কলকাতা, 27 অগস্ট: একদিকে আরজি কর কাণ্ড ও অন্যদিকে হেমা কমিটির রিপোর্ট নিয়ে সোচ্চার গোটা দেশ ৷ এই অবস্থায় বাংলা বিনোদন জগতে কেমন পরিবেশ হওয়া উচিত, সেই আবেদন জানিয়ে চিঠি লিখল 'উইমেনস ফোরাম ফর স্ক্রিন ওয়ার্কার্স'। আবেদন জানানো হয়েছে টেলি অ্যাকাডেমির চেয়ারম্যান, ইস্ট্রার্ন ইন্ডিয়া মোশন পিকচার অ্যাসোসিয়েশন-এর প্রেসিডেন্ট, ওয়েস্ট বেঙ্গল মোশন পিকচার আর্টিস্টস ফোরাম-এর প্রেসিডেন্ট এবং ফেডারেশন অফ সিনে ওম্যান অ্যান্ড টেকনিশিয়ান্স অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়ার প্রেসিডেন্ট-কে।
চিঠিতে লেখা হয়েছে, বাংলার মানুষ আরজি কর হাসপাতালে মহিলা ডাক্তারকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় বাকরুদ্ধ ৷ জঘন্য এই ঘটনার প্রতিবাদে বিনোদন ইন্ডাস্ট্রিও জেগে উঠেছে ৷ এই ঘটনায় কাজের জগতে হেনস্তা, যৌন হয়রানি বা হিংস্রতার শিকার অনেক হয়েছেন, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সময় এসেছে ৷ চিঠিতে আরও লেখা হয়েছে, "প্রত্যেকদিন বাংলা সিনেরা জগত, ওয়েব প্ল্যাটফর্ম ও টেলিভিশ ইন্ডাস্ট্রিতে আমাদের নানা ভাবে যৌন হেনস্তার শিকার হতে হয়। পাশাপাশি নিয়মিতভাবে নারী, শিশু এবং প্রান্তিক পরিচয়ের মানুষদের নির্যাতনের কথাও শোনা যায়। তবুও, আমাদের কাছে এমন কোনও কার্যকরী সহায়তা ব্যবস্থা নেই যেখানে ভারতীয় আইন অনুযায়ী যৌন হয়রানি প্রতিরোধ, নিষেধাজ্ঞা এবং প্রতিকারের দাবি জানাতে পারি। সেই মর্মে বিশেষ দাবি নিয়ে এই চিঠি ৷"
অভিনেত্রী লাবণী সরকার এই বিষয়ে ইটিভি ভারতকে বলেন, "আমার সঙ্গে এরকম ঘটনা কখনও ঘটেনি মানে কারোর সঙ্গে ঘটেনি বা ঘটবে না, তা তো নয়। আমার সতীর্থরা যখন মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবছে এবং বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক সামনে এনেছে তখন একজন সিনিয়র আর্টিস্ট হিসেবে আমি তো পাশে থাকবই। শুধু সিনিয়র আর্টিস্ট হিসেবে নয়, আমি একজন মানুষ এবং একজন মহিলা হিসেবেও পাশে থাকব।"
তিনি আরও বলেন, "আমি আরও একটা কথা বলব, কে এর আগে এরকম ঘটনা নিয়ে প্রতিবাদ করেছিল তখন কেন কেউ এগিয়ে আসেনি সেটা সম্পূর্ণ আলাদা দিক। অনেক প্রতিবাদ সেই সময়ে দাঁড়িয়ে জোরদার হয় না। পরে কোনও ঘটনা বড় হয়ে সামনে এলে পুরনো অনেক ঘটনাগুলো সামনে আসে। আমার মনে হয় এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে সেটাকে সাপোর্ট করা উচিত অতীত ভুলে। "
নাম না করে তাঁর তীর কার দিকে তা স্পষ্ট। চিঠির খসড়া সামাজিক মাধ্যমে আসার পরেই অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র সোচ্চার হয়েছেন ৷ তিনি সামাজিক মাধ্যমে লেখেন, "হাসব না কাঁদব জানি না, উইমেন্স ফোরাম তৈরি হচ্ছে এখানে। দুঃখিত যে এসবের বিরুদ্ধে যে প্রথম সোচ্চার হয়েছিল তার নাম কেনই বা নেবে? চার বছর আগে আমাকে দোষ দেওয়া হয়েছিল এই বলে যে আমি 'ভিকটিম কার্ড' খেলছি, আমি মিথ্যেবাদী, আমার যোগ্যতা নেই বরং আমার খামতির জন্য আমায় কাজে নেওয়া হয়নি ।"
তিনি আরও লেখেন, "আমার নাম এখানে থাকলে আমি অবাক হতাম। ভাগ্যিস নেই। এদের মধ্যে অনেকেই এই অন্যায়ের অংশ। তাদের বিরুদ্ধে কমিশন কে বসাবে? যাদের ব্যাপারে বলছি তাঁরা হাড়ে হাড়ে জানে। বাকিরা নিজেদের মনে করে নিও না দয়া করে।"
এই ব্যাপারে ফেডারেশনের সভাপতির সঙ্গে স্বরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, "এখনও আমার মেইল দেখা হয়নি। এরকম কোনও মেইল এসেছে কি না, আমি জানি না এখনও।" তবে, তিনি আগেই জানিয়েছিলেন ইটিভি ভারতকে, "অভিযোগকারীকে লিখিত অভিযোগ জানাতে হবে এবং ফেডারেশন তাঁর নাম গোপন রাখবে।"