দামাস্কাস, 8 ডিসেম্বর: আবু মহম্মদ আল-জোলানি। গোটা দুনিয়া এখন তাকে এক নামে চেনে-জানে। হায়াত তাহিরির আল শ্যাম নামে একটি জঙ্গি সংগঠনের মাথা এই জোলানি। একসময় দীর্ঘদিন আল-কায়দার সদস্য থাকা জোলানি নিজের সংগঠনও গড়ে তুলেছে আল-কায়দাকে সামনে রেখেই। স্থানীয় সময় রবিবার তাহিরির আল শ্যামের আক্রমণের কাছেই হার মানতে হয়েছে সিরিয়াকে। পাঁচ দশক বাদে বাশির আল আসাদের পরিবাররের শাসন থেকে মুক্ত হয়েছে সিরিয়া।
সাধারণত জঙ্গি সংগঠনের নেতারা যতটা আগ্রাসী ভূমিকা নেয় তার থেকে জোলানি খানিকটা আলাদা । নরমে-গরমে কাজ উদ্ধার করিয়ে নেয় সে । এবারও দিন কয়েক আগেই সে জানায়, আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করাই তাদের লক্ষ্য। বছর 13 আগে সিরিয়ায় অনাস্থা দেখা দেয় । তার অল্প কিছুদিন পর থেকে শুরু হয় গৃহযুদ্ধ। তবে এতকাল সে সব থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পেরেছিলেন বাশার-আল-আসাদ। কিন্তু এবার আর শেষরক্ষা হল না ।
কে এই আবু মহম্মদ আল-জোলানি?
প্রথম থেকেই আর পাঁচজন জঙ্গি নেতার থেকে নিজেকে খানিকটা আলাদাই রেখেছে জোলানি। সাম্প্রতিক হিংসাতেও তা বারবার দেখা গিয়েছে । জঙ্গি সংগঠনের সাধারণ সদস্য থেকে শুরু করে মাথাদের অনেক সময় পাগড়ি পরতে দেখা যায় । কোনওদিন সেই রাস্তায় হাঁটেনি আল জোলানি । তাকে খাকি পোশাকেই বেশি দেখা যায় । তার বাহিনীর হাতে সিরিয়ার আলেপ্পো শহর তছনছ হয়ে যায় গত সপ্তাহে । সেখানেও তাকে এই খাকি পোশাকেই দেখা গিয়েছিল।
জন্ম 1982 সালে । আসল নাম আহমেদ আল-সারা । মাজহে এলাকার একটি স্বচ্ছল পরিবারে তার বেড়ে ওঠা। ছোট থেকেই পড়াশুনোয়ও ভালো ছিল সে । অনেকেই মনে করেন 2014 সাল বা তার কাছাকাছি কোনও একটি সময় থেকে চরমপন্থায় আকৃষ্ট হয় জোলানি। তবে কোনও কোনও বিশেষজ্ঞ মনে করেন, 2001 সালের 11 সেপ্টেম্বরের হামলাই তাকে প্রথম হিংসার পথ বেছে নেওয়ার অনুপ্রেরণা দেয়। এরপর ইরাকে হামলা করে আমেরিকা। সেই যুদ্ধেও অংশ নেয় এই জঙ্গি নেতা ।
ইরাকেই আল-কায়দার সদস্য হয় জোলানি। সে সময় পাঁচ বছর জেলে থাকতে হয়েছিল তাকে। পরে 2011 সালে আসাদের বিরুদ্ধে অসন্তোষ বড় আকার নিলে দেশে ফিরে আসেন তিনি । শোনা যায়, এর বছর দুয়েক বাদে আইএসআইএস প্রধান আবু-বাকার-আল-বাগদাদি চেয়েছিল জোলানি তাদের সঙ্গে যুক্ত হোক । সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয় জোলানি। আরও পরে 2016 সালে আল-কায়দার সঙ্গে তার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ।
(তথ্যসূত্র: পিটিআই)