হায়দরাবাদ: ধূমপান এমন একটি আসক্তি যার জেরে স্বাস্থ্যের উপর মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে । বিশেষজ্ঞদের মত, উদ্বেগের বিষয় শুধুমাত্র যাঁরা ধূমপান করেন তাঁরাই নন, যাঁরা তাঁদের সঙ্গে বেশি সময় কাটান এবং দীর্ঘ সময় ধরে সিগারেটের ধোঁয়ার মধ্যে থাকেন তাঁদেরও স্বাস্থ্যের উপর মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে ৷ মানুষকে সচেতন করার লক্ষ্যে প্রতিবছর মার্চ মাসে দ্বিতীয় বুধবার ধূমপানমুক্ত দিবস পালন করা হয় (No Smoking Day March Second Wednesday) ৷ 2023 এর বাজেটে সিগারেটের উপর 16 শতাংশ ট্যাক্স বাড়ানো হয়েছে ৷ এটা কি সচেতনতার লক্ষ্য ?
এই বিষয়ে কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের শিশু বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডাঃ শ্যামল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "শুধুমাত্র ট্যাক্স বাড়িয়ে বা শুধু দাম কমিয়ে সচেতনতা বাড়ানো সম্ভব নয় ৷ ট্যক্স তো বাড়ানো দরকার কিন্তু সরকারকে নির্দিষ্ট পলিশি নেওয়া জরুরি ৷ কারণ স্মোককে পাবলিক প্লেসে বন্ধ করতে হবে ৷ যেমন, ট্রান্সপোর্ট, অফিস, স্কুল, কলেজ ইত্যাদি জায়গায় স্মোক ফ্রি করতে হবে ৷"
তিনি আরও জানান, সবথেকে বেশি দরকার মাস মিডিয়া ক্য়াম্পেন করা ৷ তা না হলে হবে না ৷ এমন কোনও রোগ নেই যা ধূমপানের কারণে হয় না ৷ সমস্ত রোগ ধূমপান করার ফলে হতে পারে ৷ সবকিছুর মাধ্য়মে বার্তা পৌঁছে দেওয়া প্রয়োজন মানুষের কাছে ৷ সিগারেট তো ক্ষতি করেই তবে সবথেকে বেশি ক্ষতি করে নন স্মোকিং জিনিসগুলি যেমন- জর্দা, গুটকা, খৈনি ইত্যাদি ৷ এগুলি নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন ৷
ধূমপানের ফলে রোগের বিষয়ে তিনি বার বার জোর দেন, এমন কোনও রোগ নেই যা ধূমপান করলে হয় না ৷ এই রোগগুলি পরে মারাত্মক আকার ধারণ করে ৷ সিওপিডি, ক্যানসার, হাঁপানি, অ্যাজমা ইত্যাদি রোগের প্রকোপ শুরু হয় ৷ ক্যানসারের ক্ষেত্রে বিষয়টা একই রকম ৷ ধূমপানের ফলে ফুসফুসের ক্যানসার, প্যানক্রিয়েটিক ক্যানসার, কিডনি ক্যানসার এছাড়াও দেহের যে কোনও ক্যানসার হতে পারে ৷ এতে নিকোটিন ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল থাকে তা ক্যানসার ছাড়াও আরও রোগের কারণ হতে পারে ৷ এতে লেড, অ্যামোনিয়া, আর্সেনিক এইরকম ধরনের প্রচুর উপাদান থাকে যেগুলিতে ক্যানসার হয় ৷ এছাড়াও ত্বকের বিভিন্নভাবে ক্ষতি করে ৷ চোখের ছানি পড়াও ধূমপানের কারণ, এমনকি দাঁতের রোগ, হাড়ের রোগ প্রভৃতি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওার মূলেও সেই ধূমপান ৷ মিসক্যারেজ হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে ধূমপানের কারণে ৷ তিনি বলেন, সিগারেট খেলে বডির ইমিউনিটি সিস্টেম কমে যায় ৷ যার ফলে বিভিন্ন রোগ হতে পারে, সুগার, টাইফয়েড ৷
ধূমপানমুক্ত দিবস উপলক্ষ্যে তিনি বলেন, একদিন পালন করে কিছু হবে না ৷ প্রত্যেকদিন সচেতন হওয়া প্রয়োজন ৷ অনেকে চা খেয়ে সিগারেট খান, ফোন করতে করতে সিগারেট খান এইগুলি বন্ধ করলে সচেতনতা বাড়ানো সম্ভব ৷ 'নো স্মোকিং ডে' শুধুমাত্র মানুষকে ধূমপানের ফলে শরীর ও পরিবেশের ক্ষতি সম্পর্কে সচেতন করার একটি সুযোগই নয়, এটি একজনের মঙ্গল এবং সুস্বাস্থ্য রক্ষার তাৎপর্য তুলে ধরার একটি দিন ।
আরও পড়ুন: