ETV Bharat / lifestyle

সাড়ে 500 বছরের চাঁদুনী বাড়ির কালীপুজো, শুরু করেছিলেন চৈতন্য মহাপ্রভুর গৃহশিক্ষক

এই পুজোর সূচনা করেছিলেন চৈতন্য মহাপ্রভুর গৃহশিক্ষক কাশীনাথ সার্বভৌম ৷ এরপর থেকেই সাড়ে 500 বছর ধরে পূজিত হয়ে আসছে নদিয়ার শান্তিপুরের চাঁদুনী বাড়ির কালীপুজো ৷

Santipur Kali Puja 2024
শান্তিপুরের নদিয়ার চাঁদুনী বাড়ির কালীপুজো (ইটিভি ভারত)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : 4 hours ago

শান্তিপুর, 27 অক্টোবর: পুজোর সূচনা করেছিলেন শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর গৃহশিক্ষক কাশীনাথ সার্বভৌম ৷ এরপর থেকেই চিরাচরিত নিয়ম মেনে সাড়ে 500 বছর ধরে পূজিত হয়ে আসছে নদিয়ার শান্তিপুরের চাঁদুনী বাড়ির কালীপুজো ৷ কালীপুজোর কিছুদিন আগে থেকে চাঁদুনী মা যে জলচৌকিতে বসেন, তাতে বিশেষ আলপনা দেওয়া হয়, যা বাড়ির মেয়ে-বউরা করেন ৷

একদশী তিথি থেকে নহবৎখানায় নহবৎ বাজে ৷ পুজোর দিন সকালে দু'জন গৃহবধূ দেবীঘট ডুবিয়ে গঙ্গা থেকে জল আনেন ৷ যিনি পুজোয় বসবেন তাঁকে এদিন হবিষ্যি করতে হয় ৷ সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত মায়ের কেশসজ্জা এবং ডাকের সাজে সজ্জিত করা হয় ৷ বাজনদার এসে হাজির হয় এবং তাঁদের বাজনায় চারিদিক মুখরিত হয়ে ওঠে ৷

শান্তিপুরের নদিয়ার চাঁদুনী বাড়ির কালীপুজো (ইটিভি ভারত)

পুজোর দিন সকাল ন'টা থেকে মা'কে গয়না পরানো শুরু হয় ৷ পঞ্জিকার সময় দেখে দুপুর বারোটা থেকে একটার মধ্যে চাঁদুনীমাকে পাটে তোলা হয়, যা দেখতে ভক্তরা ভিড় করে ৷ পাটে ওঠার পর মন্দিরে চণ্ডীপাঠ শুরু হয় এবং বাড়ির বধূরা ভোগ রান্নার জন্য ভোগের ঘরে প্রবেশ করে ৷

নিশিরাতে রাত বারোটায় পুরোহিত পুজোয় বসেন ৷ সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে বলিদানের রীতি অনেকটাই কমে গিয়েছে ৷ অনেকে ক্ষীরের পাঁঠা মানত করেন ৷ পরের দিন দুপুর বারোটায় বাজনা বাজিয়ে আসর ভাঙার অনুষ্ঠানে বাড়ির সকলে উপস্থিত থাকেন ৷ সন্ধ্যা ছ'টায় চাঁদুনীমার বরণ শুরু হয় ৷ প্রথমে বাড়ির বধূরা তারপর মেয়েরা এবং শেষে পাড়া প্রতিবেশীরা ৷ রাত ন'টায় নীরঞ্জনের উদ্দেশ্যে শোভাযাত্রা বের হয় ৷ গৃহবধূ ব্যতীত সকল সদস্যই শোভাযাত্রায় অংশ নিয়ে থাকে ৷ এ তো গেল পুজোর চিরাচরিত নিয়মের কথা ৷ কিন্তু নদিয়ার শান্তিপুরের যতগুলি ঐতিহ্যমণ্ডিত কালীপুজো রয়েছে, তার অন্যতম নাম এই চাঁদুনী বাড়ির ঘর চাঁদুনী এবং বাহির চাঁদনীর পুজো ৷

বংশধরদের কথায়, বাহির চাঁদুনীর পুজো প্রায় সাড়ে 500 বছরের ৷ ঘর চাঁদনীর পুজো প্রায় 350 বছর ৷ দু'টি পুজোর ক্ষেত্রেই রয়েছে একই নিয়ম। প্রথমে বাহির চাঁদুনীর বলি প্রথা শেষ হয়ে শুরু হয় ঘর চাঁদুনীর পাঁঠাবলির প্রথা ৷ তবে এই দুই কালীপ্রতিমার অপূর্ব রূপ যেন ভক্তদের মন জুড়িয়ে দেয় ৷ অনেকেই মনস্কামনা পূরণের জন্য মায়ের কাছে প্রার্থনা করেন ৷

জানা গিয়েছে, ভক্তদের মনস্কামনা পূর্ণ করেন এই দুই চাঁদুনী মা ৷ যার কারণেই প্রত্যেক বছর ভক্তদের সংখ্যাটাও বাড়ছে ৷ দুই চাঁদুনী মায়ের বিসর্জনের ক্ষেত্রে রয়েছে এক অনন্য ইতিহাস ৷ এখনও কাঁধে করেই নিরঞ্জনের পথে নিয়ে যাওয়া হয় দুই প্রতিমাকে ৷ সেখানেও অসংখ্য ভক্তবৃন্দদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায় ৷ তবে আর মাত্র কয়েকটা দিন বাকি, চাঁদুনী বাড়ির দুই প্রতিমা তৈরির প্রস্তুতি চলছে জোর কদমে ৷ আর পুজো মণ্ডপ সাজিয়ে তোলার কাজও চলছে ৷

শান্তিপুর, 27 অক্টোবর: পুজোর সূচনা করেছিলেন শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর গৃহশিক্ষক কাশীনাথ সার্বভৌম ৷ এরপর থেকেই চিরাচরিত নিয়ম মেনে সাড়ে 500 বছর ধরে পূজিত হয়ে আসছে নদিয়ার শান্তিপুরের চাঁদুনী বাড়ির কালীপুজো ৷ কালীপুজোর কিছুদিন আগে থেকে চাঁদুনী মা যে জলচৌকিতে বসেন, তাতে বিশেষ আলপনা দেওয়া হয়, যা বাড়ির মেয়ে-বউরা করেন ৷

একদশী তিথি থেকে নহবৎখানায় নহবৎ বাজে ৷ পুজোর দিন সকালে দু'জন গৃহবধূ দেবীঘট ডুবিয়ে গঙ্গা থেকে জল আনেন ৷ যিনি পুজোয় বসবেন তাঁকে এদিন হবিষ্যি করতে হয় ৷ সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত মায়ের কেশসজ্জা এবং ডাকের সাজে সজ্জিত করা হয় ৷ বাজনদার এসে হাজির হয় এবং তাঁদের বাজনায় চারিদিক মুখরিত হয়ে ওঠে ৷

শান্তিপুরের নদিয়ার চাঁদুনী বাড়ির কালীপুজো (ইটিভি ভারত)

পুজোর দিন সকাল ন'টা থেকে মা'কে গয়না পরানো শুরু হয় ৷ পঞ্জিকার সময় দেখে দুপুর বারোটা থেকে একটার মধ্যে চাঁদুনীমাকে পাটে তোলা হয়, যা দেখতে ভক্তরা ভিড় করে ৷ পাটে ওঠার পর মন্দিরে চণ্ডীপাঠ শুরু হয় এবং বাড়ির বধূরা ভোগ রান্নার জন্য ভোগের ঘরে প্রবেশ করে ৷

নিশিরাতে রাত বারোটায় পুরোহিত পুজোয় বসেন ৷ সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে বলিদানের রীতি অনেকটাই কমে গিয়েছে ৷ অনেকে ক্ষীরের পাঁঠা মানত করেন ৷ পরের দিন দুপুর বারোটায় বাজনা বাজিয়ে আসর ভাঙার অনুষ্ঠানে বাড়ির সকলে উপস্থিত থাকেন ৷ সন্ধ্যা ছ'টায় চাঁদুনীমার বরণ শুরু হয় ৷ প্রথমে বাড়ির বধূরা তারপর মেয়েরা এবং শেষে পাড়া প্রতিবেশীরা ৷ রাত ন'টায় নীরঞ্জনের উদ্দেশ্যে শোভাযাত্রা বের হয় ৷ গৃহবধূ ব্যতীত সকল সদস্যই শোভাযাত্রায় অংশ নিয়ে থাকে ৷ এ তো গেল পুজোর চিরাচরিত নিয়মের কথা ৷ কিন্তু নদিয়ার শান্তিপুরের যতগুলি ঐতিহ্যমণ্ডিত কালীপুজো রয়েছে, তার অন্যতম নাম এই চাঁদুনী বাড়ির ঘর চাঁদুনী এবং বাহির চাঁদনীর পুজো ৷

বংশধরদের কথায়, বাহির চাঁদুনীর পুজো প্রায় সাড়ে 500 বছরের ৷ ঘর চাঁদনীর পুজো প্রায় 350 বছর ৷ দু'টি পুজোর ক্ষেত্রেই রয়েছে একই নিয়ম। প্রথমে বাহির চাঁদুনীর বলি প্রথা শেষ হয়ে শুরু হয় ঘর চাঁদুনীর পাঁঠাবলির প্রথা ৷ তবে এই দুই কালীপ্রতিমার অপূর্ব রূপ যেন ভক্তদের মন জুড়িয়ে দেয় ৷ অনেকেই মনস্কামনা পূরণের জন্য মায়ের কাছে প্রার্থনা করেন ৷

জানা গিয়েছে, ভক্তদের মনস্কামনা পূর্ণ করেন এই দুই চাঁদুনী মা ৷ যার কারণেই প্রত্যেক বছর ভক্তদের সংখ্যাটাও বাড়ছে ৷ দুই চাঁদুনী মায়ের বিসর্জনের ক্ষেত্রে রয়েছে এক অনন্য ইতিহাস ৷ এখনও কাঁধে করেই নিরঞ্জনের পথে নিয়ে যাওয়া হয় দুই প্রতিমাকে ৷ সেখানেও অসংখ্য ভক্তবৃন্দদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায় ৷ তবে আর মাত্র কয়েকটা দিন বাকি, চাঁদুনী বাড়ির দুই প্রতিমা তৈরির প্রস্তুতি চলছে জোর কদমে ৷ আর পুজো মণ্ডপ সাজিয়ে তোলার কাজও চলছে ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.