ঢাকা, 29 নভেম্বর: বাংলাদেশের চট্টগ্রামে শুক্রবার একদল উন্মত্ত জনতা তিনটি হিন্দু মন্দিরে ভাঙচুর চালায় ৷ একজন প্রাক্তন ইসকন সদস্যের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা হওয়ার পর থেকেই সে দেশে বিক্ষোভ ও হিংসার ঘটনা নতুন করে ঘটতে শুরু করেছে ৷
বাংলাদেশের একটি খবরের পোর্টাল বিডি নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানিয়েছে, শুক্রবার দুপুর আড়াইটা নাগাদ বন্দর শহরের হরেশচন্দ্র মুন্সেফ লেনের শান্তন্বেশ্বরী মাতৃমন্দিরের প্রধান ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়ে। পাশের শনি মন্দির এবং শান্তন্বেশ্বরী কালীমন্দিরে ভাঙচুর চালায় ৷ পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ওই মন্দিরের এক সদস্য বিডি নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম-কে জানিয়েছেন, চিৎকার করে স্লোগান দিতে দিতে শতাধিক লোক মন্দিরগুলিতে ঢুকে পরে ইট ও পাথর ছুঁড়েছে, শনি মন্দিরের গেট এবং অন্য দুটি মন্দিরের ক্ষতি করেছে ।
ঘটনাস্থলে থাকা কোতোয়ালি থানার এসআই আব্দুল করিম বলেন, "দুপুরে মিছিল থেকে কিছু লোক পাথরঘাটায় ঢুকে পড়ে হরেশচন্দ্র মুন্সেফ লেনের মন্দির লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ে এবং ভাঙচুরের চেষ্টা করে। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী এলে তারা চলে যায়।" পুলিশ জানিয়েছে, উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে মন্দিরগুলির সামান্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ৷ উভয় পক্ষই একে অপরের দিকে ইট-পাটকেল ছুড়েছে।
শান্তন্বেশ্বরী মূল মন্দির পরিচালনা কমিটির স্থায়ী সদস্য তপন দাস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম-কে বলেন, "শুক্রবারের নামাজের পর শতাধিক মানুষের একটি মিছিল আসে। তারা হিন্দু ও ইসকনবিরোধী স্লোগান দিতে থাকে। আমরা হামলাকারীদের আটকাতে পারিনি। পরিস্থিতি খারাপ হলে, আমরা সেনাবাহিনীকে ডেকেছিলাম, যাঁরা অবিলম্বে এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সাহায্য করেছিল ।"
আধ্যাত্মিক নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস, বাংলাদেশের ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি অফ কৃষ্ণ কনসায়নেস (ইসকন) এর প্রাক্তন সদস্য, সোমবার রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় গ্রেফতার হন এবং মঙ্গলবার তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ হয়। এর পরই ঢাকা, চট্টগ্রাম-সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় অসংখ্য হিন্দু, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের অনুগামীরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন ।
গত 30 অক্টোবর, চট্টগ্রামের নিউ মার্কেট এলাকায় হিন্দুদের একটি সমাবেশে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অসম্মানের অভিযোগে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস-সহ 19 জনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করা হয়। মঙ্গলবার, নয়াদিল্লি এই হিন্দু আধ্যাত্মিক নেতার গ্রেফতার এবং জামিন খারিজের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে এবং বাংলাদেশকে হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলে। চলতি সপ্তাহের একের পর এক হিন্দু-বিরোধী ঘটনাগুলি দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশীর মধ্যে কূটনৈতিক দ্বন্দ্ব বাড়িয়ে দিচ্ছে। (পিটিআই)