হায়দরাবাদ, 2 এপ্রিল: চাকরি-ব্যবসা হোক কিংবা ঘুরতে যাওয়া, সময় বাঁচাতে বিমানে সফর খুবই সাধারণ ঘটনা ৷ কিন্তু বিমান ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমার অনেক রকম সমস্যার সম্মুখীন হই ৷ যার অন্যতম কারণ বিমানে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বায়ুর চাপের পরিবর্তন হয় ৷ সেইসঙ্গে তাপমাত্রারও পরিবর্তন হয় ৷ তার উপর আদ্রর্তা সমুদ্রপৃষ্ঠের থেকে অনেকটাই কমে যায় ৷ ফলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয় ৷ তবে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করলে সহজেই এড়ানো যায় এই সব সমস্যা ৷
শরীরে জলে পরিমাণ কমে য়াওয়া:
ফ্লাইটে উঠলে শরীরে জলের পরিমাণ কমে যায় ৷ প্রায় 50 শতাংশ কম থাকে আদ্রর্তা ৷ যার অন্যতম কারণ বিমানের ভিতরের আবহাওয়ায় আর্দ্রতার পরিামাণ কম থাকে ৷ বিমান যত উপরে ওঠে আর্দ্রতা তত কমতে থাকে ৷ ফলে গলা, নাক এবং ত্বকে শুষ্কতা অনুভূত হয়।
কী করবেন:
1. বিমানে যাতায়াতের সময় অবশ্যই একটি খালি জলের বোতল রাখুন। চেকিং শেষ হলে সেই বোতলে জল ভরে নিন ৷ বিমানে কোল্ড ড্রিঙ্কস নয়, পানীয় জল পান করুন ৷ দীর্ঘ সময় বিমানে ভ্রমণে যাতায়াত করতে হলে এটা অবশ্যই মেনে চলুন ৷
2. কন্টাক্ট লেন্সের পরিবর্তে চশমা ব্যবহার করা নিরাপদ ৷ এটি চোখের অস্বস্তি রোধ করবে।
3. যাঁরা নাক, চোখ ও ত্বকের শুষ্কতা নিয়ে ভয় পান তাঁরা অবশ্যই ওষুধ সঙ্গে রাখুন ৷ প্রয়োজনে নাক ও চোখে ড্রপ দিতে পারেন ৷ ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়ার সমস্য়া থাকল লোশন সঙ্গে রাখা ভালো । প্রয়োজনে সেটি মেখে নিন ৷
ঝিমুনি আসা:
বিমান বায়ুর বিভিন্ন স্তরের মধ্যে দিয়ে চলাচল করে ৷ ফলে শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায় ৷ তার উপর বিমানে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উপরে অবস্থান করায় চাপ কমে যায় ৷ তাই বিমান ভ্রমণের সময় শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায়। মনে হচ্ছে শক্তি ক্ষয় হয়ে গিয়েছে। এনার্জি কমে গিয়েছে বলেও মনে হয় ৷
কী করবেন:
এই পরিস্থিতিতে বেশি করে জল পান করতে হবে । এক বা দুই ঘণ্টার বেশি ভ্রমণ করতে হলে সিট থেকে উঠে কেবিনে একটু হাঁটা-চলা করতে পারেন ৷ সিটে বসে পা লম্বা করে ছড়িয়ে দিতে পারেন ৷ শরীরে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলি বিশেষত হাত বা পায়ের আঙুল খেলাতে পারেন ৷ এত রক্ত সঞ্চালন ভালো হয় ৷ বিশেষত আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভ্রমণের সময় এই নিয়ম মেনে চললে সমস্যা হবে না ৷
কানে তালা লেগে যাওয়া: (Ear congestion)
অনেক সময়ে বিমানে উঠলে কানে তালা লেগে যাওয়ার সমস্যা হয় ৷ বিমানের কেবিনে চাপ পরিবর্তন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কানের ভিতরে বাতাসের চাপ সেই অনুযায়ী সামঞ্জস্য করার চেষ্টা করে। এই কারণে, শরীর ওজনহীন হয়। ফলে কানে তালা লেগে যাওয়ার মতো অনুভূতি হয় ৷ বিশেষত বিমান ওঠা-নামার সময়ে যখন এয়ার পকেটের মধ্য়ে পড়ে তখনই এই সমস্যা হয় ৷ কখনও কখনও বমিও পায় ৷ কােন তালা লেগে যাওযার সমস্যা থেকে রেহাই পেতে কান ঢেকে রাখতে পারেন ৷ হেডফোনে গান শুনলেও এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় ৷ বমি পাওয়ার সমস্যা থেকে রেহাই পেতে বিমানের ডানার উপরের দিকের আসন বেছে নিতে পারেন ৷ এখেন ঝাঁকুনি কম হওয়ায় বমি ভাব আসে না ৷
পেটেরও সমস্য়া হয় ৷ বিশেষ করে বেল্ট শক্ত করে বাঁধার ফলে পেটের মধ্যে বায়ু চাপ সৃষ্টি হয় ৷ পেট ফুলে যাওযার সমস্যা হয় ৷ তাই বিমানে যাওয়ার আগে পেঁয়াজ, রসুন, নির্দিষ্ট ধরনের বাদাম, ডাল, দুগ্ধজাত খাবার এড়িয়ে চলুন ৷ ভ্রমণের উপযোগী খাবার খান। প্রচুর পরিমাণে জল খান ৷ কফি ও চা খাওয়া কমিয়ে দিন ৷
আরও পড়ুন: