হায়দরাবাদ: সুস্বাস্থ্যের জন্য চিকিৎসকরা সব সময় পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খাওয়ার পরামর্শ দেন । সঠিক পরিমাণে জল না খেলে স্বাস্থ্য়েও এর প্রভাব পড়ে । ডিহাইড্রেশনের কারণে অনেক বড় ক্ষতিও হতে পারে । স্বাস্থ্যেও যেমন এর প্রভাব পড়ে, তেমনি ত্বকের ক্ষতিও হতে পারে । জল কম খেলে ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা হারাতে শুরু করে ।
মার্কিন গবেষকরা দেখেছেন, একজন মোটামুটি সুস্থ মানুষের দীর্ঘ সময় ধরে নিরোগ থাকতে হলে তাকে দিনে 7 থেকে 10 গ্লাস জল পান করতে হবে । অর্থাৎ, দিনে 2-3 লিটার জল খেতে হবে ৷ তবে যাঁরা রোদে, গরম জায়গায় কাজ করেন এবং যারা প্রচুর শারীরিক পরিশ্রম করেন, তারা এই মাত্রা কিছুটা বাড়িয়ে দিতে পারেন । প্রকাশ করা হয়েছে যে, প্রতিদিন জলপানের পরিমাণ কম বা বেশি-- কোনওটাই হওয়া উচিত নয় । কারণ, জল খাওয়া কম বা বেশি হলে কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে ।
আমেরিকার 'ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ'-এর গবেষকরা গবেষণা করে দেখেছেন যে, প্রতিদিন পর্যাপ্ত জল পান করলে দীর্ঘায়ু হওয়া যায় । প্রায় 30 বছর ধরে পরিচালিত এই গবেষণায় 11,255 জন অংশগ্রহণ করেছিলেন । 30 বছর থেকে 45 বছর বয়সে তাদের স্বাস্থ্যের বিবরণ নেওয়া হয়েছিল । তারপর 30 বছর পর সেই সমস্ত বিবরণ 'ই বায়োমেডিসিন' মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত হয়েছিল । 'KIM'স মেডিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড অ্যাকাডেমিক্স'-এর ডিরেক্টর ডাঃ মণিমালা রাও সেই রিপোর্টে সুস্থ জীবনের জন্য পানীয় জলের প্রয়োজনীয়তার সঙ্গে সম্পর্কিত অনেক দিক ব্যাখ্যা করেছেন ।
প্রচুর জল পান করলেও তা শরীরে জমা হবে না । অতিরিক্ত জল ফিল্টার করতে কিডনিকে বেশি পরিশ্রম করতে হয় । তাই ডাঃ মণিমালা রাও বলেন, "এই সমস্যা ছাড়াই যখনই তৃষ্ণার্ত হবেন তখনই বিশুদ্ধ জল পান করার অভ্যাস করা ভালো । যখন তেষ্টা পায় তখন জল না পান করে পরে পান করেন, সেটা শরীরের জন্য ঠিক নয় ৷"
জল কম পান করলে কী হবে (What happens if you drink less water)?
ডাঃ মণিমালা রাও বলেন, "জল কম পান করলে শরীরে জলশূন্য হওয়ার আশঙ্কা থাকে । এছাড়াও, তিনি পরামর্শ দেন কিডনির কার্যক্ষমতা কমে যায়, রক্তচাপ কমে যায় এবং পেশীতে ব্যথা হয় । একইভাবে মাথাব্যথা, কোষ্ঠকাঠিন্য, শুষ্ক ত্বক ও মুখ, অলসতার মতো সমস্যা দেখা দেয় । এই ধরনের সমস্যায় অবিলম্বে পর্যাপ্ত জল পান করার পরামর্শ দেওয়া হয় ।
বেশি জল পান করলে কী হয় (What happens if you drink too much)?
অতিরিক্ত জল পান করা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয় । শরীরে বেশি জল জমার কারণে সব অঙ্গের কোষে জলের পরিমাণ বেড়ে যায় । ফলস্বরূপ, যে সোডিয়াম যা কোষের বাইরে থাকা উচিত তা কোষের ভিতরে যায় । ফলে মাথা ঘোরা, মাথাব্যথা, বিভ্রান্তি, রক্তচাপ বৃদ্ধি এবং অনিয়মিত হৃদযন্ত্রের ছন্দের মতো সমস্যা দেখা দেয় । তবে আপনার শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন এবং সেই পরামর্শ মেনেই জল খাওয়া উচিত ৷
আরও পড়ুন: