তেহরান, 31 জুলাই: তেহরানে হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়াকে হত্যা করা হয়েছে ৷ বুধবার ভোরে এমনটাই দাবি করা হল ইরানের প্যারামিলিটারি রেভল্যুশনারি গার্ডের তরফে ৷ যদিও হামাসের দাবি, তেহরানে নিজের বাসভবনে বিমান হামলায় তাদের নেতার মৃত্যু হয়েছে ৷ তবে হানিয়ার মৃত্যুর জন্য ইজরায়েলকে দায়ী করেছে হামাস ৷
হামাস এক বিবৃতিতে বলেছে, "তেহরানে তাঁর বাসভবনে বিশ্বাসঘাতক ইহুদিবাদী হামলায় হানিয়া নিহত হয়েছেন ।" যদিও ইজরায়েলের তরফে হামাসের তোলা অভিযোগে কেনওরকম মন্তব্য করা হয়নি ৷ তবে জানা গিয়েছে, ইজরায়েলের মোসাদ গোয়েন্দা সংস্থার দ্বারা এই হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে । 7 অক্টোবর ইজরায়েল হামলা চালিয়েছিল হামাস ৷ সেই হামলায় 1 হাজার 200 জন নিহত হয়েছিলেন এবং প্রায় 250 জনকে বন্দি করা হয়েছিল ৷ এরপর থেকেই ইজরায়েল ওই হামলার বদলা নিতে চেয়েছিল এবং হানিয়া ও হামাসের অন্যান্য নেতাদের হত্যা করতে উদ্যত হয়েছে বলে অভিযোগ হামাসের ।
জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান ছিল ৷ সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তেহরানে ছিলেন হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়া । ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের সিপাহ নিউজ ওয়েবসাইট জানিয়েছে, হানিয়াকে তাঁর এক দেহরক্ষী-সহ তেহরানের বাসভবনে হত্যা করা হয়েছে । এতে বলা হয়েছে, "হামাস ইসলামিক রেজিস্ট্যান্সের প্রধান রাজনৈতিক কার্যালয় অর্থাৎ ইসমাইল হানিয়ার বাসভবন তেহরানে তাঁর উপর আঘাত হানা হয় এবং এই ঘটনার ফলে তিনি ও তার একজন দেহরক্ষীর মৃত্যু হয় ৷"
অন্যদিকে, ইরানের জাতীয়স্তরের টেলিভিশনে বিশ্লেষকরা এই হামলার জন্য ইজরায়েলকে দায়ী করতে শুরু করেছেন । তবে হোয়াইটহাউস থেকেও এই ঘটনা নিয়ে তাৎক্ষণিক কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি । প্রসঙ্গত, বেশ কয়েকমাস ধরে ইজরায়েল-হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি এবং বন্দিদের মুক্তি দেওয়ার বিষয়ে দু'দেশের উপর চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা চালাচ্ছে বাইডেন সরকার ৷ এই পরিস্থিতির মাঝেই হামাস প্রধানের মৃত্যুর খবর সামনে এল ৷
ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধ চলছে ৷ এরই মাঝে সিআইএ ডিরেক্টর বিল বার্নস সর্বশেষ আলোচনায় ইজরায়েল, কাতারি এবং মিশরীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করতে রবিবার রোমে এসেছিলেন । পৃথকভাবে মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকার হোয়াইটহাউসের সমন্বয়কারী ব্রেট ম্যাকগার্ক মার্কিন অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনার জন্য এই অঞ্চলে রয়েছেন ।
ইজরায়েল ইরানের পরমাণু বিজ্ঞানী এবং তাঁর পারমাণবিক কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত অন্যদের লক্ষ্য করে বছরব্যাপী হত্যা অভিযান চালাচ্ছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে । 2020 সালে শীর্ষস্থানীয় ইরানি সামরিক পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফাখরিজাদেহকে তেহরানের বাইরে একটি গাড়িতে ভ্রমণ করছিলেন ৷ সেসময় একটি রিমোট মাধ্যমে মেশিনগান দিয়ে তাঁকে হত্যা করা হয় ।