আসানসোল, 10 ফেব্রুয়ারি: মারণ রোগ ক্যানসার ৷ নাম শুনলেই যেন ভয় লাগে । রাজরোগে প্রচুর ব্যয়বহুল চিকিৎসায় বহু পরিবারে অন্ধকার নেমে এসেছে । আর এখানেই অন্য আলোর স্বপ্ন দেখাচ্ছে আসানসোল জেলা হাসপাতাল । বিনামূল্যে ক্যানসারের চিকিৎসায় নজির গড়ছে আসানসোল জেলা হাসপাতাল । বর্তমানে 1200 ক্যানসার রোগী চিকিৎসাধীন আসানসোল জেলা হাসপাতালে । অনেকেই তার মধ্যে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেছেন ।
গত 8 ফেব্রুয়ারি ছিল ক্যানসার দিবস । সেই উপলক্ষে আসানসোল জেলা হাসপাতালে মুখোমুখি আলোচনা চক্রে মিলিত হয়েছিলেন চিকিৎসক ও রোগীরা । অভিজ্ঞতার কথা জানালেন রোগীরা । জেলা হাসপাতালের চিকিৎসায় সবাই কেমন ক্রমাগত সুস্থ হয়ে উঠছেন তা বলতে গিয়ে অনেক রোগীর গলা বুজে এসেছে, চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়েছে জল ।
2021 সালে আসানসোল জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক তথা অঙ্কোলজিস্ট অমিত মুখোপাধ্যায়ের তত্বাবধানে শুরু হয় আসানসোল জেলা হাসপাতালে ক্যানসার বিভাগ । অমিত পূর্বেও আসানসোল জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক ছিলেন । ক্যানসার বিশেষজ্ঞ হয়েও আসানসোল জেলা হাসপাতালে ফিরে আসেন । এসেই সুপারকে আর্জি জানান, ক্যানসার বিভাগ খুলতে চান । একা কুম্ভ হয়ে পরিকাঠামোগত নানান অন্তরায় থাকলেও সফলভাবে ক্যানসার বিভাগ শুরু করেন । একা সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিয়ে এই বিভাগ চালিয়ে আসছেন অমিত মুখোপাধ্যায় । সঙ্গে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন পড়লে তিনি আসানসোল জেলা হাসপাতালের সার্জনদের সহায়তা নেন ।
বর্তমানে 1200 ক্যানসার আক্রান্ত রোগীর ওরাল কেমো, কেমো থেরাপি-সহ নিয়মিত চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে আসানসোল জেলা হাসপাতালে । অনেকেই সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেছেন । শুধু আসানসোল মহকুমা নয়, পশ্চিম বর্ধমান জেলা এমনকী ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন স্থান থেকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ক্যানসার আক্রান্তরা আসছেন চিকিৎসা করাতে ।
রানিগঞ্জ থেকে আসা এক রোগী বুলু মুখোপাধ্যায় জানান, আমরা মধ্যবিত্ত পরিবার । ক্যানসারের চিকিৎসায় খরচ চালানোর মত ক্ষমতা ছিল না । আমি আজ আসানসোল জেলা হাসপাতালের চিকিৎসায় খুব ভালো আছি । কৃতজ্ঞ ডাক্তার বাবুদের কাছে ৷ দেওঘরের বাসিন্দা বিনয় কুমার রায় জানান, আমি ভেলোরে অপারেশন করাই । তারপর আসানসোল জেলা হাসপাতালেই কেমো নিচ্ছিলাম । এখন আমি সম্পূর্ণ সুস্থ । আমার ধারনাই ছিল না, সরকারি হাসপাতালে এমন চিকিৎসা হয় ।
যার জন্য এই ক্যানসার ইউনিট শুরু হয়েছে আসানসোল জেলা হাসপাতালে সেই চিকিৎসা অমিত মুখোপাধ্যায় বলেন, "আপাতত আমরা একেবারে শৈশবের অবস্থাতেই রয়েছি । বিরাট বড় কিছু করে উঠতে পারিনি । তবু এত মানুষ সুস্থ হচ্ছেন । তারা শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন এর চেয়ে ভালোলাগার কী থাকতে পারে ।" আসানসোল জেলা হাসপাতালে সুপার নিখিল চন্দ্র দাস জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত 1200 রোগীকে আমরা চিকিৎসা দিতে পারছি । আগামী দিনে যাতে রেডিয়েশন বিভাগ শুরু করা যায় সেই চেষ্টাতে রয়েছি আমরা ।
আরও পড়ুন: