ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (সিওপিডি) হল ধোঁয়া, ধুলো বা রাসায়নিকের মতো বায়ুবাহিত পদার্থের ক্রমাগত এক্সপোজারের কারণে ফুসফুসের ক্ষতির ঝুঁকি বেড়ে যায় ৷ ফলে নানান রকম অসুবিধার সম্মূখীন হতে হয় ৷ যেমন- দীর্ঘমেয়াদী শ্বাসযন্ত্রের ক্ষতি ইত্যাদি ৷ বিশেষজ্ঞরা জানান, সবচেয়ে সাধারণ কারণ হল সিগারেটের ধোঁয়া । এই ক্ষতি অপরিবর্তনীয় বায়ুপ্রবাহের বাধার দিকে পরিচালিত করে ৷ যা ধীরে ধীরে শরীরের উপর প্রভাব পড়ে ৷
গ্লোবাল বার্ডেন অফ ডিজিজ 2019 সমীক্ষা অনুসারে, সিওপিডি প্রায় 55 মিলিয়ন মানুষকে প্রভাবিত করে এবং এটি ভারতে মৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ । তবে এখনও অনেকেই এই রোগ সম্পর্কে অবগত নন ।
বিশ্ব সিওপিডি দিবস 2024- এর থিম, 'আপনার ফুসফুসের কার্যকারিতা জানুন' যারমানে ফুসফুসের স্বাস্থ্য বোঝা এবং পরিমাপের গুরুত্ব তুলে ধরে । এর মধ্যে রয়েছে সচেতন হওয়া এবং সিওপিডি -এর মতো দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসযন্ত্রের রোগ সম্পর্কে আরও ভালোভাবে বোঝা ৷ বিশেষ করে যাঁরা এই রোগে আক্রান্ত এবং ঝুঁকিতে রয়েছেন তাঁদের জন্য ।
সিওপিডির লক্ষণ ও উপসর্গ
পালমোনোলজিস্ট এবং রেসপিরেটরি মেডিসিনের চিকিৎসক ডাঃ সমরজিৎ দাস বলেন, "সিওপিডি ফুসফুসের দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি করতে পারে ৷ কোনও লক্ষণ ছাড়াই এই রোগ দেখা দিতে পারে । লক্ষণগুলি প্রায়শই ফুসফুসের উল্লেখযোগ্য ক্ষতি না হওয়া পর্যন্ত উদভাবিত হয় না এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি আরও খারাপ হতে থাকে ৷" যেগুলি নিম্নরূপ:
- ঘন ঘন কাশি হওয়া ও মাঝে মাঝে শ্লেষ্মা তৈরি হওয়া ৷
- কোনও শারীরিক কার্যকলাপের পরে শ্বাসকষ্ট হওয়া ৷
- বুকে ব্যথা অনুভূত হওয়া ৷
- ক্লান্তিবোধ ৷
চিকিৎসকের মতে, এই লক্ষণগুলি দেখা দিলে একজন চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা প্রয়োজন ৷ সিওপিডি-তে আক্রান্ত ব্যক্তিরদের লক্ষণ অনেকসময় খারাপ হতে থাকে । যা exacerbations হিসাবে পরিচিত ৷ এটি কয়েক দিন থেকে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে । ভাইরাল, ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ বা দূষণকারীর সংস্পর্শে আসার মতো ট্রিগারগুলি সিওপিডি বৃদ্ধির প্রাথমিক কারণ । এই রোগের বৃদ্ধি বেশি হলে শ্বাসকষ্ট, কাশি বেশি হতে থাকে ৷
সিওপিডিতে কেন প্রাথমিক রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার ব্যাপার
তিনি বলেন, "যদিও সিওপিডি এবং এর প্রাথমিক লক্ষণগুলি বোঝার পর চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন ৷ ঠিকমতো চিকিৎসার মাধ্য সিওপিডি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব ৷ যদিও সিওপিডি সাধারণত 40 বছরের বেশি বয়সি ব্যক্তিদের প্রভাবিত করে, তবে বেশি ঝুঁকিতে থাকা অল্প বয়স্ক ব্যক্তিরা- যেমন বেশি ধূমপায়ী বা যারা ধোঁয়া ও দূষণের অতিরিক্ত এক্সপোজেন তাঁদেরও সতর্ক হওয়া উচিত ।"
সিওপিডি সাধারণত স্পাইরোমেট্রি নামে একটি ফুসফুসের কার্যকারিতা পরীক্ষার মাধ্যমে নির্ণয় করা হয় । এই পরীক্ষা রোগ নির্ণয় নিশ্চিত করে রোগের তীব্রতা কতটা ৷ যদিও সিওপিডি নিরাময়যোগ্য নয় তবে চিকিৎসার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব ৷ যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসা শুরু করা ফুসফুসের কার্যকারিতা রক্ষা করতে সহায়তা করে ।
https://www.nhlbi.nih.gov/research/copd
(বিশেষ দ্রষ্টব্য: এই প্রতিবেদনে উল্লেখিত তথ্য শুধুমাত্র ধারণা আর সাধারণ জ্ঞানের জন্যই লেখা হয়েছে ৷ এখানে উল্লেখিত কোনও পরামর্শ অনুসরণের আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন ৷ যদি আগে থেকেই কোনও স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে থাকে, তা আগেই চিকিৎসককে জানাতে হবে ৷)