লন্ডন, 5 জুলাই: ব্রিটেনে প্রায় দেড় দশকের পর ক্ষমতা হারাতে চলেছে কনজারভেটিভ পার্টি ৷ ক্ষমতায় আসতে চলেছে লেবার পার্টি ৷ জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী 400 বেশি আসন পেয়ে 10 ডাউনিং স্ট্রিটে ক্ষমতা দখল করতে চলেছেন লেবার পার্টির নেতা কিয়ের স্টারমার ৷ পরাজয় হতে চলেছে প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনকের কনজারভেটিভ পার্টির ৷
ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ 'হাউস অফ কমন্স'এ মোট আসন সংখ্যা 650টি । সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য দরকার 326টি আসন ৷ ভোট পরবর্তী সমীক্ষা অনুসারে, 410টি আসনে পেতে পারে লেবার পার্টি ৷ অর্থাৎ, নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার 326 আসনের গণ্ডি অনায়াসে পেরিয়ে যাবেন স্টারমারের দল ৷ ফলে জনমত সমীক্ষা সঠিক প্রমাণিত হলে 14 বছর পর ফের ব্রিটেনের ক্ষমতা হারাতে চলেছে টেরিরা চলেছে কনজারভেটিভ পার্টি ৷
জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী ভোট গণনা শুরু থেকেই এগিয়ে স্টারমারের দল ৷ যদিও গণনা শুরুর 3 ঘণ্টা পরে প্রথম আসনে জয় পায় ঋষি সুনকের দল কনজারভেটিভ পার্টি ৷ কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলে যেতে থাকে চিত্র ৷ লন্ডনের হলবর্ন অ্যান্ড সেন্ট প্যানক্রাস আসন থেকে 18 হাজারেরও বেশি ভোটে জয়লাভ করেন কিয়ের স্টারমার ৷ জয় নিশ্চিত হতেই ভোটারদের ধন্যবাদ জানিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেন তিনি ৷ লেখেন, "পরিবর্তন শুরু হয়ে গিয়েছে ৷"
Thank you, Holborn and St Pancras, for putting your trust in me again.
— Keir Starmer (@Keir_Starmer) July 5, 2024
Change begins right here. pic.twitter.com/XZfi5OIoyH
গত 14 বছর ধরে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভদের বিরুদ্ধে ব্রিটেনের মানুষের মনে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে ৷ শত চেষ্টা করেও সেই ক্ষোভ মেটাতে পারেননি 44 বছরের ঋষি সুনক ৷ ফলে মাত্র 6 সপ্তাহের প্রচারেই টোরিদের বিরুদ্ধে এগিয়ে গিয়েছেন কিয়ের স্টারমার ৷ নির্বাচনী প্রচারে বারবার লেবার পার্টির ট্য়াক্স বাড়ানোর বিষয়টিকে তুলে ধরেছেন সুনক ৷ কিন্তু তাঁর অভিযোগ ভোটবাক্সে খুব একটা প্রভাব ফেলতে পারেনি বলে দাবি জনমত সমীক্ষার ৷ আর এর কারণ হিসেবে জনমত সমীক্ষায় উঠে এসেছে একাধিক দিক ৷ তবে নির্বাচনে তাঁর সঙ্গে থাকার জন্য এবং তাঁর দলের উপর এতদিন যাবৎ ভরসা করার জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ঋষি সুনক ৷
To the hundreds of Conservative candidates, thousands of volunteers and millions of voters:
— Rishi Sunak (@RishiSunak) July 4, 2024
Thank you for your hard work, thank you for your support, and thank you for your vote. pic.twitter.com/GcgvI7bImI
2019 সালের নির্বাচনে 365 আসনে জিতে প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন বরিস জনসন ৷ লেবার পার্টি পেয়েছিল 202টি আসন ৷ কিন্তু তারপর ভঙ্গুর অর্থনীতি, সাম্প্রতিক সময়ে দেশে অপরাধের মাত্রা বেড়ে যাওয়া ঋষি সুনকদের জয়ের পিছনে প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে ৷ সর্বোপরি গত 5 বছর ধরে কনজারভেটিভ পার্টির অন্তর্দ্বন্দ্ব এবং তিন বার প্রধানমন্ত্রী বদলের প্রভাবও এই ভোটবাক্সে পড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে ৷
উল্লেখ্য, মূল লড়াই কনজারভেটিভ ও লেবার পার্টির মধ্যে ৷ তবে নির্বাচনী ময়দানে আরও অনেক দল রয়েছে ৷ সেই দলগুলি হল - লিবারেল ডেমোক্র্যাটস, গ্রিন পার্টি, স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি, এসডিএলপি, ডেমোক্রেটিক ইউনোনিস্ট পার্টি, সিন ফিয়েন, প্ল্যাড সিমরু ও অ্যান্টি ইমিগ্রেশন রিফর্ম পার্টি ৷ জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী, লিবারেল ডেমোক্র্যাটসরা পেতে পারে 61 টি আসন এবং নাইজেল ফারাজের রিফর্ম পার্টি পেতে চলেছে 13টি আসন এবং গ্রিন পার্টি পেতে চলেছে 2টি আসন ৷