কলকাতা, 19 জুলাই: করোনার পর ভয় দেখাচ্ছে 'চাঁদিপুরা ভাইরাস'। ইতিমধ্যেই এই ভাইরাসে ছেয়ে গিয়েছে গুজরাত-সহ দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্যে। এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে বেশ কয়েকটি শিশুর । হাসপাতালেও ভর্তি রয়েছে অনেক শিশু । কিন্তু কী এই ভাইরাস ? কতটা ভয়াবহ ? কীভাবে ছড়িয়ে পড়ে এই ভাইরাস ? সেই বিষয় খোঁজ নিল ইটিভি ভারত।
চিকিৎসক সায়ন চক্রবর্তী বলেন, "এই মরশুমে জ্বর বিভিন্ন কারণে হয় থাকে । তবে রোগের লক্ষণ হিসাবে প্রথমে থাকে এনসেফালাইটিস ৷ এই জ্বরে যদি কোনও শিশু বারবার অচৈতন্য হলে বুঝতে হবে সে চাঁদিপুরা ভাইরাসে আক্রান্ত। তখন অবিলম্বে তাকে হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন। "৷
1965 সালে মহারাষ্ট্রের চাঁদিপুরা গ্রামে এই মারণ ভাইরাস প্রথম দেখা গিয়েছিল । তখন বহু মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত ঘটেছিল । তারপর থেকে সেই গ্রামের নাম অনুযায়ী এই রোগের নাম হয়। এতবছর পর আবার গুজরাত, রাজস্থানে এই ভাইরাসে আক্রান্তের হদিশ মিলেছে । এই রোগের লক্ষণ হল প্রবল জ্বর, গা বমি ভাব, মাথা যন্ত্রণা, ডায়রিয়া এবং সব থেকে উল্লেখযোগ্য হল অচৈতন্য হয়ে পড়া ৷
তিনি আরও জানান, এই ভাইরাসে সংক্রমণ বেশি দেখা যায় 9 মাস থেকে 14 বছরের শিশুর মধ্যে বেশি হয়ে থাকে ৷ এই ভাইরাস শিশুদের ব্রেনে আঘাত করে থাকে । তারপর আসতে আসতে মাল্টি অর্গান ফ্রেলিয়র হয়ে শিশু মারা যায়। এই রোগ ছড়িয়ে পড়ার নেপথ্যে রয়েছে পোকামাকড় এবং মশা ও মাছি । মূলত কালাজ্বর যে পোকার কারণে দেখা যায় এই রোগের কারণেও সেই পোকাই। যদিও কালাজ্বর আর সঙ্গে চাঁদিপুর ভাইরাসের কোনও মিল নেই । এমনকি এই রোগ মানুষ থেকে মানুষের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়তে পারে না।
চিকিৎসক আরও বলেন, "যদি কোনও পোকা এই ভাইরাসে আক্রান্ত শিশুকে কামড়ানোর পর অন্য শিশুকে কামড়ায়, তাহলেই ওই শিশুর সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে ।"
তবে এই রোগ থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে হলে মূলত দরকার পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন জায়গা। যাতে কোনও পোকামাকড় বা মশা শিশুকে না কামড়ায় সেটা লক্ষ্য রাখতে হবে । বিশেষজ্ঞদের মতে, মশারি টাঙিয়ে ঘুমানো ভালো ৷ যাতে কোনওভাবেই মশা না-কামড়াতে পারে । এছাড়াও খাওয়াদাওয়া ও পরিচ্ছন্নতার দিকে নজর দেওয়া জরুরি ৷