলিটি শো-এর তারকা হিসেবেও পরিচিতি পান ৷ 2021 সালে ফেসবুক এবং এক্স (তখন টুইটার ছিল) থেকে তাঁকে নিষিদ্ধ করা হয় ৷ তার পরপরই তিনি ট্রুথ সোশাল নামে একটি সংস্থার নিয়ন্ত্রণ নেন ৷ তার পর সেটিকে নিজের সোশাল মিডিয়া কোম্পানি হিসেবে চালু করেন ৷ সেই কোম্পানির মূল্য 7 বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি । 2016 সালে তিনি সরাসরি মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন ৷ তার আগে তিনি কোনও রাজনৈতিক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি ৷ প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন তিনি হোয়াইট হাউস থেকে বছরে মাত্র 1 ডলার বেতন হিসেবে নিতেন ৷

ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে আমেরিকার সীমান্ত নিরাপদ ছিল ৷ সেখানে সবচেয়ে কম অবৈধ অভিবাসী প্রবেশ করতে পেরেছিল ৷ মুদ্রাস্ফীতি কম ছিল এবং তাঁর পুরো মেয়াদে কোনও নতুন যুদ্ধ হয়নি । আমদানির উপর নির্ভর না-করেই প্রয়োজনীয় সমস্ত তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদনের মাধ্যমে ডিসেম্বর 2019-এ আমেরিকা প্রথমবারের মতো শক্তিক্ষেত্রে স্বাধীন হয়েছিল । ট্রাম্প একটি শক্তিশালী আমেরিকান সামরিক বাহিনীতে বিশ্বাস করেন এবং দেশের বিমান বাহিনীর পরিপূরক হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ বাহিনী তৈরি করেন ।

ম্যাগা (মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন) ম্যাজিক

ট্রাম্প ভোটারদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে তিনি আমেরিকাকে আবার মহান দেশে (মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন বা ম্যাগা) পরিণত করবেন ৷ একজন প্রাক্তন ব্যবসায়ী ও দ্য আর্ট অফ দ্য ডিল-এর লেখক হিসাবে তিনি আমেরিকাকে ব্যবসার মতো চালাতে চান ৷ বিদেশি সরকার এবং সংস্থাগুলির সঙ্গে এমন শর্তে তিনি চুক্তি করতে চান, যেখানে সাধারণ জ্ঞানের উপর ভিত্তি করে সবসময় ইনসেনটিভ ও ট্যারিফ বা শুল্কের মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনুকূলে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় ৷

US Presidential Election 2024
ব্রিটেনের সংবাদপত্রের প্রথম পাতায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের খবর৷ 7 নভেম্বর লন্ডনে৷ (এপি)

গত মাসে শিকাগোর ইকোনমিক ক্লাবে বক্তৃতায় তিনি প্রকাশ করেছিলেন কীভাবে তিনি তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদ চালাবেন । টয়োটার মতো কোনও বিদেশি গাড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থা যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একটি নতুন কারখানায় বিনিয়োগ করে, তাহলে তাদের শুধুমাত্র 15 শতাংশ হারে কর দিতে হবে । অথচ আমেরিকার বর্তমান কর্পোরেট করের হার 21 শতাংশ । যদি কোনও দেশ নিজেদের লাভের জন্য আমেরিকাকে সস্তায় পণ্য দেয়, তাহলে সেই দেশকে বেশি শুল্ক দিতে হবে ৷

দ্বিতীয় ট্রাম্প প্রশাসনের সময় ভারতের জন্য কী অপেক্ষা করছে ?

ট্রাম্প-মোদি বন্ধুত্ব সাহায্য করতে পারে

একজন ব্যবসায়ী হিসাবে ট্রাম্প যেকোনও সম্পর্কের মূল্যায়ন করেন ৷ আর একজন ভারতীয় নেতা এবং একজন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট, ট্রাম্প-মোদির মধ্যে সম্পর্ক বেশ উল্লেখযোগ্য । ট্রাম্প 2019 সালের সেপ্টেম্বরে হিউস্টনে হাউডি মোদি সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন ৷ সেটাই প্রথমবার ছিল, যখন কোনও মার্কিন প্রেসিডেন্ট কোনও সম্প্রদায়ের সমাবেশে অংশ নিয়েছিলেন । পাঁচ মাস পরে কোভিড-19 সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ার ঠিক আগে ট্রাম্প প্রথমবার ভারত সফরে আসেন এবং নরেন্দ্র মোদি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ‘নমস্তে ট্রাম্প’ সমাবেশে যোগ দেন । দু’টি সমাবেশেই অসাধারণ দর্শক সমাগম হয়েছিল ৷

মোদি ট্রাম্পের কাছ থেকে কিছু ক্ষেত্রে ছাড় পেতে পারেন ৷ যেমন শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তির জন্য প্রযুক্তি হস্তান্তর ৷ তার পরও ভারতের সতর্কতার সঙ্গে এগিয়ে যাওয়া উচিত ৷ মনে রাখা উচিত যে ট্রাম্প ভারতকে শাস্তি দিতে দ্বিধা করবেন না, যদি কোনও ক্ষেত্রে ট্রাম্প মনে করেন যে সেই সিদ্ধান্ত আমেরিকার সর্বোত্তম স্বার্থে হবে ।

ট্রাম্প ভারতীয় রফতানিতে শুল্ক আরোপ করতে পারেন

ট্রাম্পের অর্থনৈতিক রূপান্তর দলের প্রধান হাওয়ার্ড লুটনিক সিএনবিসি-তে একটি সহজ নিয়মের রূপরেখা দিয়েছেন, যা শুল্ক সম্পর্কে ট্রাম্পের দর্শন ব্যাখ্যা করে ৷ তিনি বলেন, "আমাদের তৈরি করা জিনিসগুলিতে শুল্ক আরোপ করা উচিত এবং আমরা যা করি না, তার উপর শুল্ক বসানো উচিত নয় ।"

কোন ভারতীয় রফতানি এতে প্রভাবিত হতে পারে ? 2022-2023 সালে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রফতানি প্রায় 80 বিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুমান করা হয়েছিল । ফার্মা সেক্টরে রফতানির পরিমাণ প্রায় 12 বিলিয়ন মার্কিন ডলার ৷ এক্ষেত্রে শুল্ক আরোপ করার সম্ভাবনা নেই ৷ কারণ, আমেরিকাতে স্বাস্থ্য পরিষেবার খরচ ইতিমধ্যেই বেশি । বেশি শুল্কের জন্য ভারতীয় নির্মাতারা আমেরিকান ক্রেতাদের জন্য দাম বৃদ্ধি করুক, সেটা ট্রাম্প চাইবেন না ৷ আমাদের মনে রাখা উচিত যে ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গিতে আমেরিকা সর্বদা প্রথমে আসে ।

US Presidential Election 2024
ডোনাল্ড ট্রাম্প ফ্লা-এর পাম বিচে তাঁর মার-এ-লাগো এস্টেটে সাংবাদিক বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন৷ 2024 এর 29 অক্টোবর৷ (এপি)

রত্ন ও গয়না শিল্প, বিশেষ করে হিরে রফতানিতে শুল্ক আরোপ করার সম্ভাবনা নেই ৷ কারণ, আমেরিকায় এই ধরনের কোনও শিল্প নেই ৷ এই শিল্পে প্রতি বছর 10 বিলিয়ন মার্কিন ডলার রফতানি হয় ৷

ট্রাম্প যদি উদ্বিগ্ন হন যে আমেরিকান কোম্পানিগুলি ভারতে অত্যধিক প্রযুক্তি এবং ব্যাক-অ্যান্ড কাজ আউটসোর্স করছে, যার ফলে আমেরিকানরা চাকরি হারাচ্ছে, তাহলে তিনি ভারতীয় প্রযুক্তি বিক্রেতাদের উপর শুল্ক আরোপ করতে পারেন । এই ধরনের পদক্ষেপ ভারতের লাভ কমিয়ে দেবে ৷ আমেরিকান গ্রাহকদের কাছ থেকে ওই শুল্কের টাকা ঘুরপথে নিয়ে একমাত্র সেই ধাক্কা সামলানো যেতে পারে ৷ কিন্তু এই কাজ করা বেশ কঠিন । ভারতে কম অপারেটিং মার্জিনের অর্থ হতে পারে আরও বেশি চাহিদাপূর্ণ কর্মক্ষেত্র, এমনকি বর্তমানের চেয়েও বেশি হতে পারে ।

বস্ত্র ও পোশাক (রফতানির পরিমাণ 16-18 বিলিয়ন মার্কিন ডলার), অটোমোবাইল ও উপাদান (রফতানির পরিমাণ 5-7 বিলিয়ন মার্কিন ডলার) এবং মশলা ও সামুদ্রিক খাবারের মতো কৃষি পণ্য (রফতানির পরিমাণ 5 বিলিয়ন মার্কিন ডলার) - এগুলির উপর ট্রাম্প শুল্কের বোঝা চাপাতে পারেন ৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা করলে এই সমস্যার সমাধান হতে পারে ৷

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ হবে

ট্রাম্প বারবার রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য ইউক্রেনে বিলিয়ন বিলিয়ন অর্থ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ৷ তিনি 24 ঘন্টার মধ্যে যুদ্ধ শেষ করে দেবেন বলেও জানিয়েছিলেন । আমেরিকা ইতিমধ্যেই যুদ্ধের জন্য 200 বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করেছে ৷ ট্রাম্প মনে করেন আমেরিকার পরিকাঠামোর উন্নতিতে ওই টাকা ব্যবহার করলে আরও ভালো হতো ।

রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা করার পর থেকে প্রধানমন্ত্রী মোদি একটি সূক্ষ্ম ভারসাম্য বজায় রেখে কাজ করেছেন । মোদি কখনও বলেননি যে রাশিয়ার দোষ ছিল ৷ কিন্তু ধারাবাহিকভাবে বলেছেন যে যুদ্ধ বন্ধ করে শান্তি আলোচনা শুরুর উপর নজর দেওয়া উচিত ৷ বাইডেন-হ্যারিস প্রশাসন রাশিয়া নিয়ে ভারতের অবস্থানকে ঘৃণা করেছিল ৷ এমনকী ভারতের বিরুদ্ধে গৌণ অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার হুমকিও দিয়েছিল ৷ এই নীতি হ্যারিস জয়ী হলে অব্যাহত থাকত ।

US Presidential Election 2024
ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয় নিয়ে সংবাদপত্রের প্রথম পাতার খবর৷ (এপি)

যুদ্ধ শেষ হলে ট্রাম্প আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার শাসনকে সরিয়ে দেবেন ৷ রাশিয়ান তেল সরবরাহের ক্ষেত্রকে আরও সহজ করবেন ৷ বিশ্বব্যাপী তেলের উৎপাদন বৃদ্ধি করবেন ও পাম্পের দাম কমিয়ে দেবেন । ভারতের অর্থমন্ত্রক চায় পাম্প থেকে জিএসটির মাধ্যমে রাজস্ব আসতে থাকে ৷ তাই বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমলেও পেট্রল, ডিজেল এবং গ্যাসের দাম কমানোর সম্ভাবনা নেই ৷ তবে এটা ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্কিত নয় ৷ এটা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় ।

সরবরাহ শৃঙ্খলে বৈচিত্র আনার প্রচেষ্টা ভারতকে সাহায্য করবে

ট্রাম্প চিনকে একটি উল্লেখযোগ্য হুমকি হিসেবে দেখেন এবং বিশ্বের সরবরাহ শৃঙ্খলকে চিন থেকে দূরে সরিয়ে বৈচিত্র্য আনতে ভারতে বিনিয়োগ করতে ইচ্ছুক । ট্রাম্প প্রশাসন আমেরিকান কোম্পানিগুলিকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক প্রসারিত করতে এবং একটি প্রাণবন্ত উৎপাদন অর্থনীতি হিসাবে ভারতের অবস্থান বৃদ্ধিতে সাহায্য করতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে ৷

এইচ-1বি, গ্রিন কার্ড ও ফ্যামিলি ভিসা

ট্রাম্প বারবার বলেছেন যে তিনি অবৈধ অভিবাসীদের নির্বাসন দেবেন, তবে তিনি বৈধ অভিবাসনের পক্ষে । ট্রাম্প ইলন মাস্কের একজন ভক্ত, যিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হয়েছিলেন । পেপ্যাল, টেসলা, স্পেসএক্স ও স্পেসলিংকের প্রতিষ্ঠাতা এবং এক্স-এর মালিক মাস্ক ট্রাম্পের অন্যতম উৎসাহী সমর্থক । মাস্ক বারবার বলেছেন যে গ্রিন কার্ড দেওয়ার সময় মেধার ব্যাপারটা থাকা উচিত । ট্রাম্প মার্কিন কংগ্রেসের সঙ্গে একত্রে একটি চুক্তি করতে পারেন, যেখানে অবৈধ এবং আইনি অভিবাসন উভয় সমস্যারই সমাধান করা হবে ।

হ্যারিসের চেয়ে ট্রাম্প ভারতের অনেক ভালো অংশীদার

কমলা হ্যারিসের মা একজন দক্ষিণ ভারতীয় তামিল ব্রাহ্মণ ৷ হ্যারিস নিজেকে কৃষ্ণাঙ্গ হিসাবে চিহ্নিত করেছিলেন ৷ তিনি ভারত-মার্কিন সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে অর্থবহ কিছুই করেননি ।

অভিনন্দন, মিস্টার প্রেসিডেন্ট-ইলেক্ট !

চব্বিশ ঘণ্টা উদারপন্থীদের প্রতিরোধ, আর তা নিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যমের লাগাতার প্রচার, সবকিছুকে প্রতিহত করে ডোনাল্ড ট্রাম্প ওয়াশিংটনের স্থানীয় সময় অনুযায়ী বুধবার সকালে আমেরিকার 47তম প্রেসিডেন্ট হিসাবে পুনরায় নির্বাচিত হলেন ।

বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের পক্ষে হলিউডের অসংখ্য তারকা ছিলেন ৷ তাঁদের সমর্থন নিয়ে হ্যারিস খুবই উদ্যমী প্রচার চালিয়েছিলেন । টেলর সুইফট, বিয়ন্সে, জেনিফার লোপেজ, এমিনেম, বিলি আইলিশ, কার্ডি বি, হ্যারিসন ফোর্ড, রিচার্ড গেরে ও অপরা উইনফ্রেরা হ্যারিসকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে বসানোর জন্য যথাসাধ্য প্রচার চালিয়েছেন ৷

US Presidential Election 2024
ওয়াশিংটনের হাওয়ার্ড ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে বুধবার, নভেম্বর 6, 2024, মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস নির্বাচন নিয়ে কথা বলছেন৷ (এপি)

রাজনৈতিক দিক থেকে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও বিল ক্লিনটন এবং তাঁদের স্ত্রী মিশেল ওবামা ও হিলারি ক্লিনটন সক্রিয়ভাবে হ্যারিসের পক্ষে প্রচার চালিয়েছিলেন । প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনি এবং তাঁর মেয়ে লিজ চেনি-সহ আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা কমপ্লেক্সের 150টিরও বেশি সদস্য এবং আরও কয়েকশো রিপাবলিকানও হ্যারিসকে সমর্থন করেছিলেন ।

শেষ পর্যন্ত সবই ব্যর্থ হয়েছে ।

ট্রাম্প হ্যারিসকে ইলেক্টোরাল কলেজে 295-226-এ পরাজিত করেছেন ৷ দু’টি প্রদেশ, অ্যারিজোনা ও নেভাদায় এখনও ভোট গণনা চলছে । দু’টি প্রদেশেই ট্রাম্প এগিয়ে ৷ তাই তাঁর প্রাপ্ত ভোট আরও 20টির মতো বৃদ্ধি পেয়ে 312 পর্যন্ত যেতে পারে ৷ যাকে বিভক্ত মতামতের দেশে একটি অসাধারণ প্রাপ্তি বলা যেতেই পারে ৷ যদিও বিজয়ী হওয়ার জন্য একজন প্রার্থীর প্রয়োজন ছিল 270টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট ।

ট্রাম্প একটি পরিচিত নাম

আমেরিকায় সবচেয়ে ধনী রাজনীতিবিদদের একজন হিসাবে ট্রাম্প বিশ্বব্যাপী গল্ফ রিসর্ট, বিলাসবহুল হোটেল এবং অ্যাপার্টমেন্টের মালিক । তিনি এনবিসি/ইউনিভার্সাল-এর একটি রিয়েলিটি শো-এর তারকা হিসেবেও পরিচিতি পান ৷ 2021 সালে ফেসবুক এবং এক্স (তখন টুইটার ছিল) থেকে তাঁকে নিষিদ্ধ করা হয় ৷ তার পরপরই তিনি ট্রুথ সোশাল নামে একটি সংস্থার নিয়ন্ত্রণ নেন ৷ তার পর সেটিকে নিজের সোশাল মিডিয়া কোম্পানি হিসেবে চালু করেন ৷ সেই কোম্পানির মূল্য 7 বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি । 2016 সালে তিনি সরাসরি মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন ৷ তার আগে তিনি কোনও রাজনৈতিক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি ৷ প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন তিনি হোয়াইট হাউস থেকে বছরে মাত্র 1 ডলার বেতন হিসেবে নিতেন ৷

ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে আমেরিকার সীমান্ত নিরাপদ ছিল ৷ সেখানে সবচেয়ে কম অবৈধ অভিবাসী প্রবেশ করতে পেরেছিল ৷ মুদ্রাস্ফীতি কম ছিল এবং তাঁর পুরো মেয়াদে কোনও নতুন যুদ্ধ হয়নি । আমদানির উপর নির্ভর না-করেই প্রয়োজনীয় সমস্ত তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদনের মাধ্যমে ডিসেম্বর 2019-এ আমেরিকা প্রথমবারের মতো শক্তিক্ষেত্রে স্বাধীন হয়েছিল । ট্রাম্প একটি শক্তিশালী আমেরিকান সামরিক বাহিনীতে বিশ্বাস করেন এবং দেশের বিমান বাহিনীর পরিপূরক হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ বাহিনী তৈরি করেন ।

ম্যাগা (মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন) ম্যাজিক

ট্রাম্প ভোটারদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে তিনি আমেরিকাকে আবার মহান দেশে (মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন বা ম্যাগা) পরিণত করবেন ৷ একজন প্রাক্তন ব্যবসায়ী ও দ্য আর্ট অফ দ্য ডিল-এর লেখক হিসাবে তিনি আমেরিকাকে ব্যবসার মতো চালাতে চান ৷ বিদেশি সরকার এবং সংস্থাগুলির সঙ্গে এমন শর্তে তিনি চুক্তি করতে চান, যেখানে সাধারণ জ্ঞানের উপর ভিত্তি করে সবসময় ইনসেনটিভ ও ট্যারিফ বা শুল্কের মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনুকূলে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় ৷

US Presidential Election 2024
ব্রিটেনের সংবাদপত্রের প্রথম পাতায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের খবর৷ 7 নভেম্বর লন্ডনে৷ (এপি)

গত মাসে শিকাগোর ইকোনমিক ক্লাবে বক্তৃতায় তিনি প্রকাশ করেছিলেন কীভাবে তিনি তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদ চালাবেন । টয়োটার মতো কোনও বিদেশি গাড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থা যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একটি নতুন কারখানায় বিনিয়োগ করে, তাহলে তাদের শুধুমাত্র 15 শতাংশ হারে কর দিতে হবে । অথচ আমেরিকার বর্তমান কর্পোরেট করের হার 21 শতাংশ । যদি কোনও দেশ নিজেদের লাভের জন্য আমেরিকাকে সস্তায় পণ্য দেয়, তাহলে সেই দেশকে বেশি শুল্ক দিতে হবে ৷

দ্বিতীয় ট্রাম্প প্রশাসনের সময় ভারতের জন্য কী অপেক্ষা করছে ?

ট্রাম্প-মোদি বন্ধুত্ব সাহায্য করতে পারে

একজন ব্যবসায়ী হিসাবে ট্রাম্প যেকোনও সম্পর্কের মূল্যায়ন করেন ৷ আর একজন ভারতীয় নেতা এবং একজন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট, ট্রাম্প-মোদির মধ্যে সম্পর্ক বেশ উল্লেখযোগ্য । ট্রাম্প 2019 সালের সেপ্টেম্বরে হিউস্টনে হাউডি মোদি সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন ৷ সেটাই প্রথমবার ছিল, যখন কোনও মার্কিন প্রেসিডেন্ট কোনও সম্প্রদায়ের সমাবেশে অংশ নিয়েছিলেন । পাঁচ মাস পরে কোভিড-19 সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ার ঠিক আগে ট্রাম্প প্রথমবার ভারত সফরে আসেন এবং নরেন্দ্র মোদি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ‘নমস্তে ট্রাম্প’ সমাবেশে যোগ দেন । দু’টি সমাবেশেই অসাধারণ দর্শক সমাগম হয়েছিল ৷

মোদি ট্রাম্পের কাছ থেকে কিছু ক্ষেত্রে ছাড় পেতে পারেন ৷ যেমন শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তির জন্য প্রযুক্তি হস্তান্তর ৷ তার পরও ভারতের সতর্কতার সঙ্গে এগিয়ে যাওয়া উচিত ৷ মনে রাখা উচিত যে ট্রাম্প ভারতকে শাস্তি দিতে দ্বিধা করবেন না, যদি কোনও ক্ষেত্রে ট্রাম্প মনে করেন যে সেই সিদ্ধান্ত আমেরিকার সর্বোত্তম স্বার্থে হবে ।

ট্রাম্প ভারতীয় রফতানিতে শুল্ক আরোপ করতে পারেন

ট্রাম্পের অর্থনৈতিক রূপান্তর দলের প্রধান হাওয়ার্ড লুটনিক সিএনবিসি-তে একটি সহজ নিয়মের রূপরেখা দিয়েছেন, যা শুল্ক সম্পর্কে ট্রাম্পের দর্শন ব্যাখ্যা করে ৷ তিনি বলেন, "আমাদের তৈরি করা জিনিসগুলিতে শুল্ক আরোপ করা উচিত এবং আমরা যা করি না, তার উপর শুল্ক বসানো উচিত নয় ।"

কোন ভারতীয় রফতানি এতে প্রভাবিত হতে পারে ? 2022-2023 সালে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রফতানি প্রায় 80 বিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুমান করা হয়েছিল । ফার্মা সেক্টরে রফতানির পরিমাণ প্রায় 12 বিলিয়ন মার্কিন ডলার ৷ এক্ষেত্রে শুল্ক আরোপ করার সম্ভাবনা নেই ৷ কারণ, আমেরিকাতে স্বাস্থ্য পরিষেবার খরচ ইতিমধ্যেই বেশি । বেশি শুল্কের জন্য ভারতীয় নির্মাতারা আমেরিকান ক্রেতাদের জন্য দাম বৃদ্ধি করুক, সেটা ট্রাম্প চাইবেন না ৷ আমাদের মনে রাখা উচিত যে ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গিতে আমেরিকা সর্বদা প্রথমে আসে ।

US Presidential Election 2024
ডোনাল্ড ট্রাম্প ফ্লা-এর পাম বিচে তাঁর মার-এ-লাগো এস্টেটে সাংবাদিক বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন৷ 2024 এর 29 অক্টোবর৷ (এপি)

রত্ন ও গয়না শিল্প, বিশেষ করে হিরে রফতানিতে শুল্ক আরোপ করার সম্ভাবনা নেই ৷ কারণ, আমেরিকায় এই ধরনের কোনও শিল্প নেই ৷ এই শিল্পে প্রতি বছর 10 বিলিয়ন মার্কিন ডলার রফতানি হয় ৷

ট্রাম্প যদি উদ্বিগ্ন হন যে আমেরিকান কোম্পানিগুলি ভারতে অত্যধিক প্রযুক্তি এবং ব্যাক-অ্যান্ড কাজ আউটসোর্স করছে, যার ফলে আমেরিকানরা চাকরি হারাচ্ছে, তাহলে তিনি ভারতীয় প্রযুক্তি বিক্রেতাদের উপর শুল্ক আরোপ করতে পারেন । এই ধরনের পদক্ষেপ ভারতের লাভ কমিয়ে দেবে ৷ আমেরিকান গ্রাহকদের কাছ থেকে ওই শুল্কের টাকা ঘুরপথে নিয়ে একমাত্র সেই ধাক্কা সামলানো যেতে পারে ৷ কিন্তু এই কাজ করা বেশ কঠিন । ভারতে কম অপারেটিং মার্জিনের অর্থ হতে পারে আরও বেশি চাহিদাপূর্ণ কর্মক্ষেত্র, এমনকি বর্তমানের চেয়েও বেশি হতে পারে ।

বস্ত্র ও পোশাক (রফতানির পরিমাণ 16-18 বিলিয়ন মার্কিন ডলার), অটোমোবাইল ও উপাদান (রফতানির পরিমাণ 5-7 বিলিয়ন মার্কিন ডলার) এবং মশলা ও সামুদ্রিক খাবারের মতো কৃষি পণ্য (রফতানির পরিমাণ 5 বিলিয়ন মার্কিন ডলার) - এগুলির উপর ট্রাম্প শুল্কের বোঝা চাপাতে পারেন ৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা করলে এই সমস্যার সমাধান হতে পারে ৷

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ হবে

ট্রাম্প বারবার রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য ইউক্রেনে বিলিয়ন বিলিয়ন অর্থ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ৷ তিনি 24 ঘন্টার মধ্যে যুদ্ধ শেষ করে দেবেন বলেও জানিয়েছিলেন । আমেরিকা ইতিমধ্যেই যুদ্ধের জন্য 200 বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করেছে ৷ ট্রাম্প মনে করেন আমেরিকার পরিকাঠামোর উন্নতিতে ওই টাকা ব্যবহার করলে আরও ভালো হতো ।

রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা করার পর থেকে প্রধানমন্ত্রী মোদি একটি সূক্ষ্ম ভারসাম্য বজায় রেখে কাজ করেছেন । মোদি কখনও বলেননি যে রাশিয়ার দোষ ছিল ৷ কিন্তু ধারাবাহিকভাবে বলেছেন যে যুদ্ধ বন্ধ করে শান্তি আলোচনা শুরুর উপর নজর দেওয়া উচিত ৷ বাইডেন-হ্যারিস প্রশাসন রাশিয়া নিয়ে ভারতের অবস্থানকে ঘৃণা করেছিল ৷ এমনকী ভারতের বিরুদ্ধে গৌণ অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার হুমকিও দিয়েছিল ৷ এই নীতি হ্যারিস জয়ী হলে অব্যাহত থাকত ।

US Presidential Election 2024
ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয় নিয়ে সংবাদপত্রের প্রথম পাতার খবর৷ (এপি)

যুদ্ধ শেষ হলে ট্রাম্প আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার শাসনকে সরিয়ে দেবেন ৷ রাশিয়ান তেল সরবরাহের ক্ষেত্রকে আরও সহজ করবেন ৷ বিশ্বব্যাপী তেলের উৎপাদন বৃদ্ধি করবেন ও পাম্পের দাম কমিয়ে দেবেন । ভারতের অর্থমন্ত্রক চায় পাম্প থেকে জিএসটির মাধ্যমে রাজস্ব আসতে থাকে ৷ তাই বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমলেও পেট্রল, ডিজেল এবং গ্যাসের দাম কমানোর সম্ভাবনা নেই ৷ তবে এটা ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্কিত নয় ৷ এটা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় ।

সরবরাহ শৃঙ্খলে বৈচিত্র আনার প্রচেষ্টা ভারতকে সাহায্য করবে

ট্রাম্প চিনকে একটি উল্লেখযোগ্য হুমকি হিসেবে দেখেন এবং বিশ্বের সরবরাহ শৃঙ্খলকে চিন থেকে দূরে সরিয়ে বৈচিত্র্য আনতে ভারতে বিনিয়োগ করতে ইচ্ছুক । ট্রাম্প প্রশাসন আমেরিকান কোম্পানিগুলিকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক প্রসারিত করতে এবং একটি প্রাণবন্ত উৎপাদন অর্থনীতি হিসাবে ভারতের অবস্থান বৃদ্ধিতে সাহায্য করতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে ৷

এইচ-1বি, গ্রিন কার্ড ও ফ্যামিলি ভিসা

ট্রাম্প বারবার বলেছেন যে তিনি অবৈধ অভিবাসীদের নির্বাসন দেবেন, তবে তিনি বৈধ অভিবাসনের পক্ষে । ট্রাম্প ইলন মাস্কের একজন ভক্ত, যিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হয়েছিলেন । পেপ্যাল, টেসলা, স্পেসএক্স ও স্পেসলিংকের প্রতিষ্ঠাতা এবং এক্স-এর মালিক মাস্ক ট্রাম্পের অন্যতম উৎসাহী সমর্থক । মাস্ক বারবার বলেছেন যে গ্রিন কার্ড দেওয়ার সময় মেধার ব্যাপারটা থাকা উচিত । ট্রাম্প মার্কিন কংগ্রেসের সঙ্গে একত্রে একটি চুক্তি করতে পারেন, যেখানে অবৈধ এবং আইনি অভিবাসন উভয় সমস্যারই সমাধান করা হবে ।

হ্যারিসের চেয়ে ট্রাম্প ভারতের অনেক ভালো অংশীদার

কমলা হ্যারিসের মা একজন দক্ষিণ ভারতীয় তামিল ব্রাহ্মণ ৷ হ্যারিস নিজেকে কৃষ্ণাঙ্গ হিসাবে চিহ্নিত করেছিলেন ৷ তিনি ভারত-মার্কিন সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে অর্থবহ কিছুই করেননি ।

অভিনন্দন, মিস্টার প্রেসিডেন্ট-ইলেক্ট !

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.