ঢাকা, 15 ডিসেম্বর: আচমকাই বহু মানুষের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ রয়েছে ৷ এবার এমনই ভয়ঙ্কর তথ্য প্রকাশ করল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার দ্বারা গঠিত একটি তদন্ত কমিশন ৷ কমিশনের প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশে 3 হাজার 500 জনেও বেশি মানুষের আচমকা হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে ৷ আর এই সমস্ত ঘটনায় বহিষ্কৃত প্রধানমন্ত্রীর যোগ রয়েছে।
শনিবার রাতে এই বিষয়ে বিবৃতি প্রকাশ করা হয় অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী মহম্মদ ইউনুসের দফতর থেকে ৷ সেখানে বলা হয়, "বলপূর্বক উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনায় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে কমিশন ৷ তাঁর নির্দেশে একাধিক ঘটনা ঘটেছে বলেও জানিয়েছে কমিশন ৷"
5 সদস্যের এই কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা, জাতীয় টেলিযোগাযোগ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের প্রাক্তন প্রধান, বহিষ্কৃত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান, শীর্ষ পুলিশ আধিকারিক মনিরুল ইসলাম এবং মহম্মদ হারুন-অর-রশিদ-সহ বেশ কয়েকজন এই ঘটনায় জড়িত। এদের মধ্য়ে প্রাক্তন পুলিশ আধিকারিক ও প্রাক্তন মেজর জেনারেল পলাতক ৷ বর্তমানে তাঁরা কোথায় রয়েছেন, তা কেউ জানে না ৷ আওয়ামি লীগের পতনের পর তাঁরা বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন বলে অনুমান ৷
বলপূর্বক উধাওয়ের ঘটনার তদন্তের জন্য বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচাররতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে 5 সদস্যের একটি দল গঠন করা হয় অন্তর্বর্তী সরকারের তরফে ৷ শনিবার রাতে যমুনা ভবনে অর্থাৎ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনে তদন্তের রিপোর্ট পেশ করেন কমিশনের চেয়ারম্যান মইনুল ইসলাম চৌধুরী ৷ তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী, লোকচক্ষুর আড়ালে পরিকল্পিতভাবে ঘটনাগুলি ঘটানো হয়েছে ৷ তদন্তে সবকিছুর প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে ৷
রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশের তিন সামরিক বাহিনীর সদস্য ও পুলিশ কর্মীদের নিয়ে গঠিত অপরাধ বিরোধী র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এবং অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা একে অপরের সঙ্গে সহযোগিতা করে নির্যাতিতদের তুলে নিয়ে যেত ৷ তাদের দীর্ঘদিন নিজেদের হেফাজতে আটকে রেখে অত্যাচার করা হত ৷ এদিন, কমিশনের তরফে 2009 সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইন বাতিল বা সম্পূর্ণ সংশোধনের পাশাপাশি র্যাবকে বিলুপ্তির প্রস্তাব দেওয়া হয় ।