কলকাতা, 12 নভেম্বর: প্রয়াত প্রবাদ প্রতীম নাট্যকার, লেখক তথা অভিনেতা মনোজ মিত্র। সকাল 8:50 মিনিটে শহরের এক বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। হাসপাতাল থেকে মনোজ মিত্রর দেহ প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর সল্টলেকের বাড়িতে।
তারপর বেশ কিছুটা সময় নাট্যব্যক্তিত্ব তথা অভিনেতার দেহ শায়িত রাখা হয়েছিল রবীন্দ্র সদনে ৷ তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন জগন্নাথ বসু, ঊর্মিমালা বসু, ব্রাত্য বসু, বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী, দেবশঙ্কর হালদার, ইন্দ্রনীল সেন, মেঘনাদ বসু, দুলাল লাহিড়ী, দেবাশিস কুমার, নীল মুখোপাধ্যায়-সহ নাট্য ও বিনোদন দুনিয়ার বিশিষ্টজনেরা।
অভিনেতার মেয়ে ময়ূরী মিত্র বলেন, "উনি চক্ষুদান করে গিয়েছেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ৷ আমার ভালো লাগছে ওওনার চোখ দিয়ে দুজন মানুষ দেখতে পাবেন ৷ আজকে বাবার মৃত্যু দিনে এটা আমার কাছে আনন্দের খবর ৷ উনি শেষঅবধি ওনার নাট্যদলের সংগঠনের সঙ্গেই ছিলেন ৷"
চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি অভিনেতা দুলাল লাহিড়ী ৷ জানালেন তিনি আজ অভিভাবকহীন হলেন ৷ আজ তিনি যা হতে পেরেছেন, যতটুকু হতে পেরেছেন তা শুধুমাত্র মনোজ মিত্রের কারণেই ৷ তিনি বলেন, "স্যার মনোজ মিত্র চলে গেলেন ৷ আমার অস্তিত্ব বিলীন হয়ে গেল ৷ গাছ যেখানে মরে গেল শিকড়ের আর কি প্রয়োজন ৷ একদিন আমরাও চলে যাব ৷ আজ আমি শুধু অভিভাবকহীন হলাম না, প্রাণহীন একটা জড়পদার্থে পরিণত হলাম ৷"
বাচিক শিল্পী ঊর্মিমালা বসুর কাছে শিল্পী মনোজ মিত্র ছিলেন অলরাউন্ডার ৷ ঊর্মিমালা বলেন, "অলরাউন্ডার চলে গেলে সবকটা ফিল্ড খালি হয়ে যায় ৷ তবে মনোজদার মতো মানুষ চলে গেলে সব কিছু খালি হয় না ৷ তাঁরা কাজ রেখে গিয়েছেন ৷ মনোজদা চলে গেলেন, একজন স্নেহ করার লোক চলে গেলেন ৷ লোকটা কোথাও একটা মায়ের মতো ছিল ৷ মনোজদা চলে গেলেন মানে আমার অনেকটা জায়গা খালি হয়ে গেল ৷"
অভিনেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য জানান, মনোজ মিত্র তাঁর কাছে স্যারের মতো ছিলেন ৷ তিনি চলে যাওয়ায় অসীম শূন্যতা তৈরি হয়েছে ৷ রবীন্দ্র সদনে দীর্ঘক্ষণ শায়িত ছিল মনোজ মিত্রের দেহ ৷ সেখানে তাঁকে দেওয়া হয় গান স্যালুট ৷ এরপর গাড়িতে করে মরদেহ শেষকৃত্যের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় কেওড়াতলা মহাশ্মশানে ৷