আস্তানা, 4 জুলাই: সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে নাম না করে চিন ও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তোপ দাগল ভারত ৷ নয়াদিল্লির বক্তব্য, সন্ত্রাসবাদের মদতদাতাদের দুনিয়ার সামনে আনার ও তাদের সকলের থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া উচিত ৷ না হলে সন্ত্রাসবাদ বিশ্বের শান্তির জন্য বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়াতে পারে ৷
কাজাখস্তানের রাজধানী আস্তানায় সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) কাউন্সিল অফ হেডস অফ স্টেট সামিটে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বার্তা পেশের সময় বৃহস্পতিবার এই কথা জানান বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ৷ পাশাপাশি তিনি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে এসসিও-র মূল লক্ষ্যগুলির অন্যতম হল সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করা ।
এই সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যাননি ৷ তবে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন উপস্থিত ছিলেন ৷ ভারতের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ৷ সেখানে তিনি সন্ত্রাসবাদ নিয়ে এই কথা বলেন ৷ পাশাপাশি তাঁর বার্তা সন্ত্রাসবাদকে কোনোভাবেই ক্ষমার চোখে দেখা উচিত নয় ৷
তিনি বলেন, "সীমান্তপারের সন্ত্রাসবাদের সমস্যার একটি নিষ্পত্তি হওয়া প্রয়োজন এবং সন্ত্রাসবাদে আর্থিক সাহায্য় ও নিয়োগের দৃঢ়তার সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে । তরুণদের মধ্যে মৌলবাদের বিস্তার রোধ করার জন্যও আমাদের সক্রিয় পদক্ষেপ করা উচিত ।" এসসিও-তে ভারত যখন সভাপতি ছিল, সেই সময় এই বিষয়টি বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল বলেও জয়শঙ্কর উল্লেখ করেন ৷
উল্লেখ্য, সীমান্তপারের সন্ত্রাসে ভারতই সবচেয়ে ভুক্তোভুগী ৷ নিয়ন্ত্রণ রেখার ওপারে পাকিস্তানের দিক থেকে আক্রমণের মোকাবিলা প্রায়ই ভারতকে করতে হয় ৷ এই নিয়ে বিশ্বমঞ্চে বরাবর সরব হয় ভারত ৷ রাষ্ট্রসংঘও সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়ার জন্য পাকিস্তানকে কালো তালিকাভুক্ত করতে চেয়েছে বারবার ৷ প্রতিবারই চিনের সমর্থন পেয়ে পাকিস্তান নিজেদের সুরক্ষিত রেখেছে ৷ ফলে পাকিস্তান ও চিনের সামনেই এই সম্মেলনে সন্ত্রাসবাদের প্রসঙ্গ তুলে ভারত আসলে প্রতিবেশী দুই দেশকেই নিশানা করেছে ৷
তিনি আরও জানান, এসসিও সকলকে একত্রিত করে সহযোগিতামূলকভাবে এগিয়ে যাওয়ার একটি মঞ্চ ৷ এর সঙ্গে মিল রয়েছে ভারতের শতাব্দী প্রাচীন বসুধৈব কুটুম্বকমের নীতি ৷ যার অর্থ সারা বিশ্ব এক পরিবার । পরে এই সম্মেলন নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন জয়শঙ্কর ৷ সেখানে তিনি জানান যে সম্মেলনে উপস্থিত নেতারা নরেন্দ্র মোদির তৃতীয়বার ভোটে জয় নিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ৷
তিনি জানান, এই অঞ্চলের মানুষের সঙ্গে ভারতের গভীর সভ্যতাগত সম্পর্ক রয়েছে । এসসিও-তে মধ্য এশিয়ার কেন্দ্রীয় বিষয়গুলিকে স্বীকৃতি প্রত্যেকে নিজেদের স্বার্থ ও আকাঙ্ক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে । এসসিও কেন্দ্রিক ভারত কী কী পদক্ষেপ করেছে, সেটাও তিনি উল্লেখ করেছেন ৷ পাশাপাশি এই সম্মেলন সফলভাবে আয়োজন করার জন্য কাজাখস্তানকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ৷ আর এসসিও-র পরবর্তী সভাপতিত্বের জন্য চিনকে শুভেচ্ছা জানান ।
উল্লেখ্য, এই গোষ্ঠীতে ভারত, ইরান, কাজাখস্তান, চিন, কিরগিজ, পাকিস্তান, রাশিয়া, তাজিকিস্তান ও উজবেকিস্তান রয়েছে ৷ দশম সদস্য হিসেবে যোগদান করেছে বেলারুশ ৷