নয়াদিল্লি, 17 মার্চ: তথাকথিত অরুণাচল প্রদেশের উপর ভারতের দাবি অবৈধ ৷ এমনটাই দাবি করল চিনের প্রতিরক্ষামন্ত্রক ৷ সঙ্গে 'অরুণাচল প্রদেশ' নামটি তারা মান্যতা দেয় না বলে দাবি করেছে চিন ৷ এনিয়ে শনিবার চিনের প্রতিরক্ষামন্ত্রকের মুখপাত্র কর্নেল জাং শিয়াওজাং একটি বিবৃতি দিয়েছেন ৷ সেখানে তিনি দাবি করেছেন, অরুণাচল প্রদেশ নয়, আসলে সেটি চিনের অন্তর্নিহিত অঞ্চল ৷ যার প্রকৃত নাম জাংনান ৷
চিনে সাংবাদিক বৈঠক করে রেড আর্মির ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, "জাংনান চিনের অন্তর্নিহিত অঞ্চল ৷ চিন কখনই ভারতের তথাকথিত 'অরুণাচল প্রদেশে' অবৈধ অধিকারকে স্বীকৃতি দেয় না ৷ আমরা দৃঢ়ভাবে এর বিরোধ করছি ৷" অরুণাচলের অধিকার প্রসঙ্গে ভারতকে খোঁচা দেওয়ার পর, আবার কূটনৈতিক ও সেনা স্তরে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সামধান বের করার কথা বলতে শোনা যায় চিনের প্রতিরক্ষামন্ত্রকের ওই আধিকারিককে ৷
তিনি বলেন, "এই মুহূর্তে ভারত-চিন সীমান্তে সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে ৷ দু’তরফে কূটনৈতিকভাবে ও সেনার মাধ্যমে প্রভাবশালী আলোচনা জারি রয়েছে ৷ সীমান্ত নিয়ে এই সমস্যার সমাধান পারস্পরিক বোঝাপড়ার মধ্যে দিয়ে হবে ৷" উল্লেখ্য, চিনের প্রতিরক্ষামন্ত্রকের এই বিবৃতির পিছনে আসল কারণ, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাম্প্রতিক সময়ে অরুণাচল প্রদেশে গিয়ে 'সেলা টানেল' উদ্বোধন ৷
যা নিয়ে চিনের বিদেশমন্ত্রক কূটনৈতিকভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন ৷ দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবেশী রাষ্ট্র দাবি করে আসছে যে, ভারতের অরুণাচল প্রদেশ আদতে তাদের দক্ষিণ-তিব্বতের অংশ এবং ভারতের প্রতিটি পদক্ষেপ সীমান্ত সমস্যাকে আরও জটিল করে দিচ্ছে ৷ প্রধানমন্ত্রী সেলা টানেলের উদ্বোধনের প্রতিবাদে চিনের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বিবৃতিতে দাবি করেছিলেন, "তথাকথিত অরুণাচল প্রদেশে ভারতের অবৈধ নির্মাণকে চিন কখনই মান্যতা দেয় না ৷ আমরা এর বিরোধ করছি ৷"
উল্লেখ্য, গত 9 মার্চ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সেলা টানেলের উদ্বোধন করেছিলেন ৷ এটি বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ দ্বি-লেনের টানেল ৷ যা অসমের তেজপুর ও অরুণাচলের তাওয়াংকে যুক্ত করে ৷ এই টানেলটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে 13 হাজার ফুট উঁচুতে তৈরি করা হয়েছে ৷ যার জন্য খরচ হয়েছে 825 কোটি টাকা ৷
যদিও চিনের এই দাবিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ ভারতের বিদেশমন্ত্রক ৷ এনিয়ে ভারতের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রনধীর জয়সওয়াল বলেন, "প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অরুণাচল প্রদেশ সফর নিয়ে চিনের মন্তব্যকে আমরা মানি না ৷ ভারতের অন্যান্য রাজ্যে সফরের মতো, ভারতীয় নেতারা সময়ে সময়ে অরুণাচল প্রদেশ সফরে গিয়ে থাকেন ৷ এই ধরনের সফর বা ভারতের উন্নয়নমূলক প্রকল্পে আপত্তি করা যুক্তিযুক্ত নয় ৷ তবে, এটা বলে রাখা দরকার যে, এর কোনও বদল হবে না ৷ অরুণাচল প্রদেশ ভারতের অভিন্ন অঙ্গ ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে ৷ চিন আমাদের এই দৃঢ় অবস্থান সম্পর্কে সবর্দা অবগত ৷"
আরও পড়ুন: