ETV Bharat / opinion

নিম্নস্তরের বায়ু দূষণে দীর্ঘ সময় থাকলেও হতে পারে হার্ট অ্যাটাক, দাবি গবেষণায় - হার্ট অ্যাটাক

Study on Air Pollution: দূষিত বাতাসে ক্রমাগত এক্সপোজার হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায় । তবে দীর্ঘ সময় খারাপ বায়ুর মধ্যে থাকলেও তা যথেষ্ট ক্ষতিকর ৷ এমনই তথ্য উঠে এল এক গবেষণায় ৷ তৌফিক রশিদের প্রতিবেদন ৷

ETV BHARAT
ETV BHARAT
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Feb 25, 2024, 12:46 PM IST

নয়াদিল্লি, 25 ফেব্রুয়ারি: প্রতি শরৎ/শীতকালে কয়েক সপ্তাহ ধরে বেশিরভাগ ভারতীয় শহরে বায়ুর গুণমান সূচক 'সিভিয়র' বা 'তীব্র' হয়ে যায় এবং এর সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের আতঙ্কের মাত্রাও বেড়ে যায় । নিউজপ্রিন্ট এবং এয়ার টাইমে এই খারাপ বায়ুর খারাপ প্রভাব নিয়ে একের পর এক খবর উঠে আসে ৷ তবে এখন বিজ্ঞানীরা বলছেন যে, বায়ু দূষণের জন্য কোনও নিরাপদ সীমা না থাকায় আতঙ্কটি ভুল পথে চালিত হয় । এই সপ্তাহে ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় বলা হয়েছে যে, শুধুমাত্র উচ্চমাত্রার বায়ু দূষণ কমালেই সমস্যা মিটবে না ৷ ক্রমাগত নিম্ন বা মাঝারি মাত্রার বায়ু দূষণের মধ্যে থাকলে সেটাও রক্তনালীর ক্ষতি করে । বায়ু দূষণ এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকির মধ্যে বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে ।

সিনিয়র কার্ডিয়োলজিস্ট এবং পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশন অফ ইন্ডিয়া (PHFI)-এর প্রতিষ্ঠাতা বলেছেন, "নিম্ন স্তরের বায়ু দূষণের মধ্যে প্রতিনিয়ত থাকলেও তা রক্তনালীর ক্ষতি করতে পারে এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়াতে পারে ৷"

গবেষণা কী বলছে ?

ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত একটি নতুন গবেষণায় বলা হয়েছে, দূষিত বায়ু এবং হৃদপিণ্ডের স্বাস্থ্যের মধ্যে ক্রমাগত সম্পর্ক রয়েছে । তা সে কম সময়ের জন্য গুরুতর দূষণের মাত্রার মধ্যে কেউ থাকুন, বা কেউ বেশি সময় ধরে কম দূষণযুক্ত বাতাসে থাকুন, ঝুঁকি উভয় ক্ষেত্রেই রয়েছে ৷ আমরা যদি বায়ুর মানের জন্য হু-এর নির্দেশিকা মেনে চলি, তবেই কেবলমাত্র সুবিধাগুলি অর্জন করা যেতে পারে ।

গবেষণাটি হল, 'সূক্ষ্ম কণা পদার্থের দীর্ঘস্থায়ী এক্সপোজার এবং গুরুতর কার্ডিওভাসকুলার রোগের জন্য হাসপাতালে ভর্তির ঝুঁকি: জনসংখ্যা ভিত্তিক সমন্বিত গবেষণা'৷ গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, সূক্ষ্ম আকারের কণা পিএম 2.5-এর দীর্ঘস্থায়ী এক্সপোজার কার্ডিয়োভাসকুলার রোগের ঝুঁকি বাড়ায় এবং এর কোনও নিরাপদ সীমা নেই । পিএম 2.5-এর সংস্পর্শে আসা রোগীদের মধ্যে কার্ডিয়াক অ্যারিথমিয়া এবং হার্ট ফেলিওরের পরিস্থিতি সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার মধ্যে রয়েছে । কার্ডিয়াক অ্যারিথমিয়া হল এমন একটি অবস্থা যেখানে হৃদস্পন্দন অনিয়মিত বা অস্বাভাবিক ছন্দের সঙ্গে হয় । গবেষকরা আরও বলেন, হু-এর বায়ুর মানের সীমা ≤5 µg/m3 মেনে চললে তাতে যথেষ্ট সুবিধা পাওয়া যেতে পারে ৷

পিএম বা এসপিএম 2.5 কী ?

≤2.5 µm (PM2.5) এর অ্যারোডাইনামিক ব্যাস-সহ কণা পদার্থ হল পরিবেষ্টিত বায়ু দূষণের একটি প্রধান উপাদান, যা আমরা কয়েক দশক ধরে জানি । আমরা আরও জানি যে এই কণাগুলি এতটাই ছোট যে গভীরভাবে শ্বাস নেওয়ার ক্ষেত্রে তা ফুসফুসে প্রবেশ করতে পারে এবং রক্ত ​​প্রবাহে প্রবেশ করতে পারে, যার ফলে পদ্ধতিগত প্রদাহ, ভাসোকনস্ট্রিকশন, কার্ডিয়াক বৈদ্যুতিক পরিবর্তন, এবং রক্ত ​​জমাট বাঁধার মতো স্বাস্থ্য সমস্যাগুলির একটি পরিসরের দিকে পরিচালিত করতে পারে, যার সবগুলিই কার্ডিয়োভাসকুলার ডিজিজের (সিভিডি)-এ অবদান রাখতে পারে । প্রকৃতপক্ষে এই কণাকে কার্ডিয়াক রোগের প্রধান পরিবেশগত ঝুঁকির কারণ বলা হয়েছে । এই দুটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, পিএম 2.5-এর সংস্পর্শে প্রতিকূল কার্ডিয়োভাসকুলার অবস্থার সৃষ্টি করতে পারে এবং কার্ডিয়োভাসকুলার সম্পর্কিত কারণে হাসপাতালে ভর্তি এবং মৃত্যুহারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে ৷

সাধারণ মানুষের ধারণা

ডা. রেড্ডি বলেছেন যে, একিউআইয়ের স্তর 100 থেকে 150-এর মধ্যে থাকলে লোকেরা মনে করে যে, তাতে শরীরের কোনও ঝুঁকি নেই ৷ তবে তাঁর কথায়, "আমরা প্রায়ই লোকেদের বলতে শুনি যে, একিউআই বেশি হলে তা স্বাস্থ্যের জন্য ভয়ংকর । একিউআইয়ের মাত্রা 400 প্লাসে পৌঁছলে আতঙ্ক শুরু হয় । আমরা প্রায়শই অনুমান করি, একিউআই আমাদের প্রায়শই 100 থেকে 150 হলে ঠিক আছে । কিন্তু সেটা ঠিক ভাবনা নয় ৷"

বিষয়টি বুঝিয়ে ডা. রেড্ডি বলেছেন, "এই গবেষণা দেখায় যে, নিম্ন স্তরের বায়ু দূষণের সংস্পর্শ একটি প্রদাহজনক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে । এটি একটি ডোজ প্রতিক্রিয়া সম্পর্কের মতো । দূষণের বর্ধিত মাত্রার একটি এক্সপোজার হৃৎপিণ্ডের ভেসেল ও হার্টের ক্ষতি বাড়ায় । কিন্তু এক্সপোজারের ক্রমবর্ধমান সময়কালও গুরুত্বপূর্ণ । বছরে ছয় থেকে আট মাস চলে মাঝারি বা তুলনামূলকভাবে নিম্ন স্তরের এক্সপোজার ৷ তার মধ্যে থাকলেও রক্তনালীতে প্রদাহ হতে পারে এবং তা হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায় ৷" তিনি বলেন, এক বা দুই দিনের জন্য 600 বা 700 একিআইআয়ের তীব্র এক্সপোজারে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যায়, যার ফলে একজনের তীব্র ভাবে রক্ত জমাট বাঁধা এবং হার্ট অ্যাটাক হতে পারে ।

ডা. রেড্ডির কথায়, "খুব সাধারণ মাত্রায় এক্সপোজার দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকলে তাতেও রক্তনালীগুলিতে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি ৷ কম দিন অধিক মাত্রায় দূষণে থাকলেও একই প্রতিক্রিয়া হয় ৷ উদাহরণস্বরূপ, উচ্চ রক্তচাপ 140/90 দ্বারা সংজ্ঞায়িত করা হয় ৷ কিন্তু এর মানে এই নয় যে, 130/85 কোনও ঝুঁকি বহন করে না। 130/85-ও বেশি ঝুঁকি বহন করে ।"

ডা. রেড্ডি বলেন, অন্যান্য অবস্থাও গুরুত্বপূর্ণ, যেমন আপনার ইতিমধ্যেই যদি ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপ থাকে, তাহলে আপনার রক্তনালীগুলি ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, মাঝারি মাত্রার বায়ু দূষণ আরও ক্ষতিকারক হতে পারে ।

গবেষণায় আর কী আছে ?

বায়ু দূষণ এবং সামগ্রিক কার্ডিয়োভাসকুলার স্বাস্থ্যের জন্য কোনও নিরাপদ সীমা বিদ্যমান নেই এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বায়ুর মানের নির্দেশিকা মেনে চলার মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য সুবিধাগুলি অর্জন করা যেতে পারে ৷ এখানে ধারণাটি শুধুমাত্র উচ্চ স্তরের বায়ু দূষণ, এমনকি নিম্ন স্তরের বায়ুর উপর সুস্থতা নির্ভর করে না । দূষণ রক্তের ক্ষতির কারণ হতে পারে এবং তাই হার্ট অ্যাটাক হতে পারে । আমরা যা করতে পারি তা হল, বায়ু দূষণের মাত্রা যতটা সম্ভব কমিয়ে আনা ।

ফাইন পার্টিকুলেট ম্যাটার (PM2.5) হল একটি মূল বায়ু দূষণকারী এবং এটি কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজের জন্য একটি প্রাথমিক পরিবেশগত ঝুঁকির কারণ হিসাবে স্বীকৃত ৷ পিএম 2.5-এর দীর্ঘস্থায়ী এক্সপোজার, এক বছর বা তার বেশি সময় ধরে হলে তাতেও ক্ষতি অনেক বেশি ।

ডা. রেড্ডির পরামর্শ

একটি সাধারণ নীতি এবং পাবলিক সিস্টেমের প্রতিক্রিয়া থাকতে হবে যেখানে আমাদের সবার এক্সপোজারের মাত্রা কমাতে হবে ।

এছাড়াও প্রতিটি ব্যক্তি প্রতিক্রিয়া রয়েছে যা দূষিত বায়ুতে আপনার এক্সপোজারকে সীমাবদ্ধ করে ।

আবহাওয়া একটু পরিষ্কার হলেই বাইরে যান, যখন বাতাস ধোঁয়াটে রয়েছে, তখন ঘরেই থাকুন । বাইরে বের হলে মাস্ক ব্যবহার করুন ।

আরও পড়ুন:

  1. কলকাতার বাতাসে বাড়ল দূষণ, শরীরে ক্ষতিকারক প্রভাব পড়ার আশংকায় পরিবেশবিজ্ঞানীরা
  2. জোড়-বিজোড় প্রকল্প শুধু দেখানোর জন্য, দিল্লির বায়ু দূষণ নিয়ে মত সুপ্রিম কোর্টের
  3. দিল্লির বিষবায়ু মোকাবিলায় 'কৃত্রিম বৃষ্টি' আনছে আইআইটি-কানপুর, বিষয়টা কী ?

নয়াদিল্লি, 25 ফেব্রুয়ারি: প্রতি শরৎ/শীতকালে কয়েক সপ্তাহ ধরে বেশিরভাগ ভারতীয় শহরে বায়ুর গুণমান সূচক 'সিভিয়র' বা 'তীব্র' হয়ে যায় এবং এর সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের আতঙ্কের মাত্রাও বেড়ে যায় । নিউজপ্রিন্ট এবং এয়ার টাইমে এই খারাপ বায়ুর খারাপ প্রভাব নিয়ে একের পর এক খবর উঠে আসে ৷ তবে এখন বিজ্ঞানীরা বলছেন যে, বায়ু দূষণের জন্য কোনও নিরাপদ সীমা না থাকায় আতঙ্কটি ভুল পথে চালিত হয় । এই সপ্তাহে ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় বলা হয়েছে যে, শুধুমাত্র উচ্চমাত্রার বায়ু দূষণ কমালেই সমস্যা মিটবে না ৷ ক্রমাগত নিম্ন বা মাঝারি মাত্রার বায়ু দূষণের মধ্যে থাকলে সেটাও রক্তনালীর ক্ষতি করে । বায়ু দূষণ এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকির মধ্যে বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে ।

সিনিয়র কার্ডিয়োলজিস্ট এবং পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশন অফ ইন্ডিয়া (PHFI)-এর প্রতিষ্ঠাতা বলেছেন, "নিম্ন স্তরের বায়ু দূষণের মধ্যে প্রতিনিয়ত থাকলেও তা রক্তনালীর ক্ষতি করতে পারে এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়াতে পারে ৷"

গবেষণা কী বলছে ?

ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত একটি নতুন গবেষণায় বলা হয়েছে, দূষিত বায়ু এবং হৃদপিণ্ডের স্বাস্থ্যের মধ্যে ক্রমাগত সম্পর্ক রয়েছে । তা সে কম সময়ের জন্য গুরুতর দূষণের মাত্রার মধ্যে কেউ থাকুন, বা কেউ বেশি সময় ধরে কম দূষণযুক্ত বাতাসে থাকুন, ঝুঁকি উভয় ক্ষেত্রেই রয়েছে ৷ আমরা যদি বায়ুর মানের জন্য হু-এর নির্দেশিকা মেনে চলি, তবেই কেবলমাত্র সুবিধাগুলি অর্জন করা যেতে পারে ।

গবেষণাটি হল, 'সূক্ষ্ম কণা পদার্থের দীর্ঘস্থায়ী এক্সপোজার এবং গুরুতর কার্ডিওভাসকুলার রোগের জন্য হাসপাতালে ভর্তির ঝুঁকি: জনসংখ্যা ভিত্তিক সমন্বিত গবেষণা'৷ গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, সূক্ষ্ম আকারের কণা পিএম 2.5-এর দীর্ঘস্থায়ী এক্সপোজার কার্ডিয়োভাসকুলার রোগের ঝুঁকি বাড়ায় এবং এর কোনও নিরাপদ সীমা নেই । পিএম 2.5-এর সংস্পর্শে আসা রোগীদের মধ্যে কার্ডিয়াক অ্যারিথমিয়া এবং হার্ট ফেলিওরের পরিস্থিতি সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার মধ্যে রয়েছে । কার্ডিয়াক অ্যারিথমিয়া হল এমন একটি অবস্থা যেখানে হৃদস্পন্দন অনিয়মিত বা অস্বাভাবিক ছন্দের সঙ্গে হয় । গবেষকরা আরও বলেন, হু-এর বায়ুর মানের সীমা ≤5 µg/m3 মেনে চললে তাতে যথেষ্ট সুবিধা পাওয়া যেতে পারে ৷

পিএম বা এসপিএম 2.5 কী ?

≤2.5 µm (PM2.5) এর অ্যারোডাইনামিক ব্যাস-সহ কণা পদার্থ হল পরিবেষ্টিত বায়ু দূষণের একটি প্রধান উপাদান, যা আমরা কয়েক দশক ধরে জানি । আমরা আরও জানি যে এই কণাগুলি এতটাই ছোট যে গভীরভাবে শ্বাস নেওয়ার ক্ষেত্রে তা ফুসফুসে প্রবেশ করতে পারে এবং রক্ত ​​প্রবাহে প্রবেশ করতে পারে, যার ফলে পদ্ধতিগত প্রদাহ, ভাসোকনস্ট্রিকশন, কার্ডিয়াক বৈদ্যুতিক পরিবর্তন, এবং রক্ত ​​জমাট বাঁধার মতো স্বাস্থ্য সমস্যাগুলির একটি পরিসরের দিকে পরিচালিত করতে পারে, যার সবগুলিই কার্ডিয়োভাসকুলার ডিজিজের (সিভিডি)-এ অবদান রাখতে পারে । প্রকৃতপক্ষে এই কণাকে কার্ডিয়াক রোগের প্রধান পরিবেশগত ঝুঁকির কারণ বলা হয়েছে । এই দুটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, পিএম 2.5-এর সংস্পর্শে প্রতিকূল কার্ডিয়োভাসকুলার অবস্থার সৃষ্টি করতে পারে এবং কার্ডিয়োভাসকুলার সম্পর্কিত কারণে হাসপাতালে ভর্তি এবং মৃত্যুহারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে ৷

সাধারণ মানুষের ধারণা

ডা. রেড্ডি বলেছেন যে, একিউআইয়ের স্তর 100 থেকে 150-এর মধ্যে থাকলে লোকেরা মনে করে যে, তাতে শরীরের কোনও ঝুঁকি নেই ৷ তবে তাঁর কথায়, "আমরা প্রায়ই লোকেদের বলতে শুনি যে, একিউআই বেশি হলে তা স্বাস্থ্যের জন্য ভয়ংকর । একিউআইয়ের মাত্রা 400 প্লাসে পৌঁছলে আতঙ্ক শুরু হয় । আমরা প্রায়শই অনুমান করি, একিউআই আমাদের প্রায়শই 100 থেকে 150 হলে ঠিক আছে । কিন্তু সেটা ঠিক ভাবনা নয় ৷"

বিষয়টি বুঝিয়ে ডা. রেড্ডি বলেছেন, "এই গবেষণা দেখায় যে, নিম্ন স্তরের বায়ু দূষণের সংস্পর্শ একটি প্রদাহজনক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে । এটি একটি ডোজ প্রতিক্রিয়া সম্পর্কের মতো । দূষণের বর্ধিত মাত্রার একটি এক্সপোজার হৃৎপিণ্ডের ভেসেল ও হার্টের ক্ষতি বাড়ায় । কিন্তু এক্সপোজারের ক্রমবর্ধমান সময়কালও গুরুত্বপূর্ণ । বছরে ছয় থেকে আট মাস চলে মাঝারি বা তুলনামূলকভাবে নিম্ন স্তরের এক্সপোজার ৷ তার মধ্যে থাকলেও রক্তনালীতে প্রদাহ হতে পারে এবং তা হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায় ৷" তিনি বলেন, এক বা দুই দিনের জন্য 600 বা 700 একিআইআয়ের তীব্র এক্সপোজারে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যায়, যার ফলে একজনের তীব্র ভাবে রক্ত জমাট বাঁধা এবং হার্ট অ্যাটাক হতে পারে ।

ডা. রেড্ডির কথায়, "খুব সাধারণ মাত্রায় এক্সপোজার দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকলে তাতেও রক্তনালীগুলিতে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি ৷ কম দিন অধিক মাত্রায় দূষণে থাকলেও একই প্রতিক্রিয়া হয় ৷ উদাহরণস্বরূপ, উচ্চ রক্তচাপ 140/90 দ্বারা সংজ্ঞায়িত করা হয় ৷ কিন্তু এর মানে এই নয় যে, 130/85 কোনও ঝুঁকি বহন করে না। 130/85-ও বেশি ঝুঁকি বহন করে ।"

ডা. রেড্ডি বলেন, অন্যান্য অবস্থাও গুরুত্বপূর্ণ, যেমন আপনার ইতিমধ্যেই যদি ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপ থাকে, তাহলে আপনার রক্তনালীগুলি ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, মাঝারি মাত্রার বায়ু দূষণ আরও ক্ষতিকারক হতে পারে ।

গবেষণায় আর কী আছে ?

বায়ু দূষণ এবং সামগ্রিক কার্ডিয়োভাসকুলার স্বাস্থ্যের জন্য কোনও নিরাপদ সীমা বিদ্যমান নেই এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বায়ুর মানের নির্দেশিকা মেনে চলার মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য সুবিধাগুলি অর্জন করা যেতে পারে ৷ এখানে ধারণাটি শুধুমাত্র উচ্চ স্তরের বায়ু দূষণ, এমনকি নিম্ন স্তরের বায়ুর উপর সুস্থতা নির্ভর করে না । দূষণ রক্তের ক্ষতির কারণ হতে পারে এবং তাই হার্ট অ্যাটাক হতে পারে । আমরা যা করতে পারি তা হল, বায়ু দূষণের মাত্রা যতটা সম্ভব কমিয়ে আনা ।

ফাইন পার্টিকুলেট ম্যাটার (PM2.5) হল একটি মূল বায়ু দূষণকারী এবং এটি কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজের জন্য একটি প্রাথমিক পরিবেশগত ঝুঁকির কারণ হিসাবে স্বীকৃত ৷ পিএম 2.5-এর দীর্ঘস্থায়ী এক্সপোজার, এক বছর বা তার বেশি সময় ধরে হলে তাতেও ক্ষতি অনেক বেশি ।

ডা. রেড্ডির পরামর্শ

একটি সাধারণ নীতি এবং পাবলিক সিস্টেমের প্রতিক্রিয়া থাকতে হবে যেখানে আমাদের সবার এক্সপোজারের মাত্রা কমাতে হবে ।

এছাড়াও প্রতিটি ব্যক্তি প্রতিক্রিয়া রয়েছে যা দূষিত বায়ুতে আপনার এক্সপোজারকে সীমাবদ্ধ করে ।

আবহাওয়া একটু পরিষ্কার হলেই বাইরে যান, যখন বাতাস ধোঁয়াটে রয়েছে, তখন ঘরেই থাকুন । বাইরে বের হলে মাস্ক ব্যবহার করুন ।

আরও পড়ুন:

  1. কলকাতার বাতাসে বাড়ল দূষণ, শরীরে ক্ষতিকারক প্রভাব পড়ার আশংকায় পরিবেশবিজ্ঞানীরা
  2. জোড়-বিজোড় প্রকল্প শুধু দেখানোর জন্য, দিল্লির বায়ু দূষণ নিয়ে মত সুপ্রিম কোর্টের
  3. দিল্লির বিষবায়ু মোকাবিলায় 'কৃত্রিম বৃষ্টি' আনছে আইআইটি-কানপুর, বিষয়টা কী ?
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.