হায়দরাবাদ: আজকাল বিশ্বজুড়ে বিপুল সংখ্যক মানুষ ডিজিটাল আসক্তি বা ইন্টারনেট আসক্তিতে ভুগছেন । উদ্বেগের বিষয় হল, এই আসক্তির শিকার হওয়া অধিকাংশ মানুষই জানেন না তাঁদের এই সমস্যার কথা এবং অনেকে এটাকে কোনও সমস্যা বলে মনেও করেন না । যার ফলে, তাঁরা না এটিকে প্রতিরোধের চেষ্টা করতে পারেন, না সময় মতো এর চিকিৎসা করাতে পারেন । যতদিনে বুঝতে পারে যে তাঁরা ডিজিটাল আসক্তি বা ইন্টারনেট আসক্তিতে ভুগছেন, ততদিনে এই সমস্যাটি তাঁদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি তাদের সামাজিক ও পারিবারিক জীবনকেও মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করে ফেলে ।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সব বয়সের মানুষেরই এই ডিজিটাল আসক্তি বা ইন্টারনেট আসক্তি প্রতিরোধের চেষ্টা চেষ্টা করা উচিত । বিশেষজ্ঞরা এই আসক্তি প্রতিরোধ ও নির্ণয়ের জন্য বিভিন্ন পরামর্শ দেন, যার মধ্যে ডিজিটাল ডিটক্সকে খুবই উপকারী বলে মনে করা হয় ।
ডিজিটাল আসক্তি কী ?
দিল্লির মনোবিজ্ঞানী ডঃ রীনা দত্ত বলেন, "গত কয়েক বছরে, সোশাল মিডিয়া এবং অনলাইন বিনোদনের জাল অনেকটাই ছড়িয়ে পড়েছে । প্রায় সব বয়সের মানুষ অনলাইন ক্লাস, ভিডিয়ো কল এবং অনলাইন কাজের জন্য ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে থাকেন । এসব কারণে অনলাইন ভিডিয়ো স্ট্রিমিং, ভিডিয়ো গেম ইত্যাদির জন্য ডিজিটাল ডিভাইসের প্রতি মানুষের আকর্ষণ বাড়ায় । পাশাপাশি, সোশাল মিডিয়ার ব্যবহার ও এটির প্রতি আসক্তি বাড়িয়ে তোলে ৷ বিনোদন, মানসিক চাপ বা দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি, যে কোনও বিষয়ে তাৎক্ষণিক তথ্যের সহজলভ্যতা, সব বয়সের মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করে এমন বিনোদনের নানা বিষয় ও উপাদানের উপলব্ধতা, সোশাল মিডিয়া, অনলাইন ভিডিয়ো স্ট্রিমিং ও গেমিংয়ের প্রতি মানুষের আকর্ষণ বাড়িয়ে তোলে, যা তাদের ডিজিটাল ডিভাইসের সঙ্গে আরও বেশি সময় কাটানোর জন্য বাধ্য করে । এই অভ্যাস ধীরে ধীরে মানুষের মধ্যে ডিজিটাল ডিভাইসের প্রতি অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা বা এগুলি ব্যবহারের অভ্যাস তৈরি করে দেয় । খাওয়ার সময়, শৌচালয়ে যাওয়ার সময়, অন্যান্যদের সঙ্গে কথা বলার সময় বা মিটিং চলাকালীন অনেকেই তাদের মোবাইল ফোনে ব্যস্ত থাকেন । টিভি দেখার সময় মোবাইলে রিল দেখা, বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার আপডেট বারবার চেক করা, ল্যাপটপে ভিডিয়ো কনফারেন্সের সময় মোবাইলে গেম খেলা ইত্যাদি অভ্যাসগুলি ডিজিটাল আসক্তি বা ইন্টারনেট আসক্তির উল্লেখযোগ্য উদাহরণ ।"