কায়রো, 14 জানুয়ারি: অবশেষে যুদ্ধ বিরতি! 17 মাস বাদে যুদ্ধবিরতির পরিস্থিতি মধ্যপ্রচ্যে। ইজারেয়েলের দেওয়া যুদ্ধবিরতির শর্ত মানার ব্যাপারে অনেকটাই এগিয়ে গেল হামাস। আর সেই সূত্র ধরে হামাসের হাতে বন্দি ইজরায়েলের নাগরিকদের ছেড়ে দেওয়ার প্রক্রিয়াও আরও তরান্বিত হল বলে মনে করা হচ্ছে । যুদ্ধ পরিস্থিতিকে খুব কাছ থেকে দেখছেন এমন দুই সামরিক কর্তা সংবাদসংস্থা এপিকে এই খবর জানিয়েছেন ।
এদিকে যুদ্ধবিরতির পর গাজার পরিস্থিতি কী হবে তা নিয়ে একটি রিপোর্ট তৈরির কাজ শুরু করেছেন আমেরিকার বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিনকেন। ওই রিপোর্টে এখন থেকে গাজার প্রশাসন কীভাবে পরিচালিত হবে তা নিয়ে বেশ কয়েকটি বক্তব্য তুলে ধরা হবে বলে জানা গিয়েছে । একটি সূত্র জানিয়েছে, রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজের মেয়াদ শেষ করার সময় জাতির উদ্দেশ্যে যে ভাষণ জো বাইডেন দেবেন সেখানে আমেরিকার এই 'কূটনৈতিক জয়ের ' বিষয়টির উল্লেখ থাকতে চলেছে।
এই বিষয়ে ইজরায়েল এবং হামাসের দুই সামরিক কর্তার সঙ্গে কথা বলেছে সংবাদসংস্থা এপি । হামাসের কর্তা জানিয়েছেন, ইজারায়েলের দেওয়া শর্ত মানার মতো পরিস্থিতি ইতিমধ্যেই তৈরি হয়ে গিয়েছে। অপহরণ করা হয়েছিল এমন কয়েকজনকে ছেড়েও দেওয়া হবে। কমবেশি 100 জন অপহরণ করো হয়েছে বলে দাবি ইজরায়েলের। তাদের মধ্যে প্রথম ধাপে বেশ কয়েকজনকে ছাড়া হতে পারে। এদিকে, প্রায় একই কথা শোনা গিয়েছে ইজরায়েল কর্তার মুখেও । তবে তিনি বলেছেন, ঠিক কোন কোন শর্ত মেনে এই যুদ্ধবিরতি হবে? তা কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ঠিক করবে । পাশাপাশি চুক্তিপত্রের একটি খসড়া ইতিমধ্যেই এপির হাতে এসেছে ।
মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল 2023 সালের 7 অক্টোবর থেকে । সেদিন আচমকা হামলা চালিয়ে ইজরায়েল থেকে বেশ কয়েকজনকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছিল। পাল্টা জবাব দিতে থাকে ইজরায়েল । এই দীর্ঘ সময় ধরে কখনও শান্ত হয়নি গাজা। বিভিন্ন সময়ে একাধিক পদক্ষেপ হলেও নিয়ন্ত্রণে আসেনি পরিস্থিতি । এবার শান্তির পথে হাঁটতে চলেছে মধ্যপ্রাচ্য।
যুদ্ধের পরিস্থিতি যাতে নিয়ন্ত্রণে আনা যায় তার জন্য গত একবছর ধরে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে তিনটি দেশ । আমেরিকার পাশাপাশি মিশর ও কাতার দু'পক্ষের সঙ্গে লাগাতার আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছিল। এবার তার সুফল মিলতে শুরু করেছে ।
ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বারবার বলেছিলেন, হামাস যাদের অরহরণ করে নিয়ে গিয়েছে তাদের মুক্তি না দিলে যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত আলোচনাও সম্ভব নয় । এই বিষয়টিকে সামনে রেখেই কাজ করছিল তিনটি দেশ। শেষমেষ হামাস ও ইজরায়েলের যুদ্ধ সম্পূর্ণ শেষ হলে সেটা মধ্যপ্রাচ্যের সমস্ত দেশকেই শান্তি দেবে বলে মনে করা হচ্ছে। গত কয়েক দশকে বারবার অশান্ত হওয়া মধ্যপ্রাচ্য এর চেয়ে বেশি দিনের সংঘর্ষ আগে কখনও দেখেনি।