মস্কো, 18 মার্চ: নির্বাচন নিয়ে একাধিক অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও আরও একবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পদে বসার দিকে এগিয়ে ভ্লাদিমির পুতিন ৷ সোমবার সকালের দিকে ভোট গণনার যা ফলাফল এসেছে, তা থেকেই স্পষ্ট যে আরও ছ’বছর রাশিয়ার কর্তৃত্ব থাকবে পুতিনের উপরই ৷ রাশিয়ার কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে যে মোট ভোটের 98 শতাংশ ভোট গণনা হয়েছে ৷ তার মধ্যে 87 শতাংশ ভোট পুতিন ৷
যদিও রাশিয়ার প্রেসিডেনসিয়াল ইলেকশন নিয়ে সেদেশের বিরোধীদের অনেক অভিযোগ রয়েছে ৷ কিন্তু সেসব গুরুত্ব দিতে নারাজ পুতিন ৷ এই জয় তাঁর প্রতি রাশিয়ার মানুষের বিশ্বাস ও আশার ফলাফল বলেই জানিয়েছেন তিনি ৷ রবিবার নির্বাচন হয় রাশিয়ায় ৷ বহু মানুষকে ভোট দেওয়ার জন্য বুথের বাইরে লাইনে দাঁড়াতে দেখা যায় ৷ যেহেতু এই ভোট নিয়ে ক্ষোভ ছিল মানুষের মধ্যে ৷ তাই অনেকেই মনে করেছিলেন যে পুতিনের বিপক্ষেই ভোট দিতে লাইনে দাঁড়িয়েছেন রাশিয়ার নাগরিকরা ৷
তবে জয় নিয়ে বরাবরই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন পুতিন ৷ রবিবার ভোট শেষ হওয়ার পর তিনি বলেন, “অবশ্যই, আমাদের সামনে অনেক কাজ আছে । কিন্তু আমি প্রত্যেকের জন্য এটা পরিষ্কার করতে চাই, যখন আমরা একত্রিত হয়েছিলাম, তখন কেউ আমাদের ভয় দেখাতে পারেনি, আমাদের ইচ্ছা ও আমাদের বিবেককে দমন করতে পারেনি । তারা অতীতেও ব্যর্থ হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও ব্যর্থ হবে ।”
পাশাপাশি বিরোধীদের এই ভোট দেওয়া নিয়ে কটাক্ষ করেছিলেন পুতিন ৷ তিনি বলেন, “দুপুরে ভোট দিতে আসার ডাক ছিল । আর এটা বিরোধিতার বহিঃপ্রকাশ হওয়ার কথা ছিল । ঠিক আছে, যদি ভোট দেওয়ার জন্য ডাক আসে, তবে ... আমি এর প্রশংসা করি ৷"
যদিও রাশিয়ার এই প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে অনেক অভিযোগ রয়েছে ৷ প্রকাশ্যে কেউ পুতিনের সমালোচনা করতে পারেননি ৷ এমনকী, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়েও সমালোচনা করতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ ৷ স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকেও কাজ করতে দেওয়া হয়নি ৷ ওই দেশে যাঁরা পুতিনের সমালোচক, তাঁদের অনেককেই গত কয়েকমাসে জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে ৷ অনেককে নির্বাসিতও করা হয়েছে ৷
তাই পুতিন-বিরোধীরা বলছেন যে এই জয়ের বিষয়টি আগে থেকেই নির্ধারিত হয়েছিল ৷ তাদের অভিযোগ, ভোটারদের কাছে বিকল্প কার্যত ছিলই না ৷ ভোট প্রক্রিয়ায় স্বাধীন নজরদারিও সীমাবদ্ধ করে দেওয়া হয়েছিল ৷ রাশিয়ার বিরোধীদের হয়ে সরব হয়েছেন ব্রিটেনের বিদেশ সচিব ৷ তিনি সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন, এই নির্বাচন দেখে তা কোনও দিক থেকেই অবাধ বলে মনে হচ্ছে না ৷
পুতিন বিরোধীরা দেশে যেমন বুথের বাইরে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন ৷ তেমনই বিদেশেও রাশিয়ান দূতাবাসগুলির সামনে অনেককে ভোটের লাইনে দাঁড়িয়েছেন ৷ ব্যালটে কেউ পুতিন সম্পর্কে ‘কিলার’ লিখে এসেছেন ৷ কেউ আবার অন্য কিছু লিখে এসেছেন ৷ অনেকে আবার পুতিনের প্রশংসা করেছেন ৷ পুতিনের পক্ষে ভোট দেওয়ার কথাও জানিয়েছেন অনেকে ৷
সংবাদসংস্থা - এপি
আরও পড়ুন: