হোগালবেড়িয়া (নদিয়া), 30 অক্টোবর: নদিয়ায় মা কালীর সঙ্গে পূজিত হন ভগবান শ্রীকৃষ্ণও ৷ স্বপ্নাদেশের পর শুরু হয় এই পুজো ৷ নদিয়ার হোগালবেড়িয়া থানার অন্তর্গত সেন পাড়া গ্রামে অধিষ্ঠিত রয়েছেন কৃষ্ণকালী মাতা।
বছরের প্রত্যেকদিন নিত্য সেবা হলেও কালীপুজোয় অর্থাৎ দীপান্বিতা অমাবস্যায় এখানে হয় বিশেষ পুজো। একই সঙ্গে হয় কৃষ্ণ ও কালীর পুজো ৷ প্রথমে কৃষ্ণের এবং পরে মা কালীর পুজো করা হয়।
কথিত রয়েছে, 2014 সালে এলাকার এক বাসিন্দা জয়দেব মণ্ডলের স্বপ্নাদেশের পরে গ্রামবাসী ও ভক্তদের দানে এই মন্দির প্রতিষ্ঠা হয়। মন্দিরে অধিষ্ঠিত মূর্তির এক হাতে রয়েছে খাঁড়া, অন্য হাতে পদ্ম ৷ বাকি দুই হাতে ধরে রয়েছে বাঁশি ৷ অর্থাৎ মা কালী ও শ্রীকৃষ্ণের যুগল বন্ধন ৷ যাকে হিন্দু সনাতন ধর্ম অনুযায়ী বলা হয় কৃষ্ণকালী। এই কৃষ্ণকালী সৃষ্টির রয়েছে এক কাহিনী। কৃষ্ণকালী বা কৃষ্ণকালীকা হলেন কৃষ্ণ ও কালীর সম্মিলিত রূপ।
পুরাণ মতে, রাধা ছিলেন আয়ান ঘোষের স্ত্রী। তিনি যখন শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে দেখা করতে যান, তখন আয়ান ঘোষের মা দেখে ফেলেন এবং সন্দেহ প্রকাশ করেন। জটিলা ও কুটিলা আয়ান ঘোষকে গিয়ে নালিশ করেন। জটিলা এবং কুটিলা ছিলেন রাধারানির স্বামী আয়ান ঘোষের মা ও বোন। তাঁরা সর্বদা রাধার থেকে কৃষ্ণকে দূরে রাখার চেষ্টা করতেন। জটিলা এবং কুটিলার কাছ থেকে শোনার পর আয়ান রাধাকে হাতেনাতে ধরতে গেলে কৃষ্ণ তখন কালী রূপ ধারণ করেন ৷ তিনি দেখতে পান তার সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে কৃষ্ণ এবং কালী ৷ রাধা সেখানে ছিলেন না ৷ সেই থেকেই জগতে কৃষ্ণকালীর মূর্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। এমনটাই জানান বর্ষীয়ান পুরোহিত শম্ভু মৌলিক।
শ্রীচৈতন্য ধাম নদিয়া জেলায় কালী পুজোর সময় কয়েকটি জায়গায় কৃষ্ণকালী মাতার পুজো করা হলেও কৃষ্ণকালী মন্দির জেলার আর কোথাও নেই ৷ 2014 সালে মন্দির প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে এই কৃষ্ণকালী মাতার পুজো হয়ে আসছে নদিয়ার হোগলবেরিয়া থানার সেনপাড়া গ্রামে।
পড়ুন: বিদ্যা ও সুন্দরের প্রেমকাহিনীর সাক্ষী বর্ধমানের এই কালী
পড়ুন: আজও গয়না-সহ বিসর্জনের রীতি, বড়মার স্বপ্নাদেশে মুসলিম বাড়ি থেকে আসে গুড়